• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ

উন্নয়নের জন্য লিটন চৌধুরীতেই ভরসা শিবচরবাসীর

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৮  

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি: বইছে নির্বাচনী হাওয়া। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই নির্বাচনী উৎসব বইতে শুরু করেছে তৃনমূলের চায়ের দোকানে দোকনে। অবসর সময়ে সাধারণ মানুষের মুখে এখন শুধু নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা চলছে। চলছে উন্নয়নের মৌখিক পরিসংখ্যানের হিসাবও। চায়ের দোকান থেকে ঘরের খাবার টেবিল পর্যন্ত নির্বাচনী আলাপের একটি অংশ জুড়ে রয়েছে শিবচরের উন্নয়ন। সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপ করে পাওয়া গেছে এই তথ্য। শিবচরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য লিটন চৌধুরীর বিকল্প নেই বলে সাধারণ ভোটারদের দাবি। এবং লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে এবারও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন।

জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত মাদারীপুর ১ আসন। রাজধানী ঢাকার সাথে সহজ যোগাযোগ হওয়ায় মাদারীপুর জেলার মধ্যে শিবচর উপজেলাটি বেশ সমৃদ্ধ। এছাড়া বহুল কাঙ্খিত পদ্মাসেতুর এক প্রান্ত রয়েছে মাদারীপুরের শিবচর ও শরিয়তপুরের জাজিরা অংশে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যে এক্সপ্রেস এলিভেটেড হাইওয়ে হচ্ছে তার একটি অংশ শিবচরের উপর দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও পদ্মাসেতুকে ঘিরে এই শিবচরের ব্যপক উন্নয়ন হচ্ছে। ফলে শিবচর বেশ পরিচিত ও সমৃদ্ধ একটি উপজেলায় পরিণত হচ্ছে দিন দিন। আর রাজনীতিতে মাদারীপুর ১ আসন তথা শিবচর উপজেলা আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিক। এবং গত দশ বছরে ভোটারদের একটা বৃহৎ অংশের সমর্থন কুড়িয়ে নিতে পেরেছে আওয়ামীলীগ। এ ক্ষেত্রে শিবচরের অবকাঠামোগত উন্নয়নকেই সবচে’ বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। এবং এই আসনে জননন্দিত নেতা শিবচরের প্রবাদ পূরুষ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পার্লামেন্টারী পার্টির সেক্রেটারী ও অনুমিত হিসাব কমিটির সভাপতি নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন এমপির বিকল্প কেউ নেই বলে শিবচরের সাধারণ ভোটাররা জানান।

এদিকে আওয়ামীলীগের প্রতি সমর্থন বেশি হওয়ার আরো একটি কারণ উল্লেখ্য করছেন ভোটাররা। ভোটাররা জানিয়েছেন, এখানে আওয়ামীলীগের কোন দ্ব›দ্ব নেই। নেই কোন গ্রæপিংও। এক জনের নেতৃত্বে বেশ সুদৃঢ় ভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে শিবচর উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলো। সে ক্ষেত্রে বিএনপি ঠিক উল্টো অবস্থানে রয়েছে। নানা জনের নানা মতে বিএনপি বিভক্ত শিবচরে। নিজেদের মধ্যে কোন ইউনিটি না থাকা, যোগ্য নেতার অভাবসহ নানা কোন্দলের কারণে শিবচরে ভোটারদের আস্থা উঠে যাচ্ছে এই দলটির প্রতি!

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিবচর পৌরসভাসহ ১৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-১ আসন। আসনটিতে ভোটার ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৩১ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৬৪ জন।

আওয়ামীলীগ অধ্যুষিত মাদারীপুর ১ আসনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ আওয়ামীলীগের কাছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় বোনের বাড়ি শিবচরের দত্তপাড়ায়। এ কারণে এই এলাকায় বঙ্গবন্ধুর বিচরণ ছিল।  এজন্য আওয়ামী লীগ সৃষ্টির পর থেকে এ আসনে দীর্ঘ সময় থেকে তৃনমুল পর্যায় সংগঠন অত্যন্ত শক্তিশালী। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচিত হন মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর আপন বড় বোনের ছেলে ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী। তিনি মারা যাওয়ার পর এ আসনে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হোন ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরীর জৈষ্ঠ্যপুত্র, বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর পার্লামেন্টারী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও অনুমিত হিসাব কমিটির সভাপতি ও সাবেক হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি।

এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর এই আসটিতে বিএনপি’র শাসনামলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা মরহুম সামসুল হুদা চৌধুরী । তিনি শাসনামলে মৃত্যু বরণ করলে উপনির্বাচনে তার ভাই আলতাফ হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হন। এর পর জাতীয় পার্টির শাসনামলে জাতীয় পার্টির পক্ষে নির্বাচিত হন মরহুম আবুল খায়ের চৌধুরী। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী। তার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে নৌকার হাল ধরেন তার জেষ্ঠ্যপুত্র নূর-ই আলম চৌধুরী। সেই ১৯৯১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মাদারীপুর-১ আসনটিতে ভোটের একটা বড় ব্যবধানে নির্বাচিত হয়ে আসছেন নূর-ই আলম চৌধুরী। এর মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন।

শিবচর উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, নূর- ই আলম চৌধুরীর হাত ধরে শিবচরে উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। পদ্মাসেতুর এপারে শিবচর উপজেলার অবস্থান হওয়ায় এখানে চলছে নানা ধরণের উন্নয়নের কাজ। এলাকায় রাস্তা ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে সড়ক পথে ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে। শিবচরের সর্বত্রই সমভাবে উন্নয়ন হয়েছে গত বছরগুলোতে। ফলে আগামী নির্বাচনেও বিপুল ভোটে নূর-ই আলম চৌধুরী জয় লাভ করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

নির্বাচন কার্যালয়, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দদের সাথে আলাপকালে জানা যায়,  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের  ভাগ্নে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ও তার পরিবার পূর্বে থেকেই মাদারীপুর-১(শিবচর) আসনের নিতী নির্ধারনী পর্যায়ের । ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীও ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। তিনি ১৯৭০ সালের সাধারন নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন অন্যতম সংগঠক ও মুজিব বাহিনীর কোষাধ্যক্ষ। ১৯৭৩ সালেও তিনি আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা। ঢাকা-মাওয়া-শিবচর-খুলনা মহাসড়কটিও ছিল সংসদে তার প্রস্তাবিত। নারী শিক্ষার উন্নয়নে তার ভূমিকা আজো সমাদৃত।  এরপর ১৯৯১  সালে  ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার মৃত্যুতে বিএনপি সরকারের আমলে উপ নির্বাচনে তার বড় ছেলে নূর-ই-আলম চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শুরু থেকেই এলাকার প্রতি তার রয়েছে বিশেষ নজর । দলীয় নেতা কর্মী ও  এলাকার মানুষের সাথে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। যার প্রভাব দেখা যায় প্রতিটি নির্বাচনী ফলাফলেই।এরফলে পদ্মা আড়িয়াল খা নদসহ অসংখ্য নদ নদী খাল বিল সমৃদ্ধ শিবচর উপজেলা আজ দেশ সেরাদের কাতারে।  ষষ্ঠবারের মতো এবারও একক প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠন। ১৯৯১ সালের প্রথম উপ নির্বাচনের পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে এই ব্যবধান আরো বেড়ে ভোটের ব্যবধান দাড়ায় অর্ধ লাখেরও বেশি। বিরোধী দলে থেকেও তার কর্মতৎপরতা বিশেষ করে দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি  বিশেষ টানের কারনে তিনি হয়ে উঠেন অপ্রতিদ্বন্দী। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি জয়ী হন লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে। আর ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হন। প্রথম থেকেই তরুন বয়সী এই নেতা এলাকার উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগী। পদ্মা আড়িয়াল খার মতো নদ নদী ছাড়াও অসংখ্য নদী খাল বিলে ঘেরা উপজেলাটিতে  নির্মান করেছেন ২ শতাধিক ব্রীজ কালভার্ট, হাজার কিলোমিটার আভ্যন্তরীন সড়ক, ২শতাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ভবন, দেশের প্রথম হাউজিং প্রকল্প , ৪টি কলেজকে অনার্স ও ১টি কলেজে মাস্টার্সে উন্নতিকরন, ৪টি থানা - তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক ৩টি অডিটোরিয়াম,মুক্তমঞ্চ,শিল্পকলা একাডেমি, সুপার মার্কেট, বাস স্ট্যান্ড, শিশু পার্ক নির্মান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আধুনিকায়ন।  বিশেষ করে ১১টি ভাস্কর্য মুর্যানল নির্মানসহ মুক্তিযুদ্ধের  স্মৃতি সংরক্ষনে নানান উদ্যোগ উপজেলাটি সারাদেশের নেতৃবৃন্দর নজর কেড়েছে। জাতীয় সংসদেও শিবচরের উন্নয়ন নিয়ে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা। অনেক মন্ত্রী এমপি শিবচরকে মডেল মেনে পরিদর্শনে আসেন এ উপজেলায়। বিশেষ করে পদ্মা সেতুকে ঘিরে ঢাকার নিকটবর্ত্তী এ উপজেলায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে কয়েকটি মেগা প্রকল্প এ এলাকায় স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আগামী প্রজম্মের উজ্জ্বল এক ভবিষ্যতের।  এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের আইসিটি ইনষ্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হয়েছে দত্তপড়ায় ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজে। প্রধানমন্ত্রী ১০৮ একর জায়গায় ১৯ শ কোটি টাকা ব্যয়ে তাঁত পল্লী ও ১৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রকল্পর ভিত্তিপ্রস্তর করেছেন এখানে।  হাতে নেয়া হয়েছে ভারতের আইআইটির আদলে আইসিটি ইনষ্টিটিউট ও হাইটেক পার্ক প্রকল্প, কারিগরি ইনষ্টিটিউট। স্বাস্থ্য খাতে ইনষ্টিটিউট অব হেলথ এন্ড টেকনোলজি, নার্সিং ইনষ্টিটিউট, ৩টি মা ও শিশু কেন্দ্রসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১শ শয্যায় উন্নিতকরনসহ নানান প্রকল্প ।
সাধারণ ভোটাররা জানান, শিবচরের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জননন্দিত নেতা নূর-ই আলম চৌধুরীর কোন বিকল্প নেই। বিগত সময়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি শিবচরের প্রতিটি জায়গায় উন্নয়নের বার্তা পৌছে দিয়েছেন। আর এই ধারা অব্যহত রাখতে শিবচরবাসী নূর-ই আলম চৌধুরীকেই চায়। তার কল্যাণেই শিবচরে কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি নেই। দলমত নির্বিশেষে তিনি সকলের মধ্যে ঐক্য ধরে রেখেছেন। শিবচরে একজন অপ্রতিদ্ব›দ্বী নেতা তিনিই বলে মন্তব্য সাধারণ ভোটারদের।