• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

পাইলসের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০১৯  

পাইলসের কষ্টে অনেকেই ভুগে থাকেন। অনেক ওষুধ খেয়েও এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয় না। পাইলস বা অর্শ হলো মলদ্বারে এক ধরনের রোগ যেখানে রক্তনালীগুলো বড় হয়ে গিয়ে ভাসকুলার কুশন তৈরি করে।

শিশুসহ যেকোনো বয়সের লোকই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। চলুন জেনে নেয়া যাক অর্শ বা পাইলস এর কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে-  

অর্শ বা পাইলস হওয়ার কারণসমূহ
অর্শের সঠিক কারণ জানা না গেলেও নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্শ হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।

১. দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া

২. শাকসবজি ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার এবং পানি কম খাওয়া

৩. শরীরের অতিরিক্ত ওজন

৪. গর্ভাবস্থা

৫. লিভার সিরোসিস

৬. মল ত্যাগে বেশি চাপ দেয়া

৭. অতিরিক্ত মাত্রায় লেকজেটিভ (মল নরমকারক ওষুধ)ব্যবহার করা  বা এনেমা (শক্ত মল বের করার জন্য বিশেষ তরল মিশ্রণ ব্যবহার করা) গ্রহণ করা

৮. টয়লেটে বেশি সময় ব্যয় করা

৯. বৃদ্ধ বয়স

১০. পরিবারে কারো পাইলস থাকা

১১. ভার উত্তোলন, দীর্ঘ সময় বসে থাকা ইত্যাদি।

অর্শ বা পাইলস এর লক্ষণসমূহ
> মলদ্বারের অভ্যন্তরে হলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে-

১. পায়খানার সময় ব্যথাহীন রক্তপাত হওয়া

২. মলদ্বারের ফোলা বাইরে বের হয়ে আসতে পারে, নাও পারে। যদি বের হয় তবে তা নিজেই ভেতরে চলে যায় অথবা হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া যায়। কখনো কখনো এমনো হতে পারে যে, বাইরে বের হওয়ার পর তা আর ভেতরে প্রবেশ করানো যায় না বা ভেতরে প্রবেশ করানো গেলেও তা আবার বের হয়ে আসে।

৩. মলদ্বারে জ্বালাপোড়া, যন্ত্রণা বা চুলকানি হওয়া।

৪. কোনো কোনো ক্ষেত্রে মলদ্বারে ব্যথাও হতে পারে।

> মলদ্বারের বাইরে হলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে-

১. মলদ্বারের বাইরে ফুলে যাওয়া যা হাত দিয়ে স্পর্শ ও অনুভব করা যায়।

২. কখনো কখনো রক্তপাত বা মলদ্বারে ব্যথাও হতে পারে।

অর্শ বা পাইলস রোগে করণীয়
১. কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং নিয়মিত মলত্যাগ করা।

২. পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া এবং প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা।

৩. সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম না করা।

৪. প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো।

৫. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা।

৬. টয়লেটে অধিক সময় ব্যয় না করা।

৭. সহজে হজম হয় এমন খাবার গ্রহণ করা।

৮. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া লেকজেটিভ বেশি গ্রহণ না করা।

৯. মল ত্যাগে বেশি চাপ না দেয়া।

১০. দীর্ঘমেয়াদী ডায়রিয়া থাকলে তার চিকিৎসা নেয়া।

অর্শ বা পাইলস রোগে গ্রহণীয় কিছু খাবার
শাকসবজি, ফলমূল, সব ধরণের ডাল, সালাদ, দধি, পনির, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লেবু ও এ জাতীয় টক ফল, পাকা পেপে, বেল, আপেল, কমলা, খেজুর, ডিম, মাছ, মুরগীর মাংস, ভূসিযুক্ত (ঢেঁকি ছাঁটা) চাল ও আটা ইত্যাদি।

অর্শ বা পাইলস রোগে বর্জনীয় কিছু খাবার
খোসাহীন শস্য, গরু, খাসি ও অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার, মসৃণ চাল, কলে ছাঁটা আটা, ময়দা, চা, কফি, চীজ, মাখন, চকোলেট, আইসক্রীম, কোমল পানীয়, সব ধরণের ভাজা খাবার যেমন- পরোটা, লুচি, চিপস ইত্যাদি।