• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

মাদারীপুর দর্পন

জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ কেমন হবে?

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২৩  

পৃথিবীতে যারা আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করে পরকালে এমন কাফের, মুশরিক, মুনাফিদের চিরস্থায়ী আবাস্থল হচ্ছে জাহান্নাম বা দোজখ। জাহান্নাম এমন এমন পাপীষ্ঠদের জন্যই নির্দিষ্ট যারা আল্লাহর ক্ষমা লাভ করবে না; কিংবা দীর্ঘকাল শাস্তি ভোগের পর, মহান আল্লাহ তায়ালার দয়া ও করুণায় ক্ষমা লাভ করবে।

জাহান্নামে, জাহান্নামীদেরকে বিভিন্ন উপায়ে শাস্তি দেওয়া হবে। এর মধ্যে সব থেকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হলো আগুনের মাধ্যমে দেওয়া শাস্তি। জাহান্নামের এই আগুনের তাপ-উত্তাপ প্রভাব-প্রতিক্রিয়া দুনিয়ার আগুন থেকে অনেক বেশি যন্ত্রণা ও পীডাদায়ক।

দুনিয়ায় আগুন জ্বালানোর জন্য মানুষ লাকড়ি, খরকুটা ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে। তবে জাহান্নামের আগুনের লাকড়ি বা জ্বালানি কেমন হবে- এ সম্পর্কে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে।  এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘কিন্তু যদি তোমরা এমনটি না করো আর নিঃসন্দেহে কখনোই তোমরা এটি করতে পারবে না, তাহলে ভয় করো সেই আগুনকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যা তৈরি রাখা হয়েছে সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য।’-(সূরা বাকারা, আয়াত, ২৪)

দুনিয়াতে যে আগুন দেখা যায় তা শুধু শরীরের বাহ্যিক অঙ্গ পুড়াতে পারে কিন্তু তা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ পুড়াতে পারে না। আর জাহান্নামের আগুন এমন হবে যা জাহান্নামিদের শরীর পুড়ানোর সঙ্গেসঙ্গে তাদের হৃদপিণ্ডও পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, এটি আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি, যা তাদের হৃদয়কে গ্রাস করে ফেলবে। (সূরা হুমাযা, আয়াত, ৬-৭)

পার্থিব জীবনের আগুন জ্বাল করা যায় না, উল্টো  এই আগুন দিয়েই বিভিন্ন জিনিস বা বস্তু জ্বাল করা হয়। কিন্তু পরকালীন জীবনে যে আগুন দিয়ে কাফের-মুশরিক, বেইমান ও নাফরমানদের শাস্তি দেওয়া হবে, সে আগুন জ্বাল করা হবে।

এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নামের আগুন এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আবার এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা সাদা বর্ণ হয়েছে। তারপর এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা কালো বর্ণ হয়েছে। এখন তা গভীর অন্ধকার রাতের অন্ধকারের মতো কালো হয়ে গেছে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস,৪৩২০)

জাহান্নামের আগুনের শক্তি সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের এ আগুন (দুনিয়ার আগুন) জাহান্নামের আগুনের ৭০ ভাগের ১ ভাগ। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এ এক ভাগ দিয়ে শাস্তি দিলেই তো যথেষ্ট হতো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘জাহান্নামের আগুন তোমাদের আগুনের তুলনায় ৬৯ গুণ বেশি উত্তপ্ত।’-(মুসলিম, হাদিস, ২৪৮৩, বুখারি, হাদিস, ৩২৬৫)

তাই পরকালে এমন কঠিন আগুন থেকে বাঁচতে প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের উচিত দুনিয়াতে কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবনযাপন করা।