• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

পোশাক রপ্তানিতে সুবাতাস বইছে

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০১৯  

২০১৮-১৯ অর্থবছরে তৈরি পোশাকের প্রচলিত বাজার ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে উদীয়মান নতুন বাজারে রপ্তানির সুবাতাস বইছে। এসব দেশে ইউরোপ ও আমেরিকার চাইতে অপেক্ষাকৃত বেশি হারে রপ্তানি হয়েছে। 

গত অর্থবছরে নতুন বাজারে ৫৬৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে বলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে  এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৬৭ কোটি ডলারের। সে হিসাবে, নতুন বাজারে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ বা ১০২ কোটি বা সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ।  খাত সংশ্লিষ্টরা এসব বিবেচনায় নতুন বাজারে রপ্তানি আশাব্যঞ্জক বলে মনে করছেন। বিশেষত নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়াতে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা এবং কিছু বাজারে  শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা রপ্তানি বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে বলে মনে করছেন তারা। 

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রায় এক যুগ আগে নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়াতে সরকার নগদ সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার পর এসব বাজারে রপ্তানি বাড়ছে। ইতোমধ্যেই কোনো কোনো বাজারে রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলারও ছাড়িয়েছে। কিছু বাজারে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানান তিনি।   

মূলত ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাকে কেন্দ্র করেই দেশের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি শিল্প গড়ে উঠেছে। এ দুটি বাজারেই রপ্তানির ৮২ শতাংশ যায়। তবে এসব বাজারে কোনো কারণে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্যই সরকার এ দুটি বাজারের বাইরে নতুন ও অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়। আর চিন্তা ভাবনা থেকেই সরকার এসব বাজারে রপ্তানির ওপর নগদ সহায়তা দিতে শুরু করে। আর বর্তমানে রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন বাজারে ৪ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। এই সুবিধার ফলে নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়তে শুরু করেছে। কয়েক বছর আগেও নতুন বাজারে মোট গার্মেন্টস পণ্যের ১০ শতাংশ রপ্তানি হলেও সর্বশেষ অর্থবছরে তা প্রায় ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। 

বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে নতুন বাজারের তালিকায় রয়েছে চীন, জাপান, ভারত,দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চিলি, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্কসহ আরও কয়েকটি দেশ। এর মধ্যে জাপানে সবচেয়ে বেশি গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরে দেশটিতে ২৯ শতাংশ বেড়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১০৯ কোটি  ডলারের। আর ভারতে ৭৯ শতাংশ হারে রপ্তানি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। আর চীনে ৫১ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ২৯ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ৭২ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি সাড়ে ১৩ শতাংশ; ভারতে ৫০ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ২৯ শতাংশ; কোরিয়ায় ২৮ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ৪৫  শতাংশ; ব্রাজিলে ১৬ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তবে শুধু তুরস্কে রপ্তানি না বেড়ে ২৭ শতাংশ কমে গেছে। 

এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জের এমবি নিট ফ্যাশন্সের মালিক পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সরকারের নগদ সুবিধা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকায় কয়েকটি বাজারে রপ্তানি বাড়ছে। তবে জাপান চায়না প্লাস নীতি গ্রহণ করার পর আমাদের সম্ভাবনা সবচেয়ে ভালো থাকলেও সেখানে রপ্তানি প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি। বরং এই সুবিধা ভোগ করছে ভিয়েতনাম। আর ব্রাজিলে ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায়  সেখানে রপ্তানি কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না। কেননা তুরস্কের সরকার মাত্রাতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। ফলে সেখানেও রপ্তানি কমছে। 

খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসব দেশে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা পেতে দ্বিপাক্ষিক ভিত্তিতে কিংবা পণ্যভিত্তিক সুবিধা আদায়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতে পারে। এজন্য পূর্ব প্রস্তুতি দরকার। পাশাপাশি কিছু কিছু দেশের নন কটন পণ্যে (পলিয়েস্টার, সিনথেটিক ফাইবার, নন ফাইবার) আগ্রহ রয়েছে। এসব পণ্যেও বিদেশি বিনিয়োগ আনার  উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।