• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

নামাজে পঠিতব্য তাসবিহ ও দোয়া

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

প্রতিদিনের নামাজে পবিত্র কোরআন ছাড়াও একাধিক তাসবিহ ও দোয়া পাঠ করা হয়। যার কোনো কোনোটি আবশ্যক আর কোনো কোনোটি নফল হিসেবে প্রমাণিত। কোনোটি মহানবী (সা.) নিয়মিত পাঠ করতেন আবার কোনোটি কখনো কখনো পাঠ করতেন এবং শুধু নফল নামাজে পড়তেন।

যদিও এসব তাসবিহ ও দোয়ার অর্থ জেনে পাঠ করার বাধ্যবাধকতা নেই, তবু অভিজ্ঞ আলেমদের মত হলো, নামাজের তিলাওয়াত, তাসবিহ ও দোয়া অর্থ বুঝে পাঠ করা উত্তম এবং তা মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক। নামাজে পঠিত তাসবিহ-দোয়া, তার অর্থ ও সূত্র তুলে ধরেছেন মো. আবদুল মজিদ মোল্লা

 

নামাজের শুরুতে পড়ার দোয়া

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাসিরান তৈয়্যিবান মুবারাকান ফিহি

অর্থ : সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, তাঁর জন্য অগণিত প্রশংসা, পবিত্রতা তাঁরই জন্য। পরম বরকতময় তিনি।

সূত্র : আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে এই দোয়া পড়লে নামাজান্তে মহানবী (সা.) তার প্রশংসা করে বলেন, ‘বারোজন ফেরেশতা এই বাক্যগুলো আল্লাহর কাছে নিয়ে যেতে হাজির হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১২৪৭)

 

তাকবিরে তাহরিমা

উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার

অর্থ : আল্লাহ সবচেয়ে বড় ও মহান।

সূত্র : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়িয়ে তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলতেন। অতঃপর ...। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৭৭৫)

 

তাকবিরে তাহরিমার পর যে দোয়া পড়তে হয়

১. উচ্চারণ : সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তাআলা যাদ্দুকা ওয়ালা ইলাহা গাইরুকা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি মহাপবিত্র, আপনার জন্যই প্রশংসা, আপনার নাম বরকতপূর্ণ, আপনার মর্যাদা সর্বোচ্চ এবং আপনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নাই।

সূত্র : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজ শুরু করার সময় এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৪২)

 

২. উচ্চারণ : ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস্ সামাওয়াতি ওয়াল-আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, লা শারিকা লাহু ওয়া-বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা আনতাল মালিকু লা ইলাহা ইল্লা আনতা, আনতা রাব্বি ওয়া আনা আবদুকা, জলামতু নাফসি ওয়া-তারাফতু  বিজামবি, ফাগফিরলি জুনুবি জামিয়া; ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা, ওয়াহদিনি লি-আহসানিল আখলাকি লা ইয়াহদি লি-আহসানিহা ইল্লা আনতা, ওয়াসরিফ আননি সাইয়িয়াহা লা ইয়াসরিফু আননি  সাইয়িয়াহা ইল্লা আনতা, লাব্বাইকা ওয়া সাদাইকা ওয়াল খাইরু কুল্লুহু ফি ইয়াদাইকা, ওয়াশ শাররু লাইসা ইলাইকা, আনা বিকা ওয়া ইলাইকা, তাবারাকতা ওয়া তালাইতা, আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা।

অর্থ : আমি একনিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর অভিমুখী হলাম—যিনি আসমান ও জমিনগুলো সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। আমার সালাত, কুরবানি, জীবন ও মৃত্যু বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহর জন্য, যার কোনো শরিক নেই। আর আমি এ বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি মুসলমানদের একজন। হে আল্লাহ! আপনিই বাদশাহ, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনি আমার প্রতিপালক এবং আমি আপনার বান্দা। আমি নিজের ওপর অবিচার করেছি এবং আমি আমার অপরাধ স্বীকার করছি। অতএব আমার গুনাহ মাফ করে দেন। আপনি ছাড়া কেউই গুনাহ ক্ষমাকারী নেই। আমাকে উত্তম চরিত্রের দিকে পরিচালিত করেন। আপনি ছাড়া কেউ উত্তম চরিত্রের দিশা দিতে পারে না। আমার থেকে চরিত্রের মন্দ দিকগুলো দূরে রাখুন। আপনি ছাড়া কেউ আমার থেকে চরিত্রের মন্দ দিকগুলো দূরে রাখতে পারে না। আমি আপনার কাছে হাজির। আনুগত্য আপনারই জন্য নিবেদিত। সব কল্যাণ আপনার হাতে, অকল্যাণ আপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আমি আপনার সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত আছি এবং তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। আপনি মঙ্গলময়, আপনি সুমহান। আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি এবং আপনার কাছে তওবা করছি।

সূত্র : আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়িয়ে তাকবির বলার পর এই দোয়া পাঠ করতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯০০)

উল্লেখ্য, দোয়াটি জায়নামাজের দোয়া হিসেবে পরিচিত থাকলে হাদিসে দোয়াটি সানার পরিবর্তে পড়ার কথা পাওয়া যায়।

 

তাকবির ও কিরাতের মধ্যে যে দোয়া পড়েছিলেন মহানবী (সা.)

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা! বা-ইদ বাইনি ওয়া বাইনা খতাইয়া কামা বাআদতা বাইনাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিবি। আল্লাহুম্মা! নাককিনি মিন খতায়া কামা ইউনাককিউস সাওবুল অবইয়াদু মিনাদ-দানাসি, আল্লাহুম্মাগসিলনি মিন খতাইয়া বিস-সালজি ওয়াল মায়ি ওয়াল বারিদি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমার ও আমার পাপগুলোর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন যেমন দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ! আমাকে গুনাহ এমনভাবে পরিষ্কার করে দেন যেমন সাদা কাপড় ধুলে পরিষ্কার হয়। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আমার পাপগুলো থেকে ধুয়ে দিন (পবিত্র করুন) করুন বরফ, পানি ও শিশির দ্বারা।

সূত্র : আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকবির ও কিরাতের মধ্যে চুপ করে ছিলেন। তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি এই পাঠ করার কথা জানান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৪)

 

তাহাজ্জুদের নামাজে পড়ার দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকাল-হামদু আনতা নুরুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া লাকাল হামদু আনতা কাইয়ুমুস সামাওয়াতি আরদি ওয়া লাকাল হামদু আনতা রাব্বুস সামাওয়াতি আরদি, ফিহিন্না আনতাল হাককুন, ওয়া ওয়াদুকাল হাককুন, ওয়া কাওলুকাল হাককুন, ওয়া লিকাউকাল হাককুন, ওয়াল জান্নাতু হাককুন, ওয়াননারু হাককুন, ওয়াস সায়াতু হাককুন, আল্লাহুম্মা লাকা আসলামতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া আলাইকা তাওয়াককালতু ওয়া ইলাইকা আনাবতু, ওয়া বিকা খাসামতু ওয়া ইলাইকা হাকামতু, ফাগফিরলি মা কাদদামতু, ওয়া আখ্খারতু, ওয়া আসরারতু, ওয়া আলানতু, আনতা ইলাহি লা ইলাহা ইল্লা আনতা।

অর্থ : হে আল্লাহ! সব প্রশংসা আপনার। আপনি আসমান ও জমিনের সব কিছুর নূর (জ্যোতি)। সব প্রশংসা আপনার, আপনি আসমান ও জমিনের সব কিছুর অধিকর্তা, সব প্রশংসা আপনার আপনি আসমান ও জমিনের সব কিছুর প্রতিপালক, আসমান ও জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে তার মধ্যে আপনিই চূড়ান্ত সত্য, আপনার অঙ্গীকার সত্য, আপনার কথা সত্য, আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎকাতের বিষয়টি সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, কিয়ামত সত্য। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম, আপনার ওপর ঈমান আনলাম, আপনার ওপর ভরসা করলাম, আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করলাম, আপনার সাহায্যের প্রত্যাশায় শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাম আর আপনাকেই বিচারক মানলাম। আপনি আমার পূর্বাপর, গোপনীয় ও প্রকাশ্য সব পাপ ক্ষমা করে দেন। আপনি আমার প্রভু, আপনি ছাড়া কোনো প্রভু নেই।

সূত্র : আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাহাজ্জুদের নামাজে দাঁড়িয়ে এই দোয়া পড়তেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৬৯)

    

রুকুর তাসবিহ

উচ্চারণ : সুবহানা রব্বিয়াল আজিম।

অর্থ : আমি আমার মহিমান্বিত প্রভুর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।

সূত্র : হুজায়ফা (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকুতে এই তাসবিহ পাঠ করেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৬২)

 

রুকু ও সিজদায় পড়ার দোয়া

১. উচ্চারণ : সুবহানাকাল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগফির লি।

অর্থ : হে আল্লাহ! হে আমাদের প্রভু! আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ! আমাদের ক্ষমা করে দিন।

সূত্র : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকু ও সিজদায় এই দোয়া পাঠ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪২৯৩)

 

২. উচ্চারণ : সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রুহ।

অর্থ : ফেরেশতাদের ও জিবরাঈলের প্রতিপালক আল্লাহ পূত ও পবিত্র।

সূত্র : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকু ও সিজদায় এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৮৭২)

 

৩. উচ্চারণ : সুবহানা জিল জাবারুতি ওয়াল মালাকুতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল আজামাতি।

অর্থ : পবিত্রতা ঘোষণা করছি সেই সত্তার, যিনি সব ক্ষমতা ও রাজ্যের মালিক এবং সব গর্ব ও সম্মানের অধিকারী।

সূত্র : আউফ বিন মালিক আশজায়ি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকু ও সিজদায় এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৮৭৩)

 

রুকু থেকে ওঠার সময় যে তাসবিহ পড়তে হয়

১. উচ্চারণ : সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ।

অর্থ : আল্লাহ সে ব্যক্তির কথা শোনেন যে তাঁর প্রশংসা করে।

সূত্র : আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকু থেকে মাথা ওঠানোর সময় এই তাসবিহ পাঠ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৩৬)

 

২. উচ্চারণ : সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ।

অর্থ : আল্লাহ প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিপালক! সব প্রশংসা আপনার জন্য।

সূত্র : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইমাম ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বললে মুসল্লিদের এই তাসবিহ পাঠ করতে বলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৩৪)

 

রুকু থেকে ওঠার পর পড়ার দোয়া

১. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদু, মিলউল সামাওয়াতি ওয়া মিলউল আরদি ওয়া মা বায়নাহুমা ওয়া মিলউ মা শিতা মিন শাইয়িম বা’দু। আহলাস সানায়ি ওয়াল মাজদি। লা মানিয়া লিমা আ’তায়তা ওয়ালা মু’তিয়া লিমা মানা’তা ওয়ালা ইয়াংফাউ জাল জাদ্দি মিনকা জিদ্দা।

অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক মহান আল্লাহ! আপনার জন্য ওই পরিমাণ প্রশংসা, যা আসমান, জমিন ও উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তা পূর্ণ করে দেয়। এ ছাড়া আপনি যা কিছু চান তা পূর্ণ করে দেয়। হে প্রশংসা ও সম্মানের অধিকারী! আপনি যা দান করেন তার কোনো বাধাদানকারী নেই, আপনি যা দেন না তার কোনো দাতা নেই, আপনার ক্রোধ ও শাস্তি থেকে কোনো ক্ষমতাধরের ক্ষমতা উপকারে আসে না।

সূত্র : আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকু থেকে মাথা ওঠানোর পর এই দোয়া পড়তেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৭৮)

 

২. উচ্চারণ : সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ। মিলউল সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া মা বায়নাহুমা ওয়া মিলউ মা শিতা মিন শাইয়িম বাদু।

অর্থ : আল্লাহ প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার জন্য সব প্রশংসা। আপনার জন্য ওই পরিমাণ প্রশংসা, যা আসমান, জমিন ও উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তা পূর্ণ করে দেয়। এ ছাড়া আপনি যা কিছু চান তা পূর্ণ করে দেয়।

সূত্র : আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকু থেকে মাথা ওঠানোর সময় এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৬৬)

 

সিজদার তাসবিহ

১. উচ্চারণ : সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা।

অর্থ : আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।

সূত্র : হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদায় এই তাসবিহ পাঠ করতেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৮৭১)

 

২. উচ্চারণ : সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা ওয়া বিহামদিহি।

অর্থ : আমি আমার মহান প্রভুর সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করছি।

সূত্র : উকবা বিন আমের (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদায় এই তাসবিহ তিনবার পাঠ করতেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৮৭০)

 

সিজদায় পড়ার দোয়া

১. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া লাকা আসলামতু; সাজাদা ওয়াজহি লিল্লাজি খালাকাহু ওয়া সাওয়ারাহু ওয়া শাককা সামআহু ওয়া বাসারাহু ওয়া তাবারাকাল্লাহু আহসানুল খালিকিন।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার জন্য সিজদা করেছি। আপনার প্রতি ঈমান এনেছি। আপনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছি। আমার চেহারা (মাথা) অবনত হয়েছে সেই সত্তার সামনে, যিনি তা সৃষ্টি করেছেন ও অবয়ব দিয়েছেন, তাতে শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন। বরকতময় আল্লাহ কতই উত্তম স্রষ্টা।

সূত্র : আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদায় এই দোয়া পড়তেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৪২১)

 

২. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফির লি জাম্বি কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আউওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু ওয়া আলানিয়াতাহু ওয়া সিররাহু।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমার সব পাপ ক্ষমা করে দিন; ছোট পাপ ও বড় পাপ, আগের পাপ ও পরের পাপ, প্রকাশ্য পাপ ও গোপন পাপ।

সূত্র : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদায় এই দোয়া পাঠ করতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৮৩)

 

তাহাজ্জুদের নামাজের সিজদায় পড়ার দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আউজু বিরিদাকা মিন সাখাতিকা ওয়া বিমুআফাতিকা মিন উকুবাতিকা ওয়া আউজু বিকা মিনকা লা উহসি সানাআন আলাইকা আনতা কামা আগনাইতা আলা নাফসিকা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার সন্তুষ্টির বিনিময়ে আপনার ক্রোধ থেকে আশ্রয় কামনা করছি, আপনার ক্ষমার বিনিময়ে আপনার শাস্তি থেকে আশ্রয় চাচ্ছি, আপনার পবিত্র সত্তার মাধ্যমে আপনার কাছে আশ্রয় কামনা করছি। আপনার প্রশংসার পরিসীমা করা যায় না; আপনি সে রূপ প্রশংসার যোগ্য, যে রূপ প্রশংসা আপনি নিজের করেছেন।

সূত্র : আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে তাহাজ্জুদের নামাজের সিজদায় এই দোয়া পাঠ করতে শোনেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৮৬)

 

তিলাওয়াতের সিজদায় পাঠ করার দোয়া

১. উচ্চারণ :  সাজাদা ওয়াজহি লিল্লাজি খালাকাহু ওয়া শাককা সামআহু ওয়া বাসারাহু বিহাওলিহি ওয়া কুওয়াতিহি।

অর্থ : আমার মুখমণ্ডল সিজদা করেছে সেই সত্তার জন্য, যিনি আপন শক্তি ও সামর্থ্য দ্বারা তা সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন।

সূত্র : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তিলাওয়াতের সিজদায় এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৫৮০)

 

২. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাকতুব লি বিহা ইনদাকা আজরাও ওয়াজা’ আন্নি বিহা উজরাও ওয়াজআলহা লি ইনদাকা জুখরাও ওয়া তাকাব্বালহা মিন্নি কামা তাকাব্বালহা মিন আবদিকা দাউদা।

অর্থ : হে আল্লাহ! এই সিজদার বিনিময়ে তোমার কাছে আমার জন্য সওয়াব নির্ধারণ করে রেখো, এর বিনিময়ে আমার একটি গুনাহ দূর করো, এটাকে তোমার কাছে আমার জন্য সঞ্চয় হিসেবে জমা রাখো এবং এটা আমার কাছ থেকে গ্রহণ করে নাও, যেভাবে তুমি তোমার বান্দা দাউদ (আ.)-এর কাছ থেকে গ্রহণ করেছিলে।

সূত্র : আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তিলাওয়াতের সিজদায় এই দোয়া করতেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস :  ৫৭৯)

 

দুই সিজদার মধ্যে পড়ার দোয়া

উচ্চারণ : রাব্বিগ-ফিরলি ওয়ারহামনি ওয়াজবুরনি ওয়ারফা’নি ওয়ারজুকনি ওয়াহদিনি।

অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার ওপর দয়া করুন, আমার ক্ষতি পুষিয়ে দিন, আমার মর্যাদা বাড়িয়ে দিন, আমাকে (প্রশস্ত) জীবিকা দান করুন, আমাকে সঠিক পথের দিশা দিন।

সূত্র : আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদায় এই দোয়া পাঠ করতেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৮৪)

 

তাশাহহুদ

উচ্চারণ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত-তাইবাতু। আসসালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থ : মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক যাবতীয় ইবাদত মহান আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের ওপর এবং আল্লাহর সব নেক বান্দার ওপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

সূত্র : আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে এই ‘তাশাহহুদ’ শিক্ষা দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৬৫)

 

নামাজে যে দরুদ পড়তে হয়

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদিও-ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লায়তা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহিম, ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি শান্তি বর্ষণ করুন এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবারের প্রতিও শান্তি বর্ষণ করুন; যেমন আপনি রহমত বর্ষণ করেছিলেন ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি বরকত নাজিল করুন এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবারের প্রতি; যেমন আপনি বরকত দান করেছিলেন ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।

সূত্র : আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে এই দরুদ পড়তে শেখান। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৯০৬)

 

সালাম ফিরানোর আগে পড়ার দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি জলামতু নাফসি জুলমান কাসিরাও ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম-মিন ইনদিকা ওয়ারহামনি ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম।

অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আমার আত্মার ওপর বড়ই অবিচার করেছি। আপনি ছাড়া আমার পাপ মার্জনা করার আর কেউ নেই। আপনি নিজ অনুগ্রহে আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার ওপর দয়া করুন। নিশ্চয়ই আপনি অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাকারী।

সূত্র : আবুবকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে নামাজে এই দোয়া পাঠ করতে শেখান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৩৪)

 

দোয়া কুনুত

১. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা ওয়া-নাসতাগফিরুকা ওয়া-নুমিনুবিকা ওয়া-নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া-নুসনি আলাইকাল-খাইর, ওয়া-নাশকুরুকা ওলা-নাকফুরুকা ওয়া-নাখলায়ু ওয়া-নাতরুকু মাইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া-লাকা নুসল্লি ওয়া-নাসজুদু ওয়া-ইলাইকা নাসআ ওয়া-নাহফিদু ওয়া-নারজু রাহমাতাকা ওয়া-নাখশা আজাবাকা ইন্না আজাবাকা বিল কুফফারি মুলহিক।

অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমরা আপনার সাহায্য চাই, আপনার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করি, আপনার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করি, আপনার ওপর ভরসা করি, উত্তমরূপে আপনার প্রশংসা করি এবং আপনারই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আমরা আপনার নাফরমানি করি না, যারা আপনাকে অমান্য করে তাদের আমরা পরিত্যাগ করি এবং দূর করে দিই। আমরা আপনারই ইবাদত করি, আপনার জন্যই নামাজ পড়ি, আপনাকে সিজদা করি, আপনার দিকেই ধাবিত হই, আপনার সম্মুখে হাজির হই, আপনার রহমতের আশা করি এবং আপনার শাস্তিকে ভয় করি। নিশ্চয়ই আপনার শাস্তি কাফিরদের জন্য প্রযোজ্য।

সূত্র : ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত কুনুতের এই দোয়া বর্ণিত। (শরহে বেকায়া : ২/৩৮১, সুনানে বায়হাকি ও মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)

২. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাহদিনি ফিমান হাদাইতা ওয়া আফিনি ফিমান আফাইতা ওয়া তাওয়াল্লানি ফিমান তাওয়াল্লাইতা ওয়া বারিক লি ফিমা আ’তাইতা ওয়াকিনি শাররা মা কাদাইতা ফাইন্নাকা তাকদি ওয়ালা ইউকদা আলাইকা, ইন্নাহু লা ইয়াজিল্লু ওয়ালাইতা তাবারাকতা রব্বানা ওয়া তায়ালাইতা

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি যাদের হিদায়েত করেছেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন, আপনি যাদের নিরাপত্তা দান করেছেন আমাকে তাদের মতো নিরাপত্তা দান করুন, আপনি যাদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাদের মতো আমার দায়িত্ব গ্রহণ করুন, আমাকে যা দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন, আমাকে সেসব অকল্যাণ থেকে বাঁচিয়ে রাখুন যা আপনি নির্দিষ্ট করেছেন, নিশ্চয়ই আপনি নির্ধারণকারী, আপনার ওপর কেউ সিদ্ধান্তদাতা নেই। নিশ্চয়ই সে অপমানিত হবে না যার দায়িত্ব আপনি গ্রহণ করেছেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি দয়াশীল ও উচ্চ মর্যদাসম্পন্ন।

সূত্র : হাসান ইবনে আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে কিছু দোয়া শিখিয়েছেন, যা আমি কুনুতে পাঠ করি। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৪২৫)

 

সালাতুল হাজতের দোয়া

উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিমি আল-হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিনা আসয়ালুকা মুজিবাতি রাহমাতিকা। ওয়া আজায়িমা মাগফিরাতিকা ওয়াল-গানিমাতা মিন কুল্লি বিররিউ-ওয়াস-সালামাতা মিন কুল্লি ইসমি লা-তাদা’লি জামবান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মা ইল্লা ফারাজতাহু ওয়া লা হাজাতা হিয়া লাকা রিদা ইল্লা কাদাইতাহা ইয়া আরহামার রাহিমিন।  

অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই—তিনি অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও দয়ালু। সব পবিত্রতা আরশে আজিমের মালিক মহান আল্লাহর জন্য এবং সব প্রশংসা জগত্গুলোর প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আমি আপনার কাছে অনুগ্রহ লাভের উপায়গুলো, ক্ষমা লাভের দৃঢ় অঙ্গীকার, প্রত্যেক ভালো কাজের ঐশ্বর্য এবং মন্দ কাজ থেকে আশ্রয় কামনা করছি। আপনি আমার সব পাপ ক্ষমা করুন, সব দুশ্চিন্তা দূর করে দিন, যে প্রয়োজন ও চাহিদা আপনার সন্তুষ্টি লাভের কারণ হয় তা পূরণ করে দিন—হে পরম দয়ালু মহান আল্লাহ!

সূত্র : আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যদি কারো কোনো কিছুর প্রয়োজন হয়, তবে সে যেন ভালোমতো ওজু করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে। অতঃপর আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর রাসুলের প্রতি দরুদ পাঠ করে এই দোয়া পড়ে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪৭৯)

 

নামাজের পাঠ করার কয়েকটি দোয়া

১. উচ্চারণ : আম্মাহুম্মাগফিরলি মা কাদ্দামতু ওয়া মা আখখারতু ওয়া মা আরসারতু ওয়া মা আলানতু, আনতা ইলাহি লা ইলাহ ইল্লা আনতা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি ক্ষমা চাই, যে পাপ আমি আগে করেছি, যা আমি পরে করব, যা আমি গোপনে করেছি, যা আমি প্রকাশ্যে করেছি। আপনি আমার উপাস্য, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই।

সূত্র : আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সালাম ফেরানোর পর এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৫০৯)

 

২. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন আজাবিল-কাবরি ওয়া মিন আজাবিন্নারি ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল-মামাতি ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় কামনা করছি, কবরের শাস্তি থেকে, জাহান্নামের শাস্তি থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং দাজ্জালের ফেতনা থেকে।

সূত্র : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পাঠ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩৭৭)

 

৩. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আইন্নি আলা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিক।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আপনার স্মরণ, আপনার কৃতজ্ঞতা আদায় ও আপনার ইবাদত যথাযথভাবে আদায় করতে আমাকে সাহায্য করুন।

সূত্র : মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে প্রত্যেক নামাজের পর দোয়াটি পড়ার অসিয়ত করেছেন এবং বলেছেন যেন আমি তা ভুলে না যাই। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৫২২)

 

৪. উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আনতাস-সালাম ওয়া মিনকাস-সালাম তাবারাকতা জাল জালালি ওয়াল ইকরাম।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি শান্তিময়, আপনার পক্ষ থেকেই শান্তি ও নিরাপত্তা, আপনার বরকতময় সত্তা পরাক্রমশালী ও সম্মানিত।

সূত্র : সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের পর তিনবার আসতাগফিরুল্লাহ পড়ে এই দোয়া পড়তে বলেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৯১)