• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

মাদারীপুরে মৌচাকবাড়ি...

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

মাদারীপুর প্রতিনিধি: একটি বাড়ির ভবনে ও ভবনের পাশের গাছের ডালে মৌমাছিরা অর্ধশতাধিক চাক বেঁধেছে। বাড়িতে এত মৌচাকের কারণে সবাই এক নামে ‘মৌচাকবাড়ি’ বলে চেনে। এভাবে গত দশ বছর ধরে মাদারীপুরের দক্ষিণ খাকছাড়া গ্রামের কবির মল্লিকের বাড়ীতে মৌমাছি প্রায় ছয় মাস বাসা বেঁধে থাকে। দৃষ্টি নন্দন এই দৃশ্য দেখার জন্যে দূর-দুরান্ত থেকে আসেন দশনার্থী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেল, মাদারীপুর জেলা শহরের দক্ষিণ খাকছাড়া গ্রামের কবির মল্লিকের দু’তলা ভবন। এই ভবনের চারদিকের কার্জিন, বারান্দার দেয়াল, দরজার উপরের অংশ কোন জায়গা ফাঁকা নেই, সবখানেই ঝুঁলছে মৌচাক। ভবনের পাশে গাছের ঢালে ঢালেও ঝুঁলছে মৌমাছির বাসা। দূর থেকে বাড়িটি দেখলে মনে হয় যেন মৌমাছির বাড়ি। এভাবে প্রায় অর্ধশত মৌচাক বাসা বেঁধে থাকে সেপ্টেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত।
এব্যাপারে বাড়ির মালিকের ছেলে সাজ্জাত মল্লিকসহ কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, এ বাড়ীতে সব সময় মৌচাক থাকায় বিভিন্ন দূর দূরান্ত থেকে দর্শনাথীরা এসে সারি সারি মৌচাক দেখার জন্য। যখন মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয় তখন খাটি মধু আমরা খেতে পারি। আমাদের এলাকাবাসীর জন্য এ বাড়ীটা একটা দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয়েছে।
মৌচাক দেখতে আসা কয়েকজন দশনার্থী বলেন, প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এই প্রাণীকে নির্বিঘেœ থাকার সুযোগ করে দিতে হবে। বাড়ীর চারিদিকে মৌচাকগুলোকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে।
মৌচাকবাড়ীর মালিক কবির মল্লিক বলেন, বিগত ১০ বছর ধরে এভাবেই মৌচাক বসে আমার বিল্ডিংয়ের দেয়াল ঘেষে। দৃষ্টি নন্দন এই দৃশ্য দেখার জন্যে প্রতিদিন মানুষ ভীড় করে বাড়ীতে। সারা বছর মৌচাক থাকলেও সরিষা চাষের মৌসুমে চাকের পরিমাণ বেড়ে যায়। মৌমাছি আমাদের বাড়ীর কাউকে কোন ক্ষতি করে না। মৌচাকের ফলে আমরা বারো মাসই নিজেরা মধু খেতে পারি এবং প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজনকেও দিতে পারি।  
মাদারীপুর ফ্রেন্ডস অব নেচারের নির্বাহী পরিচালক রাজন মাহমুদ বলেন, যত্রতত্র ইটভাটার কারণে মৌমাছি আর মৌচাক কমে যাচ্ছে। তাই অনুমোদনবিহীন ইটভাটা বন্ধের দাবী জানাই। ২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বে প্রায় বাড়ীতেই মৌচাকের বাসা দেখা যেত। পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার কারনে এখন আর তেমন মৌচাকের বাসা চোখে পড়ে না। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারলে মৌচাকের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।’ দিন দিন অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে প্রকৃতি থেকে মৌমাছি আর মৌচাক কমে যাচ্ছে। তাই মল্লিকবাড়ীর এই দৃশ্যটি সবার নজর কেড়েছে।