• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী

পৃথিবীর ও মহাকাশ সৃষ্টি নিয়ে কোরআনের বিস্ময়কর তথ্য (পর্ব-১)

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২০  


মহান আল্লাহর সৃষ্টিতত্ত্ব বিশ্লেষণ নিঃসন্দেহে একটি বড় ইবাদত। পবিত্র কোরআনে মানুষকে তার নিজের সৃষ্টি ও আশপাশের সৃষ্টিজগতের প্রতি অনুসন্ধিৎসু  দৃষ্টিদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে আমাদের এ পৃথিবী ও মহাকাশ সম্পর্কে রয়েছে বৃহৎ তথ্যভাণ্ডার। অক্ষর থেকে শব্দ, শব্দ থেকে বাক্য অজানা সব জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্মুক্ত বিশ্বকোষ এ কোরআন।
আরো দেখুন >>> কোরআন নাজিলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও পরিচিতি

মহান আল্লাহর সৃষ্টিতত্ত্ব বিশ্লেষণ নিঃসন্দেহে একটি বড় ইবাদত। পবিত্র কোরআনে মানুষকে তার নিজের সৃষ্টি ও আশপাশের সৃষ্টিজগতের প্রতি অনুসন্ধিৎসু  দৃষ্টিদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর পবিত্র কোরআন এ জন্য অদ্বিতীয় নির্ভরযোগ্য উৎস। চলুন দেখি মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে পৃথিবী ও মহাকাশবিষয়ক কী কী বিস্ময়কর তথ্য রয়েছে।

> মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে পৃথিবীর সূচনা

খুব বেশি দিনের কথা নয় যে মানুষ জানতে পেরেছে মহাবিশ্বের সূচনা এক মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে ঘটেছে। আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণ থেকে ফ্রিদমান সমীকরণ। তার পর বিশ্বতত্ত্ব নীতি এবং হোবল নীতি। সর্বশেষ ১৯৬০ সালে মহাজাগতিক অণুতরঙ্গের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিজ্ঞান যখন ক্লান্ত, তখন দেখা গেল আজ থেকে প্রায় এক হাজার ৫০০ বছর আগেই বিশ্বস্রষ্টা তাঁর মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে এ ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে সপ্তাকাশ ও পৃথিবী পুঞ্জীভূত হয়ে ছিল। অতঃপর আমি উভয়টি এক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে সূচনা করেছি।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৩০)।

> পৃথিবীর সৃষ্টি মহাকাশ সৃষ্টির আগে

মহাকাশ নাকি পৃথিবী? আকাশের গ্রহ-নক্ষত্র, নাকি পৃথিবীর গাছপালা, কোনটি আগে সৃষ্টি হয়েছে? উত্তর খুঁজতে বেশি দূর যেতে হবে না। আপনার ঘরের পবিত্র কোরআন খণ্ডটি হাতে নিন। তাতে চোখ বুলালেই দেখতে পাবেন, ‘আপনি বলুন, সত্যিই কি তোমরা সেই মহাপ্রভুকে অস্বীকার করছ! যিনি পৃথিবীকে মাত্র দু‘দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার অংশীদার নির্ধারণ করছ? তিনি তো সমস্ত জগতের প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীতে তার উপরাংশে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং জমিনের ভিতরাংশ বরকতপূর্ণ করেছেন আর ভূগর্ভে সুষমরূপে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন মাত্র চার দিনে। সব যাচনাকারীর জন্য সমানভাবে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন আর তা ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। (সূরা : ফুসিসলাত, আয়াত : ৯-১১)। এখানে পর্যায়ক্রমে প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি এরপর ভূগর্ভস্থ বিষয়াবলির আলোচনার পর আসমানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

> পৃথিবীর পরিধি ক্রমে সংকীর্ণ হয়ে আসছে 

পদার্থবিজ্ঞানীদের গবেষণামতে পৃথিবী তার সূচনালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ পানির এক-চতুর্থাংশ পানি হারিয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণামতে পৃথিবীর ভার বা ওজন (৫,৯৭২,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০) অর্থাৎ ৫ সেক্সটিলিয়ন ৯৭২ কুইন্টিলিয়ন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে প্রতিবছর পৃথিবী তার মোট ওজন থেকে ৫০০ টন ভার হারাচ্ছে। এ ছাড়া অক্সিজেনের ভাগ প্রতিনিয়ত কমে আসাও হালের বিজ্ঞানীদের কাছে স্বীকৃত বিষয়। যা থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছে যে পৃথিবীর পরিধি ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। অন্যদিকে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি দেখে না আমি ভূপৃষ্ঠের পরিধি ক্রমেই সংকুচিত করে আনছি, এর পরও কি তারাই বিজয়ী!’ (সূরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৪৪)।

> পৃথিবী দ্রুতগতিতে ছুটছে!

পবিত্র কোরআনে পৃথিবী স্থির কিংবা সূর্যের পাশে ঘূর্ণমান কোনোটিই বলা হয়নি। বরং এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে যা এসেছে তার সারকথা হলো, পৃথিবী আপন কক্ষপথে দ্রুতগতিতে সাঁতার কাটার মতো ঢেউ খেলে ছুটে চলেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর চলন প্রকৃতি প্রধানত দুই ধরনের। প্রথমত, পৃথিবীর নিজস্ব ঘূর্ণায়ন যা ঘণ্টায় প্রায় এক হাজার ৬০০ কিলোমিটার। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মহান আল্লাহ যিনি আসমান জমিন যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং দিনকে রাতের ওপর এবং রাতকে দিনের ওপর আচ্ছাদিত করেন।’ (সূরা : জুমার, আয়াত : ৫)। আর এ কথা শিরোধার্য, কোনো বৃত্ত আকৃতির জিনিসকে অনুরূপ অন্য কোনো জিনিস দ্বারা বারবার আচ্ছাদিত করার জন্য, তা ঘূর্ণমান হওয়ার বিকল্প নেই। দ্বিতীয়ত, সূর্যকে ঘিরে পৃথিবীর সন্তরণ। বহুকাল যাবৎ মানুষ এ ধারণা পোষণ করে আসছে যে পৃথিবী সূর্যের পাশে ঘূর্ণমান। তবে খুব সাম্প্রতিক সময়ে মহাকাশ গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন যে সূর্যকে ঘিরে পৃথিবীর চলার ধরনটাকে ঘূর্ণন শব্দে ব্যাখ্যা করা যথাযথ নয়। বরং পৃথিবীসহ আরো অনেক গ্রহ উপগ্রহ সর্বদা সূর্যকে ঘিরে সাঁতার কাটার মতো ওপর-নিচ ঢেউ তুলে সম্মুখপানে অগ্রসর হচ্ছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে চন্দ্র, সূর্য ও পৃথিবীর আলোচনা টেনে বলেন, প্রত্যেকেই আপন কক্ষপথে সন্তরণ করছে। (সূরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৪০)।

> পৃথিবীর নিচে বিপুল পানির উৎস

টিউবওয়েল চেপে পানি তুলছেন কিংবা পাম্পের সাহায্যে। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন ভূগর্ভের এই বিপুল পরিমাণ পানির উৎস কোথায়? তাহলে জেনে নিন, মহান আল্লাহ  বলেন, ‘আমি আসমান থেকে পরিমাণমতো পানি বর্ষণ করি, অতঃপর তা ভূগর্ভে সংরক্ষণ করে রাখি।’ (সূরা : মুমিনুন, আয়াত : ১৮)।