• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

মাদারীপুর দর্পন

আজ ভেড়ামারা মুক্ত দিবস

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০২৩  

আজ ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার। ভেড়ামারা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাকে শত্রুমুক্ত করে।
মুক্তিযোদ্ধর সময় ৮ নং সেক্টরের কমান্ডার মেজর আবুল মুনছুরের নেতৃত্বে জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদুল আলমের নেতৃত্বে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ভোর ৭টার দিকে ভেড়ামারা ফারাকপুর রেলওয়ে উত্তর গেটের কাছে পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম বলেন, এখানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাক হানাদার বাহিনীর মধ্যে অন্তত ১৫ টি খণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এসব যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন। তারা হলেন মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর গ্রামের রফিকুল ইসলাম (বীর প্রতীক), চাঁদ আলী, লুৎফর রহমান, দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রমের গিয়াস উদ্দীন, সাতবাড়ীয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন, চাঁদগ্রাম’র উজির আলী, এবং সাতবাড়ীয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম। এছাড়াও এসব যুদ্ধে পাক হানাদারদের নির্মমতার শিকার হয়ে অন্তত শতাধিক মুক্তিকামী মানুষ শহিদ হয়েছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আবু দাউদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পর ভেড়ামারার যুব সমাজ মুক্তির সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। তখন ফ্রিডম ফাইটার নামে ৫ টি, অ্যাকশন কমিটি নামে ১ টি এবং পলিটিক্যাল নামে ১ টি কমিটি তৈরি করা হয়। ফ্রিডম ফাইটার কমিটির নেতৃত্ব দেন কমান্ডার মহিউদ্দীন বানাত, কমান্ডার আব্দুর রহমান, কমান্ডার মোকাদ্দেস হোসেন, কমান্ডার তোবারক হোসেন। পলিটিক্যাল কমিটিতে নেতৃত্ব দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম এবং অ্যাডভোকেট আলম জাকারিয়া টিপু। এ্যাকশন কমিটিতে নেতৃত্ব দেন ভেড়ামারা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক দুদুু, বিএম সেকেন্দার, মজিবুর রহমান মাঙ্গন, জহুরুল হক রাজা ও শহীদুল্লাহ।

সাবেক কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলম জাকারিয়া টিপু বলেন, স্বল্প সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৭৩ জন মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একযোগে চর্তুদিক থেকে একটার পর একটা পাক ঘাঁটি আক্রমণ করে  ধ্বংস করে রাজাকার আলবদরদের আস্তানা। সর্বশেষ ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিএবাহিনীর দুর্বার প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে পাক হানাদার বাহিনীরা কামান ফেলে পালিয়ে যায়। সেই সময় পাক সেনারা মাইনস চার্জ ( বোমা) নিক্ষেপ করে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১২ নম্বর স্প্যানটির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

ঐ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে প্রায় ৫০-৬০ জন বিহারীও নিহত হন। ওই দিন রাতে মুক্তিপাগল মানুষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে ভেড়ামারায় প্রবেশ করতে থাকেন। বিজয়ের আনন্দে মেতে ওঠেন।

ভেড়ামারা মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ভেড়ামারা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন গুলো ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।        

পাক হানাদার বাহিনী যোদ্ধের সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১২ নম্বর স্প্যানটির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।