• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউতে জিএসপি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পাশে আছি: প্রধানমন্ত্রী জনসমর্থন থাকায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব রোহিঙ্গাদের জন্য বৃহত্তর তহবিল সংগ্রহে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান লেখাপড়ার নামে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি না করার আহ্বান বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বিশ্বে অনেক বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে: প্রধানমন্ত্রী ট্রাস্ট করে ভাষা সংরক্ষণ-উন্নয়নের উদ্যোগ, হচ্ছে আইন ‘কিডনি রোগীদের চিকিৎসায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার’ ইফতার পার্টি না করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

মাদকপাচার রোধে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২১  

করোনা সংক্রমণের সময় দেশে এসে আটকে পড়া ও চাকরিচ্যুত প্রবাসীদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২০ জানুয়ারি) সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারির প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপিত হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী করোনাকালে তার সরকারের যাবতীয় উদ্যোগ তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে বাংলাদেশে এসে আটকে পড়া ও চাকরিচ্যুত প্রবাসীদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। প্রবাসী অধ্যুষিত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে করোনাকালে চাকুরিচ্যুত প্রবাসীদের সার্বিক কল্যাণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফোনে যোগাযোগসহ পত্র প্রেরণ করা হয়। এতে তিনটি বিষয় গুরুত্ব দেয়া হয়। চাকরিচ্যুত প্রবাসী কর্মীদের ন্যূনতম খাদ্য ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ, চাকুরিচ্যুতদের যাবতীয় দেনা পাওনা পরিশোধসহ ছয় মাসের বেতনভাতা দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো এবং বিদেশে কর্মসংস্থান ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য ওই দেশগুলোতে কোভিড-১৯ রিকভারি অ্যান্ড রেসপন্ড ফান্ড গঠনের সুপারিশ করা হয়।

জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের রওশন আরা মান্নানের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনোমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের ওয়াল্ড ইকোনোমিক লিগ টেবিল ২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন যে ধরনের অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি। এই রিপোর্টে মূলত সামনের বছর এবং আগামী ১৫ বছরে বিশ্বের কোন দেশের অর্থনীতি কী হারে বাড়বে তারই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অন্য অনেক দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলেও বাংলাদেশ তা অনেকটাই এড়াতে পেরেছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫.২৪ শতাংশ হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.১৫ শতাংশ, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।

তিনি জানান, খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ দশম। বাংলাদেশ আজ চালে উদ্বৃত্ত দেশ। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। বাংলাদেশ সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে সপ্তম, আম উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, চাষের মাছ উৎপাদনে পঞ্চম, ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আছলাম হোসেন সওদাগরের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য সাভারের বারইগ্রাম ও দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর মৌজার ১২ দশমিক ০১ একর জমি দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। এখানে প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদদের জন্য স্টেডিয়ামসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক মানের প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৪৯৯ কোটি ৯৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে ডিপিপি অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আহসানুল হকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নজিরবিহীন বিরূপ প্রভাব ফেলেছে যা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। তবে শুরু থেকেই আমাদের সরকার সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে, যার ফলে এ পর্যন্ত কোভিড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, মৃত্যুর হার এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে অধিকতর সাফল্য দেখাতে পেরেছে।

জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, ডেল্টা প্লানের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৮০টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য মোট খরচ হবে দুই হাজার ৯৭৮ বিলিয়ন টাকা। ডেল্টা ফান্ডের কাঠামো ও ফান্ড পরিচালনার নীতিমালা প্রণয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।মাদকপাচাররোধে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কক্সবাজার রিজিয়নের মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরোটরারেন্স ঘোষণা করেছেন। দেশকে মাদকমুক্ত করতে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে কঠোর থেকে আরও কঠোরতম হতে হবে। শুধু মাদক নয়, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

বিজিবির রিজিউন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সাজেদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে ৫৩৫ কোটি ৪ লাখ ৮১ হাজার ৬১২ টাকার মাদক ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৫ পিস ইয়াবা, ৫ হাজার ৭৯৯ বোতল মদ, ৩৩ হাজার ৫৫৫ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৭৩৬ লিটার চোলাই মদ, ১৫.৭৩২ কেজি গাঁজা, ১৮ হাজার ৭৫০ পিস সিডিল ট্যাবলেট ও ৫ হাজার পিস ট্যাবলেট রয়েছে। এর মধ্যে, মালিকসহ উদ্ধার করা হয়েছে ৯১ লাখ ৬১ হাজার ৬০৭ পিস ইয়াবা, ৩ হাজার ৮৭৩ ক্যান বিয়ার, ১১৯ বোতল মদ, ৪২৭.৬ লিটার বাংলা মদ, এক কেজি গাঁজা, ৩৮১ বোতল ফেনসিডিল। এছাড়া মালিকবিহীন উদ্ধার করা হয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ ১১ ১৩৬ পিস, ৩৭ হাজার ৬৫৮ ক্যান বিয়ার, ৫ হাজার ৩৫ বোতল মদ, ২০০৫.৫ লিটার বাংলা মদ, ২৯.৭০৫ গ্রাম গাঁজা ও ১ হাজার ৫২৪ বোতল ফেনসিডিল।