• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

শিবচরের রেললাইনে ভ্রমনপ্রেমীদের আড্ডা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২২  

শিবচর প্রতিনিধিঃ দেশের উত্তরাঞ্চলের মতো পদ্মাসেতুর দক্ষিণাঞ্চলে রেল লাইন ছিল না এতোদিন। রেল বলতে এ অঞ্চলের মানুষেরা উত্তরের জনপদকেই বুঝে থাকে। নৌযানের সাথে নিবির সম্পর্কের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সেই রেলের সুবিধা পেতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই। পদ্মাসেতুকে ঘিরে রেল যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে এই অঞ্চলে। পদ্মাসেতু থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ শেষের পথে।

এক্সপ্রেসওয়ের পাশ দিয়েই উচু রেল লাইন। তার উপর পাথর বিছানো রেলপথ এখন এই এলাকার দর্শনার্থীদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। খুব শীঘ্রই এ পথে ট্রেন চলবে। উত্তরের জনপদ রাজশাহী এবং ঢাকাতেও ট্রেনে চড়ে যাওয়া যাবে শিবচর থেকেই। এই রেলপথ দেখতে প্রতিদিনই শিবচরসহ আশেপাশের এলাকার মানুষের ভিড় থাকে। বিশেষ করে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রেল পথের সূর্য্যনগর, দত্তপাড়ার বাঁচামারা, পাঁচ্চর, কুতুবপুরসহ পদ্মাসেতুর জাজিরা টোলপ্লাজা পর্যন্ত এলাকায় সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যায়। দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য দর্শনার্থী আসেন, রেলপথ ধরে হাটেন। বসে আড্ডাও দেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাঙ্গা থেকে পদ্মাসেতুর জাজিরা টোলপ্লাজা পর্যন্ত রেল পথের সূর্য্যনগর, বাঁচামারা, পাঁচ্চর, কুতুবপুর এলাকার রেলপথে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বয়সী মানুষের ভিড়। লোকজনের ভিড়কে কেন্দ্র করে রেল লাইনে ঝালমুড়ি, বাদামসহ খেলনা বিক্রেতাদেরও দেখা মিলে। অনেকেই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছে। রেললাইনের উপর বসে বাদাম খাচ্ছে আবার কেউ রেলপথে হেটে বেড়াচ্ছে। পরিবার ছাড়াও দলবদ্ধ হয়ে স্কুল-কলেজের বন্ধুরা, চাকুরিজীবী, স্থানীয় বয়স্কদের হেটে বেড়াতে দেখা গেছে। সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত রেললাইনে দর্শনার্থীদের বেশ ভীড় থাকে।


স্কুলছাত্রী সিনহা বলেন,'আমাদের বাড়ি রেলপথের কাছেই। রেললাইন থেকে দেখা যায়। বিকেলে এখানে প্রায়ই ঘুরতে আসি। বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক লোকজন ঘুরতে আসে এখানে। সূর্য ডোবার মুহুর্তে রেল লাইন থেকে বেশ ভালো লাগে।'

উপজেলার দত্তপাড়া থেকে আসা দুই যুবক বলেন,'রেল চালু হলে তো আর এভাবে হেটে বেড়ানো যাবে না। আমাদের এখানে তেমন দর্শনীয় স্থান নাই। পদ্মানদীর পাড়ে ঘুরতে যেতাম আগে। সেতু দেখতে। এখন বিকেলের সময়টা রেলপথে ঘুরে বেড়াই। সময় কাটাই। ভালো লাগে। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক লোকজন আসে। বিকেলে একপ্রকার মেলা মিলে যায়।'

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাসেতুর জাজিরা টোলপ্লাজা সংলগ্ন কুতুবপুর এলাকার জংশন থেকে আগামী মাসের ১৬ তারিখের দিকে ট্রেন চালু হতে পারে। এখান থেকে রাজশাহী পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলবে। চলতি মাসের ১ তারিখে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে জাজিরা টোলপ্লাজ পর্যন্ত রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেনের কয়েকটি বগি চালানো হয়েছে।

শিবচরের কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতিকুর রহমান মাদবর জানান,'রেল চালু হলে নতুন দিগন্ত খুলবে যোগাযোগের। রেল ঘিরেও স্বপ্ন এই অঞ্চলের মানুষের মনে। পদ্মা সেতুর পর রেল চালু হলে অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হবে এই এলাকার মানুষ। এখন এই রেললাইন মানুষের অবসর সময় কাটানোর স্থানে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য মানুষের পদচারণা দেখা যায় বিকেল হলেই।'