• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

পদ্মাসেতু সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকেন্দ্র

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২০  

শিবচর প্রতিনিধিঃ পদ্মাসেতুকে ঘিরে পদ্মার চরাঞ্চলে গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকেন্দ্র। পর্যটনের এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেনা স্থানীয়রা। পদ্মাসেতুকে ঘিরে ইতোমধ্যেই শিবচরের কাঁঠালবাড়ী, মাদবরেরচর, চরজানাজাত, পাঁচ্চর ইউনিয়নের নদীকেন্দ্রিক স্থানগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই এলাকার সেতু, মহাসড়ক, চরাঞ্চল, নদীর পার, পদ্মাসেতুর জাজিরা পয়েন্টের আশেপাশে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ আসে দেখতে; সময় কাটাতে। গত পাঁচ/সাত বছর ধরে দূর-দূরান্ত থেকে পদ্মাসেতু দেখতে আসা মানুষের পদচারণা দেখা যাচ্ছে পদ্মাসেতু সংলগ্ন এলাকা ও চরাঞ্চলে।

পদ্মার বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানো সেতুর অবকাঠামো, বিস্তৃত ধুধু চরভূমি বা ফসলের ক্ষেত, নদী শাসন বাঁধে ঘণ্টার পর ঘন্টা বসে থেকে নদীর স্নিগ্ধ বাতাসের ছোঁয়া আর পদ্মার স্বচ্ছ জলে নৌকায় ঘুরে বেড়ানো’, এই বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। আর এর থেকেই পর্যটনের সম্ভাবনা দেখছেন এলাকাবাসী।

উপজেলার কাওড়াকান্দি ঘাট এলাকার বাসিন্দা আব্দুস শুক্কুর মিয়া জানান,‘পদ্মাসেতুর কাজ শুরু করার পর যখন কাওড়াকান্দি ঘাটটি সরিয়ে কাঁঠালবাড়ীতে নেয়া হলো, তখন এই এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ভেবেছিলাম আমাদের ব্যবসায়-বাণিজ্যও বুঝি শেষ! কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে নতুন কিছু সম্ভাবনা রয়েছে এখানে। এই এলাকা থেকে ঘাট সরিয়ে নেয়ার পর থেকে অনেকটাই কোলাহল কমে গেছে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন বিকেলে সাধারণ মানুষে আসে ঘুরতে। পদ্মার পাড় ধরে কেউ হাটে, কেউ নদীর পাড়ে বসে থাকে আবার কেউ কেউ নৌকায় করেও নদীতে ঘুরে বেড়ায়। নানা বয়সী মানুষের এই পদচারনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পসারও বেড়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই ভাসমান মুখরোচক খাবারের দোকান বেড়েছে। বেড়েছে রেস্টুরেন্টও।’

তিনি আরো বলেন,‘নদীর পাড়ের নদীশাসন বাঁধে প্রতিদিন বিকেলে মানুষের ভীড় লেগে থাকে। বিকেল থেকে রাত প্রায় ৮ টা পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা থাকে এখানে। বিকেলের সময়ই বেশি লোকজন আসে ঘুরতে।’

স্থানীয় শিক্ষক মিয়াউল আলম চৌধুরী বলেন,‘বর্তমানে পদ্মার পাড় কেন্দ্রিক ঘুরতে আসা লোকজনের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আসলে আশেপাশে কোথাও তেমন কোন দর্শনীয় স্থান না থাকায় এই অঞ্চলের মানুষ পদ্মার পাড়ে আসে। নদীর পাড় ধরে হাটে, চর এলাকায় গিয়ে পদ্মার পানিতে পা ভেজায়। এই দিকটি বেশ ভালো। মূলত পদ্মাসেতুকে ঘিরেই মানুষের মধ্যে এই চঞ্চলতা দেখা দিয়েছে। পদ্মার চর এলাকা পর্যটনকেন্দ্রের জন্য বেশ আদর্শ বলেই মনে হয়। পদ্মাসেতুকে ঘিরে এই এলাকায় গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকেন্দ্রও।’

স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান,‘পদ্মার পাড়ে ঘুরতে আসা লোকজনের সংখ্যা বাড়ছে। হোটেলগুলোতে পদ্মার ইলিশের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে ঘুরতে আসা লোকজন এখানে বসে ইলিশ ভাজা খেতে পছন্দ করে।’

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন,‘পদ্মাসেতুকে ঘিরে এই চরাঞ্চলে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। এখানে বিনোদনকেন্দ্র হতে পারে চরাঞ্চল, নদী কেন্দ্রিক আবার সৌন্দর্যমন্ডিত মহাসড়ক কেন্দ্রিক। পদ্মাসেতু হয়ে গেলে যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। এই অঞ্চলে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নও ঘটবে বলে আশা করছি।'