• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

শিবচরে চরের পানিতে হাঁস পালনে ভাগ্য বদলের চেষ্টা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২০  

 

শিবচরের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের আড়িয়াল খাঁ নদের হাজী শরিয়তউল্লাহ সেতুর উত্তর প্রান্তে নদীর জেগে উঠা চরের একপাশে যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, সে স্থানে হাঁস পালন করছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার। প্রায় ছয় মাস হতে যাওয়া খামারটিতে হাঁস রয়েছে এক হাজারেরও বেশি। ইউটিউবে হাঁসের খামার দেখে এরকম খোলা স্থানে নদীর জলাবদ্ধতায় হাঁসের খামার তৈরি করেছেন বিপ্লব নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। চেষ্টা করছেন ভাগ্য বদলেরও। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সার্বক্ষণিক  পরামর্শ পাচ্ছেন তিনি।

সরেজমিনে হাঁসের খামার ঘুরে দেখা গেছে, আড়িয়াল খাঁ সেতুর উত্তর-পূর্ব পাড়ে চর পড়ে শুকিয়ে গেলেও নদীর ঠিক পাড়েই কিছু অংশ গভীর হয়ে পানি আটকে রয়েছে। বেশ গভীর থাকায় শুকনো মৌসুমেও শুকিয়ে যাচ্ছে না। মূল নদীর সাথে কোন সংযোগও নেই। এরকম একটি স্থানের চারপাশে হালকা নীল রঙের জাল দিয়ে বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে জলাবদ্ধ জায়গাজুড়ে। জলাবদ্ধ ওই জায়গার মধ্যেই সাঁতরে বেড়াচ্ছে অসংখ্য হাঁস। তার পাশেই চরের উপর নিচু করে তৈরি করা হয়েছে আলাদা তিনটি ঘর। দুটিতে রাতে হাঁস রাখা হয়। অন্যটিতে হাঁস দেখাশোনা করার লোক থাকে।

আলাপকালে হাঁসের খামারি ও কেয়ারটেকার জানান, নদীর এই স্থানটি খোলামেলা। পর্যাপ্ত রোদ, বাতাস সবই আছে। আর জলাবদ্ধ অংশ পানিও রয়েছে পর্যাপ্ত। এরকম খোলামেলা পরিবেশে বেশ দ্রুত বেড়ে উঠছে হাঁসগুলো। হাঁস পালনের জন্য এরকম স্থান উপযুক্ত বলে তারা জানান।

'খাঁকি ক্যাম্বল' জাতের এই প্রজাতির হাঁস যে কোন স্থানেই পালনের উপযুক্ত। পুকুর, জলাশয়, ডোবা-নালা। তবে নদীর খোলা চর হলে পরিবেশ ভালো থাকে। প্রাকৃতিক খাবারও পানিতে থাকে। এই প্রজাতির হাঁস সাড়ে তিনমাস বয়স থেকে একটানা আড়াই বছরের বেশি সময় পর্যন্ত ডিম দেয়। ঠিকমত যত্ন নিলে রোগ-বালাও কম হয় এ হাঁসের।

হাঁসের খামারি বিপ্লব জানান,'ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনুমতি নিয়ে নদীর চরে খামারটি তৈরি করেছি। ৪৫ টাকা দরে হাঁসের বাচ্চা কিনে আনি। হাঁসের বয়স এখন তিন মাসের মতো। এ হাঁস সাড়ে তিন থেকে চারমাসেই ডিম পাড়া শুরু করে। স্থানটি খোলামেলা হওয়ায় হাঁস পালনের জন্য আদর্শ স্থান বলে মনে হয়েছে। এজন্যই এখানে খামারটি তৈরি করি।'

তিনি আরো বলেন,'সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানিতেই থাকে। উপড়ে উঠে হাটাহাটি করে। রোদ পোহায়। রাতে হাঁসের জন্য তৈরি করা ঘরে রাখা হয়। সকাল ও বিকেলে খাবার হিসেবে ধান দেয়া হয়। দুপুরে কুড়া-ভুসি একত্র করে মিশিয়ে দেই। খাবার খেয়ে ঘুরে বেড়ায়।'

বিপ্লব বলেন,' আগামী বর্ষায় চর ডুবে গেলে তখন বাড়িতে নিয়ে রাখবো। শুকনো মৌসুমে এখানেই থাকবে। শিয়াল বা হিংস্র প্রাণী থেকে রক্ষার জন্য নীল রঙের জাল দিয়ে বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। নীল রঙ শিয়াল বা হিংস্র প্রাণীর চোখে বিঁধে বলে হাঁসগুলো নিরাপদে থাকে।'

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা.মো.ছরোয়ার হোসেন শিকদার জানান, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক যুবকেরাই হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন। আমরা তাদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সেবা প্রদান করে থাকি। যাতে করে তাদের খামারের হাঁস সুস্থ-সবল থাকে।'