• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

চীফ হুইপের মহানুভবতায় লেখাপড়ার নিশ্চয়তা পেল মেধাবী সুমাইয়া

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২০  

শিবচর প্রতিনিধিঃ মাদারীপুর জেলার শিবচরের মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা জিপিএ-৫ পান তিনি। লেখাপড়ায় ভালো ফলাফল অর্জন করলেও ভালো কোন কলেজে ভর্তি হওয়া তার জন্য দুঃস্বপ্ন। আর্থিক অস্বচ্ছলতার পিছুটান আটকে ধরেছে তাদের। কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন যেন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হবার পথে। ফলে ভালো ফলাফল অর্জন করলেও স্বতঃস্ফুর্ত হাসি-আনন্দ ছিল না হতদরিদ্র মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়ার চোখে-মুখে। আনন্দের পরিবর্তে যখন চিন্তার কালো ছায়া নেমে এসেছিল তখনই জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী এমপির পক্ষ থেকে মিষ্টি ও ফুল পাঠানো হয় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়ার বাড়িতে! সে সময় মুঠোফোনে সুমাইয়ার সাথে কথাও বলেন চীফ হুইপ। সুমাইয়ার পরিবারের কাছে এ যেন এক স্বপ্ন!

দারিদ্রতায় লেখাপড়া আটকে থাকে না যদি ভালো ফলাফল অর্জন করা যায়। হতদরিদ্র সুমাইয়ার লেখাপড়ার যাবতীয় দায়িত্ব নেন চীফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী এমপি। একই সাথে তাদের জরাজীর্ণ বসতঘরটির পরিবর্তে একটি আধুনিক সেমিপাকা বাড়ি নির্মান করে দেন তিনি। গত শুক্রবার দুপুরে অদম্য এই মেধাবী শিক্ষার্থীর বাড়িতে আসেন চীফ হুইপ। উপজেলার অন্যান্য কাজের পাশাপাশি তিনি খোঁজখবর নেন মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়ার। একজন দরিদ্র অদম্য মেধাবীর জন্য চীফ হুইপের এমন মানবিক আচরনে বিমুগ্ধ এলাকাবাসি।

জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার মাদবরের চর ইউনিয়নের সাড়ে এগাড়রশি গ্রামে শ্বশুড়ের দেয়া জমিতে ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন সুমাইয়ার বাবা দেলোয়ার হোসেন। পেশায় তিনি দর্জি ছিলেন। গত সাত বছর আগে শ্বাসকষ্টে তার মৃত্যু হলে পরিবারে নেমে আসে হতাশার ছায়া। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর পর সুমাইয়ার মা সালেহা বেগম সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন। চলে সংসার চালানোর সংগ্রাম। একই সাথে তার বড়মেয়ে তাসলিমা স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করে মাকে সহযোগিতা করেন। পরবর্তীতে ২ মেয়েকে অল্প বয়সেই বিয়ে দিতে হয়। মেয়ে-জামাইদের সহযোগিতায় কোনভাবে চলতে থাকে সংসার। ৬ মেয়ের মধ্যে কণিষ্ঠ মেয়ে সুমাইয়া লেখাপড়ায় ভালো হওয়ায় তার বোনেরা সহযোগিতা করতে থাকে। এভাবেই পিইসি ও জেএসসিতেও জিপিএ ৫ ও ট্যালেণ্টপুলে বৃত্তি পায় সুমাইয়া। চলতি বছর এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে শিবচরের পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সে। কলেজে ভর্তি হওয়াসহ উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে নিতে বাসা বাধে দুঃ
চিন্তা। তখন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে নজরে আসে মাদারীপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরীর।

তিনি সুমাইয়ার লেখাপড়ার প্রতিবন্ধকতাগুলো জানেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তাদের জরাজীর্ণ ঘর সংস্কার করে ফ্লোর টাইলস ,দরজাসহ সুপেয় পানির ব্যবস্থার তাৎক্ষনিক নির্দেশনা দেন। এছাড়াও তার নির্দেশনায় জেলা পরিষদ থেকে সেলাই মেশিন, বৃত্তি ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে স্মার্টফোনের ব্যবস্থা করে দেন। সেই বাড়িটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবার গত শুক্রবার চীফ হুইপ সুমাইয়ার বাড়িতে যান। এবং সুমাইয়াকে ভালোভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে নানান পরামর্শ দেন।

মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়ার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  মোঃ সামসুল হক বলেন, হতদরিদ্র অদম্য মেধাবীর পরিবারের প্রতি এমন মানবিক আচরন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক প্রান চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেছে। চীফ হুইপ মহোদয়ের এমন দৃষ্টান্ত সারাদেশের সকল জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দর অনুসরন করা উচিৎ।’

চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই বলেছিলেন সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ গড়তে হবে।  অবকাঠামো উন্নয়নের সাথে সাথে মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে সোনার মানুষ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই আমরা সুমাইয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। সকলকেই এ ধরনের অদম্য মেধাবীদের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।’