• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস চান বঙ্গবন্ধু, কমিশনকে তাগাদা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০  

১৯৭২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে গণভবনে শিক্ষা কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, দেশবাসী চায় শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে নতুন বিন্যাস করা হোক। আমিও তাই আশা করি। শিক্ষা কমিশন এদিকে নজর রেখে তাদের মতো করে সমাধান করবে। বঙ্গবন্ধু আরও বলেন, শিক্ষা কমিশন হচ্ছে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত এবং তারা কাজ করবে স্বাধীনভাবেই।


তাদের আলোচনা দুই ঘণ্টারও বেশি স্থায়ী হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বংশধরদের চাহিদা অনুযায়ী বাস্তবানুগ সুপারিশ ত্বরান্বিত করার জন্য শিক্ষা কমিশন সদস্যদের নির্দেশ দেন। শিক্ষা কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি বলেন, শিক্ষা কমিশনের সুপারিশগুলোতে  জনগণের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে।

ড. কুদরত-ই খুদা, শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলী, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কমিশনকে সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক ক্ষেত্রে নেতৃত্ব গ্রহণে উপযোগী করে তরুণ সমাজকে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি আশা করেন, শিক্ষা কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করবে। তবে দেশের শুধু আশু প্রয়োজনীয় নয়, জাতির ভবিষ্যৎ প্রয়োজনীয়তার দিকে তারা লক্ষ রাখবেন।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্য স্থগিতের শঙ্কা

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সীমান্ত বাণিজ্য চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী এম আর সিদ্দিকী ঢাকায় মন্তব্য করেন। রফতানিকারক এবং বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্পপতিদের এক সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বর্তমান সীমান্ত বাণিজ্য চুক্তিটি আলোচনা করে দেখা হবে। উল্লেখযোগ্য যে সম্পূর্ণভাবে চোরাচালান রোধ সংক্রান্ত ব্যাপারে আলোচনার উদ্দেশে একটি ভারতীয় বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ৩ অক্টোবর ঢাকায় আসার কথা। বাণিজ্যমন্ত্রী দুদেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিরাট অসামঞ্জস্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, যেখানে এ পর্যন্ত ভারতে রফতানির পরিমাণ মাত্র এক কোটি টাকা, সেখানে ইতোমধ্যে আমরা ভারত থেকে ৯ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করেছি। তিনি অবশ্য বলেন, এই নয় কোটি টাকার মধ্যে ত্রাণ ও পুনর্বাসন এবং বিনিময় প্রথার অধীনে আমদানিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে নদীভাঙন

১৯৭২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেশের নদীভাঙন কবলিত শহরগুলোকে রক্ষার জন্য সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাংলাদেশের পর্যটন করপোরেশন নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ৩ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী বৈঠকে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠকের পর সরকারি মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ভাঙন ও বন্যায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজগঞ্জ, কুমারখালী, চাঁদপুর শহর রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে। পর্যটন করপোরেশন সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান পর্যটন করপোরেশন ও পর্যটন বিভাগ একত্রিত করে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই করপোরেশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। মন্ত্রিসভা ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার সম্পর্কে কতিপয় সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও গ্রহণ করে।