• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় সংগীতসহ সংবিধানের ১৬টি অনুচ্ছেদ গৃহীত

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২০  

৩১ অক্টোবর খসড়া সংবিধানের ধারা ওয়ারি আলোচনায় মোট ১৬ টি অনুচ্ছেদ গৃহীত হয়েছে। এই ১৬টি অনুচ্ছেদের মধ্যে মোট ৯টি সংশোধনী প্রস্তাব গৃহীত হয়। সংবিধানের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে একটি সংশোধনী প্রস্তাব যথার্থ হয়নি বলে স্পিকার নাকচ করে দেন। কয়েকটি সংশোধনী কণ্ঠভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। এই ১৬টি অনুচ্ছেদ গ্রহণের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশ  একটি রাষ্ট্রীয় সীমানা, তার ভাষা,তার জাতীয় সংগীতের বিষয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠিত করে।

 

১ নভেম্বরের পত্রিকার খবর

চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাব সম্পর্কে আলোচনা শেষ হওয়ার আগেই পরিষদের অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়। এইদিন ন্যাপের  সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একবার দুই মিনিটের জন্য ওয়াকআউট করেন। আরেকবার মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা প্রায় এক ঘণ্টার জন্য পরিষদ ত্যাগ করেন। পরে তিনি আবারও ফিরে আসেন। সংবিধানে যে কয়টি অনুচ্ছেদ গৃহীত হয়েছে, তাতে মোট ২১টি সংশোধনী ছিল। কিন্তু এর মধ্যে চারটি সংশোধনী অপ্রাসঙ্গিক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে স্পিকার নাকচ করে দেন।

বাংলাদেশ অবজারভার, ১ নভেম্বর ১৯৭২

এই চারটি সংশোধনীর মধ্যে তিনটি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও একটি মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা নামে ছিল। এই দুজন সদস্যের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে প্রত্যাখ্যাত হয় এবং পাঁচটি সংশোধনী প্রস্তাব আনয়নকারী সদস্য পরিষদের থাকলেও পেশ করতে পারেননি। সংবিধানের যে অনুচ্ছেদগুলো পরিষদে গৃহীত হয়েছে সেগুলো হলো— প্রজাতন্ত্র, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা, রাষ্ট্রভাষা, জাতীয় সংগীত, পতাকা, রাজধানী, নাগরিকত্ব, সংবিধানের প্রাধান্য, মূলনীতি, জাতীয় মানবাধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা, মালিকানার নীতি মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা, গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব সম্পর্কিত।

দৈনিক ইত্তেফাক, ১ নভেম্বর ১৯৭২ডিসেম্বর থেকে সংবিধান কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা

সংবিধান গণপরিষদে যথারীতি গৃহীত হওয়ার পর আগামী ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ৩১ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রে এ তথ্য জানা যায় বলে ইত্তেফাকের ১ নভেম্বরের পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। উল্লেখ্য যে, সংবিধান কার্যকরী হওয়ার দিনটি গত বছরের একই দিনে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের পরিসমাপ্তি ও চূড়ান্ত বিজয় দিবসের সঙ্গে মিলে গেছে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ঘোষণা করেছে সরকার। সেদিন সারাদেশে বিপুল উৎসাহ নিয়ে দিবসটি পালিত হবে।

বাংলাদেশ অবজারভার, ১ নভেম্বর ১৯৭২ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের আবারও যুদ্ধ প্রস্তুতি!

পাকিস্তান পুনরায় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে আসতে থাকে। এনাকে উদ্ধৃত করে ইত্তেফাকে প্রকাশিত সংবাদ বলছে, লন্ডনে প্রাপ্ত সংবাদে প্রকাশ করাচিতে  ইমারতের ওপর বিমানবিধ্বংসী কামান স্থাপন করা হয়েছে এবং শহরে গাড়ির আলো নিস্প্রভ করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সামরিক পাহারা মোতায়েন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সেন্ট লুই পোস্টের প্রতিনিধিকে জানান যে,  ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা পাকিস্তানের সবসময়ই রয়েছে এবং এই সংবাদ পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ প্রস্তুতি সংবাদও প্রকাশিত হয়ে যায়।

দৈনিক বাংলা, ১ নভেম্বর ১৯৭২চোরাচালানের বিরুদ্ধে  ঢাকার বাইরে অভিযান

চোরাচালান ও মজুতদারি ঠেকাতে রেশন ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্যের দোকানসহ নানা উদ্যোগ নিলেও কোনোটিই কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছিল না। ঢাকায় টানা অভিযানের পর ৩১ অক্টোবর মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে ১০ লাখ টাকার ভেজাল ও চোরাই মাল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ মৌলভীবাজারে আকস্মিক অভিযানে প্রায় ৬ ঘন্টা তল্লাশি চালিয়ে ১০ লাখ টাকার মজুত ভেজাল ও চোরাই মালামাল উদ্ধার করে। তল্লাশিকালে ১১ ব্যক্তিকে মজুতকরণ, ভেজাল মিশ্রণ ও কালোবাজারি ও চোরাচালানের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ মজুত ভেজাল ও চোরাই মালামাল রয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ করা হচ্ছিল। এক প্রকার অসাধু ব্যবসায়ী দুর্নীতিপরায়ন প্রশাসকের সহযোগিতায় এই ঐতিহ্যবাহী বিপনন কেন্দ্রগুলোকে মজুতখানা বানিয়ে কালোবাজারি ও চোরা কারবারের আখড়ায় পরিণত করেছে বলে বিভিন্ন মহল অভিযোগ করেন।