• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

রোহিঙ্গা সমস্যার পেছনে জিয়াউর রহমানের হাত ছিল: প্রধানমন্ত্রী

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৯  

রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পেছনে জিয়াউর রহমানের হাত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর প্রথমে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পরে রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পেছনে জিয়াউর রহমানের যে হাত ছিল তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অতীতের সরকারগুলো প্রতিবেশী দেশগুলোর সন্ত্রাসীদের এ দেশের মাটি ব্যবহার করে তাদের দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ দিয়েছিল—এমন অভিযোগও প্রধানমন্ত্রী এ সময় তোলেন।

তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর ৭৬-৭৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা ও ৭৮ সাল থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হয়। এটাই হলো বাস্তবতা। তবে, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। ইতোমধ্যে উদ্যোগও নিয়েছি। একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে কোনও সন্ত্রাসীর স্থান হবে না। বাংলাদেশে বা প্রতিবেশী দেশে কেউ বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে না—এটা আমরা নিশ্চিত করেছি। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে অন্য দেশের সমস্যা সৃষ্টি করবে, এই সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। এখানে থেকে অন্য দেশে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা গোলমাল চালানোর সুযোগ দেইনি; দেবো না, অতীতের সরকারগুলো যেটা করেছিলো। এদের আমরা ইতোমধ্যে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই।

সরকারি দলের শহীদুজ্জামান সরকারের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে তাদের সক্রিয় ভূমিকা আশা করছি। কেবল ভারত আর চীন নয়—বাংলাদেশসহ মিয়ানমারের সঙ্গে যে কয়টি দেশের বর্ডার (সীমান্ত) আছে সেসব দেশের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। যেসব দেশের সঙ্গে মিয়ানমারের বর্ডার আছে তার প্রতিটির সঙ্গেই তাদের ছোট ছোট এথনিক গ্রুপের সমস্যা লেগেই আছে। এসব সমস্যা একত্রে সমাধান করা যায়। তার জন্য আলাপ-আলোচনা অব্যাহত আছে। চীনের রাষ্ট্রপতি আমাদের কথা দিয়েছেন এ সমস্যা সমাধানে যথাযথ ভূমিকা রাখবেন। ইতোমধ্যে তারা প্রতিনিধিও পাঠিয়েছেন। তারাও আলোচনা করছেন। চাপ দিচ্ছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। প্রত্যেকের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। বিষয়টির সমাধান দরকার এটা সকলেই অনুধাবন করেন। তবে দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি হলো, মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের বিদ্যমান সম্পর্ক অব্যাহত রেখেই রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে দেশে ফিরতে পারেন সেটা নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমার একসময় আগ্রহ দেখিয়েছে। তালিকাও হয়েছে। যাওয়ার সময়ও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু আমাদের এখানকার রোহিঙ্গারা আন্দোলনের মতো শুরু করলো—তাদের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখা দিলো যে তারা যাবে না। তাদের আরও কিছু ডিমান্ড আছে। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তারা নিরাপত্তা চায়। এখন এটা মিয়ানমারের ওপর নির্ভর করছে, কারণ এরা তাদের নাগরিক। তাদের মাঝে অন্তত একটা বিশ্বাস যদি জাগানো যায়, সেখানে ফিরে গেলে নিরাপদে থাকবে, তাহলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।