• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

বঙ্গোপসাগরে মিলছে নতুন নতুন মূল্যবান খনিজ

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২  

চলমান অর্থনৈতিক সংকটে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার ব্লু ইকোনমি। এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের নীল সমুদ্র। ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল, চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৪৫ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশের সব প্রাণিজ-অপ্রাণিজ সম্পদ পুরোটাই বাংলাদেশের।

আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে ২০১২ সালে মিয়ানমার এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় বিশাল সমুদ্র এলাকার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই একচ্ছত্র অধিকার।

সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, বঙ্গোপসাগরের ২২টি ব্লকে প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা। ইলমেনাইট, টাইটেনিয়াম অক্সাইড, ম্যাগনেটাইট, মোনাজাইট, কোবাল্টসহ ১৭ ধরনের মূল্যবান খনিজের সন্ধানও মিলেছে বঙ্গোপসাগরে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মৎস্য গবেষণা ও জরিপ জাহাজ ‘আর ভি মিন সন্ধানী’ ৩৫টি সার্ভে ক্রুজ পরিচালিত হয়েছে।

এ ছাড়া বঙ্গোপসাগর থেকে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ আহরণ হচ্ছে। নতুন করে চিহ্নিত ২২০ প্রজাতির সি- উইড, ৩৪৭ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪৯৮ প্রজাতির ঝিনুক, ৫২ প্রজাতির চিংড়ি, ৫ প্রজাতির লবস্টার, ৬ প্রজাতির কাঁকড়া এবং ৬১ প্রজাতির সি- গ্রাস।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, সমুদ্রে আমাদের তেল-গ্যাসের অনুসন্ধানের বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এ ছাড়া আমাদের গভীর সমুদ্রে মৎস অনুসন্ধান ও সংগ্রহ বিষয়ে মেরিন ফিশারিজ বিভাগ কাজ করছে।  

সমুদ্রের অফশোর অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় উইন্ড মিল স্থাপন করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। সামুদ্রিক শৈবাল থেকে তৈরি হচ্ছে ওমেগা-থ্রি এবং ওমেগা সিক্স অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সমুদ্রের মধ্যে থাকা সম্পদগুলো আহরণ এবং এসব সম্পদ আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে কাজে লাগানোর বিষয়ে গবেষণা চলছে।  

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে জিডিপি বাড়বে ৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, যে হাইড্রোকার্বন আছে, সেগুলো আহরণের জন্য পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগ দরকার। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় রকমের লাভ নিয়ে আসছে পারে। এতে জিডিপির সঙ্গে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ বাড়তে পারে।

পর্যাপ্ত জাহাজ, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও তথ্যের অভাবে মাত্র ৬০ কিলোমিটারে মাছ আহরণ করা যাচ্ছে। এতে করে বিশাল সম্পদ ভাণ্ডারের ৯০ ভাগেরও বেশি অজানাই থাকছে।

বিশ্বজুড়ে সার্বিক চিত্রে দেখা যায়, ব্লু ইকোনমি অস্ট্রেলিয়ার জিডিপিতে ৪৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখছে। এ ছাড়া চীনে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৫০০ বিলিয়ন ইউরো, আয়ারল্যান্ডে ৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ইউরো, মরিশাসে ১০ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫৯ বিলিয়ন ডলার এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১১৪ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন ডলার অবদান রাখছে এই ব্লু ইকোনমি।