• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

মাদারীপুর দর্পন

আজ ঝালকাঠি ও নলছিটি হানাদারমুক্ত দিবস

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০২৩  

আজ ৮ ডিসেম্বর। ঝালকাঠি ও নলছিটি পাক হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পালিয়ে যায়। এই দিনে ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়েছিল।

বিজয়ের বেশে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করেন। জেলার সব জায়গায় আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন স্বাধীনতাকামী জনতা। ১৯৭১–এর ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করতে করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহরের দখল নেয়। এরপর থেকে পাকিস্তানি বাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলাজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ আর লুটপাটসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়।

প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নিরীহ বাঙালিদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হতো। তাদের পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহরে কারফিউ জারি করে রাতের আঁধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি বাহিনী। পরে মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করে সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থানার পুলিশকে নিরস্ত্র করেন। ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি শহর ও নলছিটি হানাদারমুক্ত হয়। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় মিছিল বের করেন।

নলছিটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার তাজুল ইসলাম চৌধুরী দুলাল বলেন, ৭ ডিসেম্বর আমরা নিশ্চিত হই নলছিটি থানার পুলিশ ও তাদের এদেশীয় দোসররা পরাজয় মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৮ ডিসেম্বর সকালে তালতলা মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষরা শহরে আসলে শহর এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ লাল সবুজের পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে আসে। মুক্তির আনন্দে সেদিন আমাদের চোখে ছিল আনন্দের অশ্রু। একদিকে বিজয়ের আনন্দ অপরদিকে লাখ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, মা-বোনদের সম্ভ্রম হারানোর বেদনা আমাদের চোখের জলে স্মরণ করেছি।

ঝালকাঠির বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দত্ত    বলেন, ১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করতে করতে পাক হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহর দখলে নেয়। এরপর থেকে পাক বাহিনী রাজাকাদের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুট আর আগ্নিসংযোগসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন নিরীহ বাঙালিদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালিদের হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হতো।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহরে কারফিউ জারি করে রাতের আঁধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী। পরে মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করে সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থানার পুলিশকে নিরস্ত্র করে মুক্তিযোদ্ধারা। ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা আত্মসমর্পণ করে।