• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

সৌন্দর্য ও সম্পদের আধার রাজৈরের বাঘিয়ার বিল

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

ইমতিয়াজ আহমেদ: প্রাকৃতিক এক বিশাল জলাভূমি বাঘিয়ার বিল । প্রাকৃতিক বৈচিত্র ও সৌন্দর্যের এক মন-মুগ্ধকর এই বিশাল জলাভূমি। বর্ষা মৌসুমে পুরো বিলে থৈ থৈ করে স্বচ্ছ জল। আর শুকনো মৌসুমে সুবিশাল বিলের অধিকাংশ স্থানজুড়ে থাকে ফসলের হাতছানি। তবে পুরো শুকিয়ে যায় না এই বিল। শুকনো মৌসুমে চারপাশ শুকিয়ে আসলেও বিলের কেন্দ্রভূমিতে তখনো থাকে অগভীর পানি।
কমপক্ষে ৫ হাজার হেক্টর আয়তনজুড়ে প্রাকৃতিক জলাভূমি এই বাঘিয়ার বিল। মাদারীপুর জেলার রাজৈর এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া এই দুই উপজেলা জুড়ে বাঘিয়ার বিলের সীমানা। বিশাল এই বিলের মৎস সম্পদ আহরণ করে বেঁচে আছে প্রায় ২৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের আধার এই বাঘিয়ার বিল। শীত মৌসুমে অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখোর থাকে পুরো বিলজুড়ে। বর্ষা মৌসুমে ঢেকে যায় শুভ্র শাপলা ফুলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজৈর ও কোটালীপাড়া অধ্যুষিত  প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির উপর অবস্থিত এই বিল এলাকায় এক সময় ছিল না কোন জনবসতি। মাদারীপুর,কোটালিপাড়াসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলার মৎসজীবিরা মৎস আহরনের সময় এই বিল এলাকায় এসে মৎস আহরণ করতো। এই মৎসসহ প্রাণিজ সম্পদ বৃহত্তর ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন সুনামের সাথে বিক্রয় হতো। এবং স্থানীয়ভাবে দেশীয় মাছের চাহিদা মেটাতে সক্ষম ছিল এই বাঘিয়ার বিল।

সপ্তদশ শতকের দিকে বিল বাঘিয়ার এলাকায় জনবসতি শুরু হতে থাকে। বিলের ধাপ মাটি তুলে ভিটে তৈরী করে তার উপর বসতি শুরু হয় । পাশাপাশি বিলের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরন ও আউশ,আমন ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে এলাকার মানুষ। বাঘিয়া বিল অঞ্চলে মূলত মাদারীপুর জেলার রাজৈরের আমগ্রাম, রাজৈর, কদমবাড়ী ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কলাবাড়ী, রাধাগঞ্জ, সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০/২৫ টি গ্রামের অবস্থান এবং প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার লোকের বসবাস ।
দেশীয় প্রজাতির মাছের মধ্যে এই বিলে বর্তমানে দেখা যায় শোল, গজার, টাকী, পুঁটি, খলিসা, পাবদা, বাইম, রয়না, শিং, মাগুর, বোয়াল, চিতল, আইড়, রুই, কাতল, টেংড়া ইত্যাদিসহ বিভিন্ন জাতের দেশীয় মাছ ।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে অপরিকল্পিতভাবে এই বিলের মৎস সম্পদ আহরণ, বিলের আশেপাশের ছোট ছোট নালা ভরাট করে বসত-বাড়ি, স্থাপনা নির্মানসহ নানা কারণে এই বিলের জীব-বৈচিত্র হুমকির মুখে রয়েছে বলে স্থাণীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে। পরিবেশবাদী সংগঠন ও স্থানীয় সচেতন মহলও উদ্বিগ্ন প্রাকৃতিক এই জলাভূমি নিয়ে।