• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

সাহেদ আ.লীগের উপ-কমিটির সদস্য ছিল বলে জানা নেই : হাছান মাহমুদ

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২০  

প্রতারণার অভিযোগ মাথায় নিয়ে পলাতক রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের আওয়ামী লীগের একটি উপ-কমিটির সদস্য বলে পরিচয় দেয়া প্রসঙ্গে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সে আওয়ামী লীগের কোনো উপ-কমিটির সদস্য ছিল বলে আমার জানা নেই।’

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে রিজেন্টের প্রধান কার্যালয়, উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়। ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। এতে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখা থেকে আটক আটজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ নয়জনকে পলাতক আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যমকে তাদের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সরকারই কিন্তু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপর তার ব্যাপারে পত্রপত্রিকায় যে অনুসন্ধানী রিপোর্ট বেরিয়েছে সেজন্য গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ। এতে প্রমাণিত হয়, সে খুব সুচতুর একজন প্রতারক। এরকম আরও প্রতারক যারা আছে, আমাদের সম্মিলিতভাবে তাদের খুঁজে বের করা প্রয়োজন।’

সাহেদ আওয়ামী লীগের সদস্য কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সে দাবি করছে, সে আওয়ামী লীগের কোনো একটা উপ-কমিটিতে ছিল। কিন্তু আমাদের দলীয় কার্যালয়ে তো আমি প্রতিদিন যাই। সে আওয়ামী লীগের কোনো উপ-কমিটির সদস্য ছিল বলে আমার জানা নেই।’

একই সাথে তার এই হাসপাতালকে কোভিড-১৯ চিকিৎসা দেয়ায় সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিল বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি— বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

বিএনপি নেতাদের সরকারের সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজে এবং তার নেতৃত্বে দলের নেতারাসহ পুরো বিএনপিই এখন হোম আইসোলেশনে। হঠাৎ হঠাৎ টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা ছাড়া বিএনপির আর কোনো কাজ নেই।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্যে মনে হয় সারা দুনিয়ায় সব দেশের ক্ষেত্রেই করোনা মোকাবিলা এমন কঠিন কিছু ছিল না অথচ উন্নত দেশগুলোসহ পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ করোনায় মৃত্যুবরণ করেছে। যারা জনগণের পাশে নেই, জনগণের জন্য কিছু করছেন না, হঠাৎ হঠাৎ টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে এ ধরনের কথা বলা তাদেরই মানায়। দায়িত্বপূর্ণ জায়গা থেকে এ ধরনের কথা বলা সমীচীন নয়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পুরো পৃথিবী আজ করোনাভাইরাসের কারণে অসহায় এবং পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক সমৃদ্ধ হলেও করোনা মোকাবিলায় তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়েছে, সেখানে মৃত্যুর মিছিল ছিল। সেই তুলনায় বাংলাদেশ সীমিত সামর্থে্যর একটি উন্নয়নশীল দেশ। এখানকার শহরগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত সরকার এবং বেসরকারি পর্যায়ের সব হাসপাতাল ও স্বেচ্ছাসেবীসহ সম্মিলিতভাবে করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমরা অনেক উন্নত দেশের তুলনায় সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছি, বিশেষ করে মৃত্যুহার কম রাখার ক্ষেত্রে। আমাদের দেশে মৃত্যুর হার ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও কম এবং ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে অনেক কমতো বটেই।’

‘মানুষের মুখ বন্ধ রাখতে সরকার মামলা করছে’ বলে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর অভিযোগের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘সরকার কারও বিরুদ্ধে মামলা করেনি। সাম্প্রতিক সময়ে যে সব মামলা হয়েছে, সবগুলোই বিভিন্ন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি করেছেন। বিএনপির নেতারা জনগণ এবং সরকার দুটিই গুলিয়ে ফেলছেন। জনগণের কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হন, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তিনি তার সুরক্ষার জন্য যেকোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার রাখেন।’