• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

যৌতুকের টাকা না পেয়ে নিজের শিশুসন্তানকে হত্যা!

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২০  

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন জুলহাস। সম্প্রতি বিদেশ যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়িতে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে বসেন তিনি। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। যৌতুক ও নগদ টাকা কোনোটাই না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন জুলহাস, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটান নিজের সন্তান হত্যার মধ্য দিয়ে।

নিজের পরিকল্পনায় তিন বছর সাত মাসের সন্তান মাহিমকে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার পর বালু চাপা দেন জুলহাস। এখানেই থামেননি তিনি। গত সোমবার (২৯ জুন) নিজেই র‌্যাবের কাছে সন্তান অপহরণের শিকার হয়েছে মর্মে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাবের তদন্ত ও অনুসন্ধানে নিজেই ফেঁসে যান জুলহাস।

র‌্যাব জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইল মৃধাবাড়ি এলাকায় র‍্যাব-১০ এর একটি অভিযানে অপহরণকারীকে জুয়েল ব্যাপারীকে (২০) আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ভুক্তভোগী বাবা জুলহাস ওরফে ফারুক ওরফে গুড্ডাকে (৩১) মাতুয়াইল দরবার শরীফ মোড় এলাকা থেকে আটক করে র‌্যাব-১০।

র‌্যাব-১০ জানায়, মাহিমকে গত শনিবার (২৭ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় মাতুয়াইল বাসার সামনে থেকে অপহরণ করেন প্রতিবেশী জুয়েল। এরপর তারা ভুক্তভোগীকে ডেমরার দেইল্লা নির্জন এলাকায় নিয়ে জুসের সাথে ৮টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করান। শিশু মাহিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে শনিবার সন্ধ্যায় মৃধাবাড়ি সংলগ্ন গ্রিন মডেল টাউন এলাকার কাশবনের ভেতর বালু চাপা দিয়ে রেখে আসেন জুলহাস ও জুয়েল।

বুধবার (১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মো. কাইমুজ্জামান খান।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর বাবা জুলহাস আগে থেকেই যৌতুকের টাকাসহ বিদেশে যাওয়ার জন্য চার লাখ টাকা দাবি করেন শ্বশুরবাড়িতে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলেন তিনি। পারিবারিক কলহ এবং শ্বশুরবাড়ি হতে টাকা না পেয়ে ক্ষোভে নিজের সন্তানকে হত্যার জন্য প্রতিবেশী জুয়েলকে নিয়ে পরিকল্পনা করেন।

ডিআইজি কাইমুজ্জামান খান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা স্মৃতি আক্তার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।