• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

যৌন হয়রানির অভিযোগে কলেজশিক্ষক বরখাস্ত

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২০  

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে লালমনিরহাট শহীদ আবুল কাসেম মহাবিদ্যালয়ে এ বি এম ফারুক সিদ্দিকী (৪৮) নামে এক কলেজশিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্নিগ্ধা চক্রবর্তী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে সোমবার (২০ জানুয়ারি) সাময়িক বরখাস্তের চিঠি ওই শিক্ষকসহ শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়। 

সাময়িক বরখাস্তের আদেশপ্রাপ্ত শিক্ষক ফারুক লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে। তিনি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক।

কলেজ অফিস সূত্রে জানা গেছে, শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক ফারুক প্রতিষ্ঠানের বেশকিছু শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানি করেন। কলেজের সুন্দরি ছাত্রীদের বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে ফেলে যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করেন। শিক্ষক ফারুকের নারী লোভী আচরণের কারণে প্রতিষ্ঠানে ছাত্রী ভর্তি কমে যায়। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন না। বিয়ের পরেও কলেজছাত্রীদের স্বামীর বাড়ি থেকে তুলে এনে আটকে রাখা এবং ধর্ষণের অভিযোগে ২০১০ সালে ছয় মাস কারাবাস করেন ওই শিক্ষক। 

যৌন হয়রানির শিকার চার ছাত্রীর বিভিন্ন সময় দায়ের করা অভিযোগগুলো তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। কিন্তু তিনি তার সদুত্তর দেননি। 

ফারুকের নারী লোভী আচরণের প্রতিবাদ করায় তার স্ত্রীকে মারধর করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তার স্ত্রী কাওছারা বেগম স্বামীর বিরুদ্ধে গত সোমবার আদালতে মামলা দায়ের করেন।  

সম্প্রতি কলেজে যোগদান করা চারজন শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করেন ফারুক। যা পরে প্রতীয়মান হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, উত্ত্যক্তসমহ ৯টি অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়ে শিক্ষক ফারুককে গত ১১ জানুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। যথা সময়ে তার সদুত্তর না দেওয়ায় তাকে সোমবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

অভিযুক্ত ফারুকের স্ত্রী কাওছারা বলেন, নারী লোভী ফারুককে অপকর্ম থেকে সরে আসার জন্য বলা হলেও তিনি আচরণ পরিবর্তন করেননি। এর প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করেছেন। যার বিচার চেয়ে আমি আদালতে মামলা করেছি।

অভিযুক্ত ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলছেন। যা আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে। 

শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্নিগ্ধা চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নারী কেলেঙ্কারিসহ নয়টি গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষক ফারুককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।