• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

রেমিটেন্সের প্রবাহে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২০  

রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। আর এতে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি পুরোপুরি চাঙ্গা না হওয়ায় এই রিজার্ভ খুব বেশি কাজে আসছে না। তবে ডলারের বিপরীতে মূল্যমান ধরে রাখতে সক্ষম হচ্ছে টাকা। আর বিদ্যমান রিজার্ভ দিয়ে অন্তত ৯ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব বলেও মত তাদের।

করোনা মহামারির প্রভাবে গত মার্চ-এপ্রিল-মে এই তিন মাস দেশের অর্থনীতি বেশ চাপে ছিলো। মার্চ-এপ্রিলে গতি কমে প্রবাসী আয়ও। তবে মে থেকেই বাড়তে থাকে রেমিটেন্স প্রবাহ। একের পর এক রেকর্ড ভেঙে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। এর মধ্যে শুধু জুলাই-অক্টোবর সময়ে রেমিটেন্স এসেছে ৮ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিটেস প্রবৃদ্ধি ৪৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।

বর্তমান অর্থবছরের প্রথম চার মাসের রেমিটেন্সের চিত্র : অক্টোবরে ২১১.২৪ কোটি মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২১৫.১০ কোটি মার্কিন ডলার, আগস্টে ১৯৬.৩৯ কোটি মার্কিন ডলার এবং জুলাইয়ে ২৫৯.৮২ কোটি মার্কিন ডলার।

ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, শক্তিশালী রিজার্ভ বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য স্বস্তিকর। বিনিয়োগে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে।

বিকেএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, দেশে ইনভেস্টমেন্ট যদি বাড়ে, কর্মসংস্থান যদি বাড়ে, ইকোনমিক চাকা যখন ঘুড়বে তখনই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। যেটা এই মুহূর্তে আমরা মনে করছি অনেকটা স্থবির হয়ে আছে। আমরা যেটা আশা করছিলাম হয়তো জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটা ভাল পজিশন দাঁড়াবে কিন্তু সেকেন্ড ওয়েভের কারণে সেই পজিশন হুমকির মুখে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রথম প্রান্তিকে আমদানি ব্যয় ছিল ১২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ের তুলানায় ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। আর এসময়ে রপ্তানি আয় ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শক্তিশালী রিজার্ভ থাকলে যে কোন পরিস্থিতিতে শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানি ব্যয় মেটানো সহজ হয়।

অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এ রিজার্ভটা আমাদের ভবিষ্যতে ইমপোর্ট করতে যে অর্থের প্রয়োজন হবে তা পূরণ করতে সক্ষম হবে। তাতে করে জনগণ উপকৃত হবে। কাঁচামাল ইমপোর্ট হলে উৎপাদন বাড়বে, কর্মসংস্থান বাড়বে, দেশের অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়বে। পাশাপাশি রফতানীও বাড়বে।

এদিকে, রেমিটেন্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও আমদানির তুলনায় রপ্তানি বাড়ায় চলতি হিসাবেও বড় উদ্ধৃত্ত তৈরি হয়েছে।

ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য দেশে ডেপটিসেশন হলেই রফতানি কমে যাবে সেটা আমার মনে ঠিক নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যেসব বাজারে আমরা রফতানি করি সেসব দেশের অর্থনীতির অবস্থা জানা।

বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও বাণিজ্য পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে রেমিটেন্স প্রবাহ চিত্র বদলে যেতে পারে। তাই রিজার্ভের অর্থ অপরিকল্পিত ব্যয় না করার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।