• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

মাওলানা তর্কবাগীশের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২২  

মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ (১৯০০-১৯৮৬) উপমহাদেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আশির দশকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তিনি। জাতীয় ইতিহাসের এই ব্যক্তিত্ব ১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট মারা যান।

আবদুর রশীদ ১৯০০ সালের ২৭ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার তারুটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৩ বছর বয়সে তিনি অসহায় দুধ বিক্রেতাদের সংগঠিত করে দুধের ন্যায্যমূল্য প্রদানে জমিদার ও মহাজনদের বাধ্য করেন। ১৯১৯ সালে তিনি খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি তরুণ নেতা মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে তৎকালীন পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার সলঙ্গা হাটে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। ওইদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ প্রতিবাদী মানুষ ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায়। নিহতদের লাশের সঙ্গে সংজ্ঞাহীন আহতদের উঠিয়ে নিয়ে ব্রিটিশ পুলিশ সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জে গণকবর দেয়। এই ‘সলঙ্গা আন্দোলন’ ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘রক্তসিঁড়ি’ হিসেবে পরিচিত।

তর্কশাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করে তর্কবাগীশ উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি ১৯৩৭ সালে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে নাটোরে কৃষক সম্মেলন আহ্বান করেন। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর একজন ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। অবিভক্ত বাংলার এমএলএ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশি নির্যাতনের সংবাদ পেয়ে প্রাদেশিক পরিষদ থেকে বেরিয়ে এসে ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তর্কবাগীশ। ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মুসলিম লীগ ত্যাগ করে প্রাদেশিক পরিষদে বিরোধী দল গঠন করেন এবং নুরুল আমিন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন।

আওয়ামী লীগদলীয় সদস্য হিসেবে পাকিস্তান গণপরিষদে ১৯৫৫ সালের ১২ আগস্ট তিনিই প্রথম বাংলা ভাষায় বক্তৃতা করেন। মাওলানা তর্কবাগীশ ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে শেষ প্রেরিত নবী, সত্যার্থে ভ্রমণে, সমকালীন জীবনবোধ প্রভৃতি।