• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউতে জিএসপি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পাশে আছি: প্রধানমন্ত্রী জনসমর্থন থাকায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব রোহিঙ্গাদের জন্য বৃহত্তর তহবিল সংগ্রহে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান লেখাপড়ার নামে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি না করার আহ্বান বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বিশ্বে অনেক বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে: প্রধানমন্ত্রী ট্রাস্ট করে ভাষা সংরক্ষণ-উন্নয়নের উদ্যোগ, হচ্ছে আইন ‘কিডনি রোগীদের চিকিৎসায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার’ ইফতার পার্টি না করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

তুমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দফায় দফায় গোলাগুলি, এক জন নিহত

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩  

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় কোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পরে উখিয়ার এমএসএফ হাসপাতাল থেকে এক রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ১২ বছরের এক শিশুসহ আরো দুই জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে হাসপাতালে। গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল পর্যন্ত গুলি অব্যাহত ছিল। পাশাপাশি শেষ বিকালে এই রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন শূন্যরেখার রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ।     

সীমান্তের একাধিক সূত্র দাবি করেছে, গোলাগুলিতে অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে নিহত দুই জনের ছবি গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসেছে। তাদের গায়ে আরএসও নামে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনে পোশাক রয়েছে। এছাড়াও বিকালে জিরো পয়েন্টের অসংখ্য বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ঘায়েল করতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে বলে প্রচার পাচ্ছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত শতাধিক ঘর ভস্মীভূত অথবা আগুন জ্বলা অব্যাহত ছিল বলে জানিয়েছেন ক্যাম্পে অবস্থানরত একাধিকবার রোহিঙ্গা।

উখিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী জানান, হামিদুল্লাহ (২৭) ও মহিবুল্লাহ (২৫) নামে গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তিকে উখিয়ার এমএসএফ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক হামিদুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন। মহিবুল্লাহকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত রোহিঙ্গার মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।  তিনি আরো জানান, হতাহত রোহিঙ্গাদের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে আনা হয়েছে। সেখানে কী হয়েছে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।

রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমারের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সকাল থেকে গুলি বিনিময় শুরু হয়। তারা কোনারপাড়া শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ছড়িয়ে পড়ে। বিকাল ৪টার দিকে শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে বলতে পারছি না।  এ ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গাও মারা যেতে পারে জানিয়ে দিল মোহাম্মদ বলেন, কতজন হতাহত হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।  

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সকালে নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা।  স্থানীয় বাসিন্দা জামাল হোসেন বলেন, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যাল্ডের কোনার পাড়া ক্যাম্পে এবং মিয়ানমার সীমান্তের ওপার হতে বুধবার ভোর থেকে হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ আসছিল। আজিজ নামে সীমান্তে বসবাসকারী এক ব্যক্তি জানান, বিকালের পর সীমান্তের শূন্য রেখায় রোহিঙ্গা বসতির মিয়ানমার অংশের দিকের অনেক ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে পারে।

এদিকে, কাদের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে তা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রই নিশ্চিত করেনি। সীমান্ত এলাকার লোকজনের ধারণা দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে সকাল থেকে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় থেমে থেমে গুলির খবর জেনেছি। বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং প্রশাসনের তরফ থেকে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখায় অস্থিরতা চলছে বলে খবর পেয়েছি। সেখানে যা-ই ঘটুক আমরা নতুন কাউকে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ করতে দেব না। সে বিষয়ে সীমান্তরক্ষীরা সচেষ্ট রয়েছে।  

এদিকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে আরসার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, বিকালে আরসার এক শীর্ষ নেতার স্ত্রীসহ তিন মাদক কারবারিকে বিজিবি আটকের ঘটনায় বিজিবির বিওপি লক্ষ্য করে আরসার সন্ত্রাসীরা কয়েক শ গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে বিজিবিও গুলি ছোড়ে। তবে মঙ্গলবার রাতে বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ইয়াবা কারবারিদের লক্ষ্য করে পালটা গুলি করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।