• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

মাদারীপুর দর্পন

কালকিনিতে সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২  

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

মাদারীপুরের কালকিনিতে পুলিশের সামনে এক সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত কালকিনি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নয়াকান্দি এলাকায় কাউন্সিলরের নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আশফাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে সংখ্যালঘু অসহায় পরিবারটির ওপর হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। স্থানীয়রাও কাউন্সিলর আনোয়ার ও তার লোকজনের বিচার দাবি করেছেন।

মামলার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নয়াকান্দি এলাকায় কৃষক ঝন্টু চন্দ্র মন্ডল তার পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি ধান মাড়াই করার জন্য প্রতিবেশি এক ব্যবসায়ীর থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ভাড়া আনেন ঝন্টু। ধান মাড়াই করার জন্য একই মেশিন ভাড়া করেন কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন। এ সময় কৃষক ঝন্টু তাঁর ধানমাড়াই শেষ না হওয়ায় ওই মেশিন কাউন্সিলর আনোয়ারকে দিতে অপারগতা জানান। এরই জের ধরে আনোয়ারের সঙ্গে ঝন্টুর কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় ঝন্টুকে ধান মাড়াই বন্ধ রাখতে বলা হয়। বিষয়টি ঝন্টুর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানালে বুধবার বিকেলে পুলিশের তিনজন সদস্য দুপক্ষের কথা শুনে সামাধাণ দিতে ঝন্টুর বাড়িতে আসেন। এ সময় পুলিশ ঝন্টুদের ধান মাড়াই শুর করতে বললে কাউন্সিলর ও তার স্ত্রী ক্ষুদ্ধ হয়ে ঝন্টুকে মারধর করতে আসেন। এ সময় ঝন্টুর ছেলে তাদের বাঁধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করেন কাউন্সিলর আনোয়ার ও তার লোকজন। 

এ ঘটনায় বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালকিনি থানায় কাউন্সিলর আনোয়ারসহ তিন জনকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দেন কৃষক ঝন্টু চন্দ্র মন্ডল। অভিযোগটি ওই দিন রাত ১০টার মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন পুলিশ। পরে নয়াকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলর আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কাউন্সিলর আনোয়ার তাঁর বাড়িতে স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ঝন্টুর ছেলে প্রথমে আমাকে আমাকে থাপ্পর দেওয়ার কথা বললে আমাদের সঙ্গে ঝন্টু ও তার ছেলের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে। হাতাহাতির পরে পুলিশ সবাইকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এখানেই ঘটনা শেষ। বরং আমাকে সবার সামনে অসম্মানীত করা হয়েছে। আমি জনগণের কাউন্সিলর তাই স্থানীয় জনগণ ওদের প্রতিহত করেছে।’

এ সম্পর্কে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আশফাক বলেন, ‘পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলা নিয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর আনোয়রকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত আরও দুজন পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সংখ্যালঘু ওই পরিবারটিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে। মামলা তুলে নিতে যদি কাউন্সিলরের কোন লোকজন তাদের হুমকি-ধামকি দেয় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেব।’