• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

শিবচরের একটি সেতু বদলে দেবে পুরো চরাঞ্চল এলাকার চিত্র

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৮  

মাদারীপুর জেলার শিবচরের মাদবরেরচর ইউনিয়নের  একটি অংশ উপজেলার মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন পদ্মার চরাঞ্চল। পদ্মার মাঝে জেগে উঠা একটি চরে দীর্ঘদিন ধরেই মানব বসতি। তবে ওই চরাঞ্চলের সাথে উপজেলার মূল ভূ-খন্ডের সরাসরি সড়কপথে কোন যোগাযোগ ছিল না। পদ্মানদী মাঝে জেগে উঠা একটি দ্বীপের মতো মাদবরেরচর ইউনিয়নের পুরান মাদবরেরচর এলাকাটি। পুরান মাদবরেরচর থেকে উপজেলা শহরে আসতে নৌকায় করে কিছু পথ পাড়ি দিতে হয়। তারপরই সড়কের দেখা মেলে। অথচ চরাঞ্চলে বেড়ে উঠা গ্রামগুলো বেশ পুরাতন। সেখানে রয়েছে হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অসংখ্য গ্রাম। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে পিছিয়ে থাকতে হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষের। নদী বিভক্ত করে রেখেছে মূল ভূ-খন্ডকে। বর্ষা মৌসুমে এ সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করে।
যোগাযোগে পিছিয়ে থাকা মাদবরেরচর ইউনিয়নের পুরাতন মাদবরেরচর, পুরান কান্দি, নতুন কান্দি, হাজিকান্দি, আলে খাঁর কান্দিসহ বেশ কিছু গ্রামের মানুষের সুবিধার্থে পদ্মার এক শাখা নদীর উপর দিয়ে নির্মিত হচ্ছে সেতু। মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন  চরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য নির্মাধীন সেতুটির নামকরন করা হয়েছে শেখ জামাল সেতু। গত বছরের মে মাসে সেতুটির নির্মান কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের  সংসদীয় পার্টির সেক্রেটারী ও অনুমিত হিসাব কমিটির সভাপতি নূর ই আলম চৌধুরী এমপি। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মাস খানেকের মধ্যেই সেতুটির নির্মান কাজ শুরু হয়। পুরো নদীর উপর সেতুটির বেশির ভাগ অংশেরই অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে।
স্থানীয় আব্বাস মুন্সী নামের এক কৃষক বলেন,‘আমরা চরে থাকি। চর থেকে মাদবরেরচর হাটে আসতে হলে নৌকায় নদী পাড় হতে হয়। বর্ষার দিনে আরো বাড়ে সমস্যা। কেউ অসুস্থ হয়ে পরলে হাসপাতালে নিতে হলে দ্রট্টু আমরা উপজেলা শহরে যোগাযোগ করতে পারি না এই নদীর জন্য। তাছাড়া রাতে কোন প্রয়োজনে উপজেলা শহর বা পাঁচ্চর যেতে হলে আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই দুর্ভোগের অবসান হবে শীঘ্রই। সেতুটি হয়ে গেলে চরের মানুষের আরো উন্নতি হবে।
স্থানীয় শিক্ষক ফয়েজ আহমেদ বলেন,‘আসলে নদীর কারণেই চরের মানুষ পিছিয়ে রয়েছে। তারা শিক্ষা, ব্যবস্যা, স্বাস্থ্যসহ নানা দিকেই পেছানো। কারন সহজেই চরের মানুষ শিবচর উপজেলা শহরসহ মূল ভূ-খন্ডে আসতে পারে না। নদীপথ নৌকায় পাড় হতে হয়। এই সেতুটি হয়ে গেলে চরের অভাবনীয় পরিবর্তন হবে। সরাসরি চরের বিভিন্ন গ্রামে সড়ক পথে যোগাযোগ করা যাবে। চরের ছেলেমেয়েরা চর থেকে সহজেই এ পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে পারবে। নদী পার হওয়া নিয়ে চিন্তা থাকবে না তখন।’
মাদবরেরচর হাটের সাথেই সেতুটির এক প্রান্ত। মাদবরেরচর হাট থেকে পুরান মাদবরেরচর  অংশের পুরাতন পদ্মানদীর উপর দিয়ে নির্মানাধীন শেখ জামাল সেতুটি স্বপ্ন দেখাচ্ছে চরের মানুষের। যোগাযোগ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসলে উন্নয়নের আলো জ্বলবে চরাঞ্চলের বুকে। এ প্রত্যাশা এই অঞ্চলের মানুষের!