• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে জাকাত আদায়ের বিধান

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২১  

জাকাত ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। এ বিধান পালনে প্রয়োজন সঠিক পথ ও পন্থা। বণ্টন সঠিকভাবে না করলে জাকাত আদায় হবে না। জাকাত শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে ৩২ বার, নামাজের সঙ্গে কোরআন মজিদে আছে ২৬ বার; স্বতন্ত্রভাবে কোরআনে আছে চারবার; পবিত্রতা অর্থে দু’বার।

মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে বলেন, জাকাত কেবল ফকির মিসকিন ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা উদ্দেশ্য তাদের জন্য, দাস মুক্তির জন্য, ঋণে জর্জরিত ব্যক্তিদের জন্য, আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী এবং মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর নির্ধারিত বিধান এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। (তওবা-৬০)

তবে অনেকেই নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে জাকাত আদায়ের বিধান সম্পর্কে জানেন না। চলুন এই ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসে কী বলা আছে তা আজ জেনে নেয়া যাক- 

বর্তমানে মহামারির কারণে মানুষের মাঝে হাহাকার চলছে। সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু সাধারণ অনুদানের সুযোগ এখন নেই। তাই অগ্রিম জাকাত দিলে কি আদায় হবে? অর্থাৎ কারো ওপর জাকাত ফরজ হয়েছে। তবে রমজানে দিতে পারছে না। তাহলে তা  আরো দুই মাস পর দেয়া যাবে কি না?

এর উত্তরে ইসলামিক স্কলাসরা বলেন, যদি কারো কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ও ঋণ থেকে মুক্ত জাকাতযোগ্য নেসাব পরিমান সম্পদ থাকে এবং এ সম্পদের ওপর পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হয় তাহলে ওই সম্পদ থেকে শতকরা আড়াই ভাগ জাকাত দেয়া ফরজ। অর্থাৎ জাকাত ফরজ হয়, নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হওয়ার দ্বারা। বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে কারো ওপর জাকাত আদায় করা ফরজ হয় না। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২২১, মাকতাবাতুল আযহার)।

অগ্রিম জাকাত দেয়ার বিধান
তবে কোনো ব্যক্তি, তার সম্পদের ওপর এক বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই জাকাত আদায় করতে চাইলে সুযোগ আছে। তবে কোনো কারণে বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই জাকাতের মাল নষ্ট হয়ে গেলে পূর্বে আদায়কৃত মাল জাকাত হিসেবে ধর্তব্য হবে না। বরং নফল দান হিসেবে গণ্য হবে। (দরসে তিরমিজি, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৫০৮, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৯৪, কিফায়াতুল মুফতি, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৯৮, কিতাবুন নাওয়াজেল, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৫৯৮)।

নির্ধারিত সময়ে জাকাত আদায় না করার বিধান
নেসাব পরিমান সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও জাকাত আদায় করতে বিলম্ব করলে সম্পদের মালিক গুনাহগার হবে। তবে কোনো ওজরের কারণে যদি বিলম্ব হয় তাহলে সমস্যা নেই। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২২৮, কিতাবুন নাওয়াজেল, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৫৪৬, ফতোয়ায়ে হক্কানিয়াহ, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৪৮৫)।

বিগত বছরগুলোর জাকাত আদায়ের বিধান
কারো ওপর বিগত বছরগুলোর জাকাত বাকি থাকলে সেগুলোর জাকাতও আদায় করতে হবে। তাওবা ও ইস্তিগফারের দ্বারা জাকাত মাফ হয়ে যায় না। তাই হিসাব করে পূর্বের বছরগুলোর জাকাতও আদায় করতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া, খণ্ড-১৪, পৃষ্ঠা-১৫২, আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৬৪, আপকে মাসায়েল, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১২৯)।