• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

মাদারীপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম গ্রেপ্তার

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০১৯  

মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মেহেদী হাসান মোল্লা (৪০) নামের মসজিদের এক ইমামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ওই ইমামকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে এলাকাবাসী।

রাতে সদর মডেল থানায় ওই ইমামকে অভিযুক্ত একটি ধর্ষণের মামলা হলে বুধবার সকালে তাকে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। 

পুলিশ ও মামলার সূত্র জানায়, বাগেরহাট জেলার রায়েন্দা থানার রাজাপুর গ্রামের আ. জব্বার মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান মোল্লা প্রায় ১২ বছর ধরে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের একটি এলাকার মসজিদে ইমাম হিসেবে চাকরি করতেন। ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীটি ওই ইনিয়নের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। স্কুলে যাওয়ার আগে প্রতিদিন সকালে এলাকার অন্য শিশুদের সঙ্গে সে গ্রামের মসজিদে ইমামের কাছে আরবি পড়তে যেতো। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১২ অক্টোবর সকালে অন্য শিশুদের সঙ্গে মেয়েটিও আরবি পড়তে যায়। পড়াশেষে সবাইকে ছুটি দিলেও ওই মেয়েটিকে ইমামের কক্ষ ঝাড়– দেওয়ার কথা বলে ইমাম তার কক্ষের দিকে নিয়ে যায়। পরে কক্ষের দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে এবং কাউকে কিছু বললে হত্যার হুমকি দেয় ইমাম মেহেদী হাসান। এরপর গত ১৫ অক্টোবর একই ভাবে তাকে আবার ধর্ষন করে।

এরপর গত মঙ্গলবার দুপুরে মেয়েটি তার স্কুলে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে শিক্ষকেরা তার পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা স্কুলে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্বার করে বাড়ি নিয়ে আসে। বাড়িতে এসে মেয়েটি তার পরিবারের স্বজনদের কাছে সব কিছু খুলে বলে। এ ঘটনার কথা এলাকার লোকজন জানতে মঙ্গলবার বিকেলে অভিযুক্ত ইমামকে কৌশলে আটক করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ওই ইমামকে থানায় নিয়ে যায়। এরপর মঙ্গলবার রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেন। ওই স্কুলছাত্রী বর্তমানে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরমও) শশাংক চন্দ্র ঘোষ বলেন, একটি মেয়ে রাতে ধর্ষণের অভিযোগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা তার আলামত সংগ্রহ করেছি। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

এ ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, আমি বিশ্বাস করে ওই ইমামের কাছে আমার মেয়েকে পড়তে দিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমার মান সম্মান সব নষ্ট করে দিলো। মেয়েটা এখনো ছোট, ওর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রথমে কাউকে কিছু জানাইনি। কিন্তু ওই ইমামের বিচার না হলে আমার মেয়ের মতো আরো মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হতো। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছে। মামলার আসামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য আমরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছি। রির্পোট হাতে পেলে বোঝা যাবে ঘটনা কী ছিল।’