• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

মাদক-আধিপত্যের দ্বন্দ্বে খুন হন ফয়সাল, গ্রেফতার ১০

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৪  

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানার সাড়ে ১১ নম্বর এলাকায় মাদক ও আধিপত্যের দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং গ্রুপের হামলায় নিহত হন কারচুপি কারিগর ফয়সাল। একই ঘটনায় ছুরিকাঘাতে আহত রানা ওরফে রানু নামের অপর এক তরুণ চিকিৎসাধীন।

এরই মধ্যে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- শাহিন ওরফে নাডা শাহিন (২৪), মো. মুরাদ হোসেন (২৪), পারভেজ আহম্মেদ (২২), মো. ইয়াসিন (২০), মো. সাইফুল ইসলাম সাইমন (৩০), মো. নাসির উদ্দিন (২০), মো. হৃদয় ওরফে সাফি গন্ডার (২০), মো. রাজিব মিয়া (২৫), শাহনেওয়াজ ওরফে কাল্লু (২৮) এবং তানজিলা (২৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, রামদা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ফয়সাল নামের একজন নিহত হন। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্তে নেমে জানা যায়, প্রথমে একই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পেপার সানী গ্রুপের সদস্য মো. শাহিন ও তার বোন তানজিলার সঙ্গে গত ১৫ মার্চ বিকেলে মাদকের টাকা ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রুপের সদস্য ফয়সাল ও রানা ওরফে রানুর সঙ্গে মারামারি হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন, এই ঘটনার পরে পেপার সানী গ্রুপের সদস্য শাহিন ওরফে নাডা শাহিন ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সায়মুন গ্রুপের রাব্বী ওরফে গালকাটা রাব্বীকে জানান। পরদিন ফয়সাল ও তার বন্ধু রানা এবং আরও দুই বন্ধু পল্লবীর কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার শেষে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন। পথে চাপাতি, তলোয়ার, রামদা, সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে কুপিয়ে তাদের আহত করা হয়। এরপর ফয়সালের মা এসে তাকে উদ্ধার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ফয়সালের বন্ধু রানা ওরফে রানু আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় নিহত ফয়সালের বাবা শাহাদাত হোসেন পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

গোয়েন্দাপ্রধান আরও বলেন, মিরপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা প্রায়ই মাদক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি করে থাকেন। একই ঘটনা উত্তরায় ঘটছে। উত্তরা এলাকায় বেশ কিছু বড় ভাইদের নাম পেয়েছি, যারা কিশোর গ্যাং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাশাপাশি মোহাম্মদপুরেও বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ সক্রিয়। রাজধানীর কোনো এলাকায় বড় ভাইদের বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। কোনো বড় ভাইয়ের নামে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। আমাদের গোয়েন্দা পুলিশের প্রত্যেকটি টিম রাজধানীর সব এলাকায় কাজ করছে, যোগ করেন হারুন অর রশীদ।

ফয়সাল হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিবির মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রাশেদ হাসান। তিনি বলেন, মিরপুরের পল্লবী এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয়। এ ঘটনা ছাড়াও অতীতেও কিশোর গ্যাং সদস্যরা বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে। জড়িতদের ধরতে ধারাবাহিক অভিযান চলছে।