• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

মাদারীপুরে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২০  


মাস তিনে আগেও জায়গাটিতে পুরোনো ভাঙ্গাচুরা মোটরসাইকেল, কাঠের টুকরা, সুরকি, বালু ও সিমেন্ট পড়ে ছিল। মানুষ দাঁড়াত না। আর এখন সেখানে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান। ফুঁটেছে বাহারি ফুল। থানার বাহিরে ও ভিতরে বাগানের সৌন্দর্যবন্ধন মুগ্ধ করেছে দর্শনার্থীদের।
এই দৃশ্য মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভিতরে ও বাহিরে। থানার পরিত্যক্ত জায়গাগুলোতে গড়ে উঠেছে দেশি-বিদেশী ফুলের বাগান। রঙ-রূপের বৈচিত্র্যে রঙিন হয়ে উঠেছে থানার পরিবেশ। এছাড়াও থানায় ভিতরে প্রবেশ করতে নতুন ফটক, নিচু স্থানে বালু দিয়ে ভরাট, রাতে থানার বাহিরের পরিবেশকে আলোকিত করতে এলইডি লাইট, পুরানো মোটরসাইকের জন্য শেড নির্মান, দর্শনার্থীদের বসার জন্য নতুন করে ঘর সংস্কারসহ বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নেয়ার কারণে বদলে গিয়েছে থানা পূর্বের দৃশ্য।
বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, থানার ভিতরে তৈরি করা বাগানটির পাশে দাঁড়িয়ে রোদ পোহাচ্ছে তিন-চারজন পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে এক পুলিশ ফুলের ছবি ও সেলফি তুলছেন। আর আশেপাশে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন থানার বিভিন্ন কাজে আসা আট-দশজন বহিরাগত। এর মধ্যে কথা হয় থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করতে আসা কলেজরোড এলাকার বাসিন্দা অর্নিবান মজুমদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘থানার পরিবেশ অনেক পাল্টে গেছে। এখনে ফুঁটে থাকা বড় বড় গাঁদা ফুলগুলো দেখতে অনেক ভাল লাগছে। মনে হয় ফুলগুলো চেয়ে রয়েছে আমাদের দিকে।’
থানার হাজতখানায় এক আসামির সঙ্গে দেখা করতে আসা সরোয়ার নামে এক প্রবীন ব্যক্তি বলেন, ‘থানা তো ভাল জায়গা না! এখানে চোর পুলিশের খেলা। কিন্তু থানায় এত সুন্দর ফুলের বাগান হতে পারে তা কল্পনাই করি নাই। চারিপাশে বাহারি এসব ফুলগাছে ফুল ধরায় থানার পরিবেশটা অন্য রকম লাগছে।’
থানার মূল ফটকে থাকা কনস্টেবল সোহেল বলেন, ‘থানায় ফুলের বাগান দেখে মাঝেমধ্যে অনেকে বাহিরে থেকেও সাহস করে ভিতরে ঢুকে পড়ে ফুলের ছবি তুলতে। অনেকে আবার থানার কাছে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফুলের গাছগুলো দেখে চলে যায়।’
সদর থানা সূত্র জানায়, গত বছরের ১৭ জুন সদর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন সওগাতুল আলম। তিনি যোগদানের দুই মাসের মাথায় থানাকে বদলে দিতে কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হাতে নেয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে থানায় ফুলের বাগান। গত বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাগান তৈরির কাজ শুরু হয়। টবযুক্ত ফুলগাছসহ বাগান করে লাগানো হয় প্রায় ১২শর মতো ফুলগাছ। গাঁদা, ডালিয়া, সালভিয়া, ডায়ানথাসসহ সাত-আট প্রজাতির ফুলগাছ। এর মধ্যে গাঁদা আছে দুই ধরণের- থাইল্যান্ডের গাঁদা, চায়নিজ গাঁদা। এছাড়াও দেশি সাদা, কমলা ও লালচে বর্ণের গাঁদা ফুলের গাছ রয়েছে। থানার বাহিরে বাগানবিলাস, ঝাউগাছসহ কয়েক প্রজাতির গাছ।
জানতে চাইলে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘থানার ভিতরে গোল স্থানটিতে বাগান তৈরি করতে বিভিন্ন প্রজাতির গাঁদা ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। আর বাহিরে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির টবযুক্ত ফুলগাছ। আস্তে আস্তে ফুলের সংখ্যা আরো বাড়বে। বাগান আরো বড় করা হবে। সব গাছে এখনো ফুল ফোঁটেনি, সব ফুল ফোঁটলে আরো ভাল লাগবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেক সময় ফুলের দিকে তাকালে মানুষের চিন্তাচেতনার পরিবর্তন ঘটে। দেখতেও ভাল লাগে। আর থানার পরিবেশও সুন্দর থাকে।’
ব্যক্তিগত এমন উদ্যোগের বিষয় জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘থানায় ওসি হিসেবে প্রথম কর্মস্থল এই থানা হওয়ায় চেয়েছি থানার পূর্বের পরিবেশ বদলে দিতে। পরিকল্পনা ছিল থানার ভিতরে ও বাহিরের পরিবেশটা সুন্দর করার। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফুলের বাগান করেছি। এছাড়াও থানায় সেবার মানকে উন্নত করতে স্যালুটিং ডায়েস নির্মাণ, এলইডি লাইট স্থাপন, গোলাঘর সংস্কার, অবকাঠামো উন্নয়নসহ আরো কিছু কাজ সম্পূর্ণ করেছি।’
জানতে চাইলে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান বলেন, ‘সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তার একান্তই ইচ্ছের কারণে থানা প্রঙ্গনে ফুলের বাগান হয়েছে। এ কৃতিত্ব একান্ত তার। আমরা শুধু তার ইচ্ছেকে অনুপ্রাণিত করেছি। আমিও চাই সদর থানার মত প্রতিটি থানায় এমন বাগান তৈরি করা হোক।’