• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

সিঙ্গাপুরে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর বিলিয়ন ডলার!

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২০  

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পাচারকৃত অর্থের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদক।

সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাংকে এসব অর্থ গচ্ছিত রয়েছে। তবে এ অর্থ ফিরিয়ে আনতে তৎপর রয়েছে সরকার।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাংকে রক্ষিত সাকা চৌধুরীর অর্থ ফিরিয়ে আনা আইনি প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ। আইনি প্রক্রিয়ায় পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সময়সাপেক্ষও। তবে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে দুদক কাজ করছে।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিদেশে যদি পাচার হওয়া কোনো টাকা বা সম্পদ থাকে তাহলে সেটি অবশ্যই সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনবে। এ ব্যাপারে সরকার তৎপর রয়েছে।

গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের যাবতীয় তথ্য চেয়ে রুল জারি করেন। সেই প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে নেমে অর্থ পাচারকারীদের তালিকা করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দফতর। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে পাচার করা মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সাবেক বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থের তথ্য পাওয়া গেছে।

মুদ্রাপাচারের পরিসংখ্যান বলছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ২৭ লাখ ডলার পাচার হয়। বর্তমান বাজার দরে যা ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়।

গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউতে 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে অর্থপাচার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, রাজনীতিবিদদের চেয়ে বিদেশে অর্থপাচারে এগিয়ে সরকারি কর্মচারীরা। মন্ত্রী অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, দেশের অনেক সরকারি কর্মচারীর কানাডায় বাড়িঘর রয়েছে। সেখানে তাদের সন্তানরা বসবাস করছে। মন্ত্রীর কাছে এ রকম ২৮টি কেস রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে চারজন রাজনীতিবিদ।

পরদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আসে। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিদেশে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের যাবতীয় তথ্যসহ তালিকা (নাম-ঠিকানা, মামলাসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের তথ্যাদি) তলব করেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ তথ্য দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সাকা চৌধুরী সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ, যা এখন রক্ষিত আছে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর ঢাকায় তৎকালীন কেন্দ্রীয় কারাগারে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।