• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নমপেন ভূমিকা রাখবে: কম্বোডিয়ার সচিব

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

আসিয়ানের (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা) পটভূমি থেকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা সফররত কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র সচিব ইয়াট সোফেয়া।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-কম্বোডিয়া যৌথ কমিশনের বৈঠকে তিনি এ তথ্য জানান। বৈঠকে নমপেনের পক্ষে নেতৃত্বে ছিলেন সোফেয়া। অন্যদিকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

যৌথ কমিশনের বৈঠকে বাণিজ্য, বেসরকারি বিমান চলাচল, প্রতিরক্ষা, কৃষি, পরিবেশ, মৎস, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত গুরুত্ব পেয়েছে।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, মিয়ানমার আসিয়ানের সদস্য। আবার কম্বোডিয়াও আসিয়ানের সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র। তাই আমরা চাই যে আসিয়ানের প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কম্বোডিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে সামনের দিনগুলোতে আলোচনা বাড়াবে, যেন এই সংকটের সমাধান হয়। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ‘কমন বন্ধু’ হিসেবে কম্বোডিয়া দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সমস্যা হলো রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস দৃঢ় করতে আজকের বৈঠকে প্রস্তাব করেছি, আসিয়ান প্লাটফর্ম থেকে কম্বোডিয়া এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে কি না। কম্বোডিয়া বলেছে,  তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।

কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র সচিব ইয়াট সোফেয়া বলেন, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের রাখাইনে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী কম্বোডিয়ার সহায়তা চেয়েছেন। আমি তাকে আশ্বস্ত করেছি যে আসিয়ানের পটভূমিতে কম্বোডিয়া এই বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। কম্বোডিয়া বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে, যেন দ্রুত এই সংকটের সমাধান হয়।

প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত যৌথ কমিশনের বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আজ প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-নমপেন জয়েন্ট কমিশনের বৈঠক করেছি। দুই বছর পরপর আমরা এই বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বৈঠকগুলোতে দুই দেশের সার্বিক বিষয়গুলো আলোচনা হবে। সে হিসেবে আগামী ২০২২ সালে নমপেনে পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর বাংলাদেশ থেকে ই-ভিসায় (ইলেকট্রনিক বা অনলাইন ভিসা) ৭ হাজার পর্যটক কম্বোডিয়া গিয়েছেন। বাংলাদেশের পর্যটকদের আরও সহজে কম্বোডিয়ার ভিসা পাওয়া বা মানুষে মানুষে আরও বেশি সংযোগ ঘটাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল শুরুর জন্য চলতি বছরেই দুই দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠক করবেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করবে কম্বোডিয়া

এদিকে, যৌথ কমিশনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন ‘মুজিববর্ষ’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাংলাদেশের মতো কম্বোডিয়াও বঙ্গব্ন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করবে।

প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আজকের বৈঠকে দুই দেশ সম্মত হয়েছি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী দুই দেশ একসঙ্গে পালন করব। কম্বোডিয়াও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরেই বাণিজ্য এবং পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল খাত নিয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আগামী তিন বছর নিয়মিতভাবে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ইস্যুতে কম্বোডিয়ার কাছে একটি প্রস্তাবনা দিয়েছি।