• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

মিয়ানমারের বিষয়ে অ্যাডহক আন্তর্জাতিক আদালত স্থাপনের পরামর্শ

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২০  

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত নির্যাতনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে নতুন একটি অ্যাডহক আন্তর্জাতিক আদালত স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের র‌্যাপোটিয়ার ইয়াং হি লি। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) পাঁচ দিনের সফর শেষে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী মার্চে জেনেভাতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে আমি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পেশ করবো। সেখানে আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখবো।

তিনি আরও বলেন, সিয়েরালিওন, রুয়ান্ডা বা বসনিয়া হার্জেগোভিনায় যেভাবে গণহত্যার বিচার হয়েছে, এক্ষেত্রেও একই ধরনের সুপারিশ করবো আমি।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দেবে সে বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কী হবে তা নিয়ে কোনও ধারণা করতে চাই না। তবে আমি এতটুকু বলতে পারি, যে সিদ্ধান্তই হোক, মিয়ানমারের উচিত হবে তা মেনে নেওয়া। পাশাপাশি সংকট নিরসনে মিয়ানমার যাতে দায়িত্ব অবহেলা না করে, তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দুই সদস্য চীন ও রাশিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের আচরণ লজ্জাজনক। নিরাপত্তা পরিষদে তাদের প্রতি যে দায়িত্ব ছিল, তা পালনে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৬ বছর ধরে মিয়ানমারের বিষয়ে র‌্যাপোটিয়ার হিসেবে কাজ করছেন ইয়ান হি লি। এ বছরের মার্চে তার চুক্তি শেষ হচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কাজ করতে তিনি একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করেছেন। তবে মিয়ানমার সরকার তাকে ওই দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এ মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও সংঘাত আরও তীব্রতর না হওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

তবে মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী ও আদালতে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করা শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চি গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, এই বিষয়ে মামলা পরিচালনার এখতিয়ার জাতিসংঘের আদালতের নেই। গণহত্যার অভিযোগ খারিজ করতে বিচারককে তিনি আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত গণহত্যা ও নির্যাতনের বিষয়ে আইসিজে ছাড়াও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ও আর্জেন্টিনার ডমেস্টিক কোর্টে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।