• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

মেসেঞ্জারে বার্তা পেয়ে ত্রাণ নিয়ে ছুঁটে গেলো ইউএনও

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৫ এপ্রিল ২০২০  

মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ ভগবতী রানী (৮০)। তাঁর স্বামী মারা গেছেন বহু বছর আগে। একুলে তাঁর নিজের বলে কেউ নেই। ছোট্ট একটি ঘুপরী ঘরে একা থাকেন তিনি। প্রতিবেশীরাই তাঁর দেখাশোনা করতো। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাব চলায় প্রতিবেশীরাও তাকে এখন এড়িয়ে চলে। তার ঘরে এখন আর কেউ খাবার দেয় না। ভিষণ কষ্টে জীবন কাটচ্ছিল তাঁর। ভগীরাথের করুণ কথাগুলো এক যুবক রোববার বেলা ১১টার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যক্তিগত মেসেঞ্জারে লিখে পাঠায়।
ঠিক এক ঘন্টার মধ্যেই মিলে যায় সারা। সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকার ওই বৃদ্ধার ঘুপরী ঘরে ত্রাণ নিয়ে হাজির হয়ে যান সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস। খাদ্য সহায়তা হিসেবে তাকে দেন ৭ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ১ কেজি লবন, ২ কেজি আলু, ১ লিটার তেল ও ১টি সাবান।
খাদ্য সহায়তা পেয়ে খুশি হন ওই বৃদ্ধা। তিনি বলেন, ‘বড় কইষ্টে ছিলাম বাবা। কেউ আর এহন আমারে খাওন দ্যায় না। বড় আহাল যাচ্ছিল। ঘরে হাত-পা ব্যথার ওষুধ নাই। আইজকো ঘরে কোন খাওনো ছিল না। তুমি বাবা খাবার আইনা দিলা, তোমার মঙ্গল হোক বাবা।’
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ‘আমি বৃদ্ধার বাড়িতে না এলে বুঝতেই পারতাম না যে, তিনি এতটা অসহায়? যখন তার হাতে ত্রাণের প্যাকেটটা দিলাম তখন তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে আমাকে দোয়া করলেন। আর তখন আমারও মনে হয়েছে আমি আমার মায়ের মনে হাসি ফুঁটাতে পেরেছি।’
ইউএনও আরো বলেন, চরমুগরিয়া এলাকার আরো ১৬ জনকে আমি নিজে উপস্থিত থেকে ত্রাণ দিয়েছি। তারা প্রতিটি মানুষই খুব অসহায়। তবে তাদের মধ্যে ৮০ বছরের বৃদ্ধার পরিস্থতিই ছিল মানবিক। তিনি যতদিন বাঁচবেন আর আমি যতদিন এখানে কর্মরত থাকবো ততদিন তার আর কোন কষ্ট হবে না। আমি তাকে আমার মায়ের মতোই দেখাশোনা করে রাখবো।’