• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর জাপান-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২০  

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর জাপান-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন বা ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। রোববার (২২ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেটরো) ও চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (সিসিসিআই) মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম ও দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র। উভয় দেশের মধ্যে আগামী দিনের দ্বিপাক্ষিক অধিকতর অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নে এই সমঝোতা স্মারক সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে একটি সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট সেক্টর দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বেসরকারি খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে ১০ বছরের একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন অত্যাবশ্যক।

‘এ লক্ষ্যে সরকার দেশে সহজ শর্তে বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিতে চেষ্টা করছে। যে কারণে সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বিশেষ করে মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের উন্নয়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। পাশাপাশি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, বে-টার্মিনাল, এলএনজি টার্মিনাল, এক্সপ্রেস হাইওয়ে, ঢাকা মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সরকার’- বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, দুই দেশের বন্ধুত্বের সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে ঐতিহাসিক এই সমঝোতা স্মারক সম্পর্কোন্নয়নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন বা ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট। বাংলাদেশের মানুষ এখন জাপানের কাছ থেকে পণ্যের কোয়ালিটি সম্পর্কে জানতে অনেক বেশি আগ্রহী যা ইতিবাচক। বিগ-বি ইনিশিয়েটিভের আওতায় ঢাকা থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জাপান সরাসরি জড়িত।

তিনি এ সমঝোতা সমর্থনে জাপান সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আগামীতে জাপানে বাংলাদেশি পণ্যের এবং ব্যবসার রোড-শো আয়োজনের প্রস্তাব দেন।

রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ চুক্তি ব্যবসা ও বিনিয়োগে নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য অধিকতর বাড়াবে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে জাপানি কোম্পানিগুলো এদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাপানকে বাংলাদেশের জন্য রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং যমুনা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করেন।

জাপান থেকে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত রেগুলেটরি প্রসেস, প্রতিযোগী সক্ষমতা ও উন্মুক্ত অংশগ্রহণ ইত্যাদি বিষয় শিখতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কার্যকর সহযোগিতার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম চেম্বার নতুন দিনের সূচনা করবে।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাপান কর্তৃক দক্ষ জনশক্তি আমদানির উদাহরণ তুলে ধরেন এবং প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, জাপান বাংলাদেশের বৃহৎ উন্নয়ন অংশীদার। জাপানিদের ন্যায় প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার সততা এবং স্বচ্ছতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ২০১০ সালে চট্টগ্রাম চেম্বার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে টোকিওতে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সেন্টার স্থাপন করে। যার ফলে চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ত্বরান্বিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি সামনে রেখে বেসরকারি খাতের সহযোগিতার মাধ্যমে আগামী ১০ বছরের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে জেটরো ও জেবিসিসিআইর সঙ্গে চট্টগ্রাম চেম্বার এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করছে।

চেম্বার পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চেম্বার পরিচালক এসএম আবু তৈয়ব, অঞ্জন শেখর দাশ, মো. শাহরিয়ার জাহান, মো. এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সালমান হাবীব, সাকিফ আহমেদ সালাম ও শাহজাদা মো. ফৌজুল আলেফ খান প্রমুখ।