• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

দোয়া চেয়েছেন সুমন

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছেন আজ অনেক বছর ধরেই। বলছি বাংলাদেশের জনপ্রিয় রক ব্যান্ড ‘অর্থহীন’ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং দলনেতা সাইদুস সালেহীন খালেদ সুমন ওরফে বেজবাবা সুমনের কথা। রোগকে তুচ্ছ করে বারবার গিটার ধরেছেন তিনি । শরীরে প্রায় ১ ডজন স্ক্রু নিয়ে স্টেজ মাতিয়ে গেছেন। আজ আবারও অসুস্থ তিনি। সে কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের জানিয়েছেন বেজবাবা।

নিজের ফেসবুকে তিনি জানিয়েছেন, আমার শরীর ভালো না। আমি সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকি। আমার স্পাইনের অবস্থা খুব খারাপ। ১৯ তারিখে (১৯ মার্চ) জার্মানি যাচ্ছি সার্জারির জন্য, যদিও ডাক্তাররা খুব একটা আশাবাদী নয়। সার্জারি আন্সাক্সেলফুল হলে আমার সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। দেখা যাক কি হয়। Happiness is a choice and life is beautiful. সবাই দোয়া করবেন।

১৯৮৬ সালে সুমন তার রক সংগীতের জীবন শুরু করেন। এই বছরই সুমন 'ফ্রিকোয়েন্সি' নামের একটি ব্যান্ড গঠন করেন।
১৯৯০ সালে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডে সুমন বেস গীটার বাজাতেন। এ বছর সুমনের তার ব্যান্ডের নাম বদলে 'রক ফ্যান্টম' রাখেন। 'সাইল্যান্স' ব্যান্ডে সুমন লীড গিটারিস্ট হিসেবে যোগ দেন। এর কয়েকদিন পর তিনি 'ফিলিংস'-এ বেস গিটার বাদক হিসেব বাজানো শুরু করেন। এলাকার স্টুডিওতে বেস গিটার বাদক হিসেবে বাজানো শুরু করেন।

১৯৯২ সালে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ওয়ারফেইজ, ইন ঢাকা, সুইট ভেনম, রক ব্রিগেডে বেস গিটার বাদক হিসেবে বাজান। এই বছরই তার প্রথম অ্যালবাম 'সুমন অর্থহীন'-এর কাজ শুরু করেন। ১৯৯৩ সালে এবছর সুমন বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড ফিলিংস ত্যাগ করেন। তিনি একক অ্যালবাম করার পরিকল্পনা করেন। তার ইচ্ছা ছিল ভিন্ন ধারার গান করার। তিনি এমনভাবে একক গান করা শুরু করেন যাতে ব্যান্ডের পরিবেশটা একক গানেও বজায় থাকে। তিনি ফায়সাল এবং রাসেলের সাথে তার প্রথম গান করেন। তার গানে ড্রাম বাজিয়েছিল রুমি।

১৯৯৪ সালে 'জলি রজার' ত্যাগ করেন। ১৯৯৫ সালে 'শব্দ' নামে একটি ব্যান্ড গঠন করেন এবং এই ব্যান্ড থেকে কিছু গান রেকর্ডিং-এর কাজ শুরু করেন।

১৯৯৬ সালে 'শব্দ' ভেঙে যায়। 'ওয়ারফেইজে' যোগদান করেন। ১৯৯৭ সালে ওয়ারফেইজের চতুর্থ অ্যালবাম 'অসামাজিক'-এর কাজ শুরু হয়। জি-সিরিজ থেকে সুমনের প্রথম একক অ্যালবাম 'সুমন ও অর্থহীন' প্রকাশিত হয়। অ্যালবামটি ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। সমালোচকরাও নতুন ধারার এই গানটির প্রশংসা করেন।


১৯৯৮ সালে 'সুমন নতুন একটি দল গঠন করার পরিকল্পনা করেন। 'ফেইথ' ব্যান্ডের টিটি ও সেন্টু তার পরিকল্পনায় সহায়তা করে। আরো কয়েকজন সংগীতশিল্পীকে নিয়ে সুমন 'সুমন ও অর্থহীন' নাম দিয়ে ব্যান্ডের কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৯৯ সালে ওয়ারফেইজ ত্যাগ করেন। এই বছরই ব্যান্ডের নাম ঠিক হয় 'অর্থহীন'।

২০০০ সালে অর্থহীনের প্রথম অ্যালবাম 'ত্রিমাত্রিক' প্রকাশিত হয়। এই অ্যালবামটির জনপ্রিয়তা ছিল ব্যাপক। সুমনের নাম ওয়ারউইকের 'ফেমাস ইউসার লিস্ট'-এ লিপিবদ্ধ হয়। তিনি প্রথম এশিয়ান সংগীতশিল্পী হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন।

২০০১ সালে অর্থহীনের দ্বিতীয় অ্যালবাম 'বিবর্তন' প্রকাশিত হয়। করেন। উল্লেখ্য যে, বিবর্তন বাংলাদেশের ব্যান্ডসঙ্গীতের ইতিহাসে অন্যতম ব্যবসা সফল অ্যালবাম।
২০০২ সালে অর্থহীনের তৃতীয় অ্যালবাম 'নতুন দিনের মিছিলে' প্রকাশিত হয়। এই অ্যালবামে রয়েছে 'সাতদিন' নামের ২৮ মিনিট ৩২ সেকেন্ড এর একটি গান। এটি বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের ইতিহাসে দীর্ঘতম গান। সুমনের দ্বিতীয় একক অ্যালবাম 'স্বপ্নগুলো তোমার মত' প্রকাশিত হয়।

২০০৩ সালে অর্থহীনের চতুর্থ অ্যালবাম 'ধ্রুবক' প্রকাশিত হয়। সুমন অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুমন আগের মত আর গান করতে পারবেন না বলেও শঙ্কা দেখা দেয়। সুমন মেটাল সঙ্গীত গাওয়া কমিয়ে দেন।

২০০৪ সালে সুমনের অসুস্থতার কারণে ব্যান্ডের প্রায় সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এই বছরই সুমন এম.টি.ডির (মাইকেল টবিয়াস ডিজাইন) অধিভুক্ত হন। ২০০৫ সালে সুমনের চোয়ালের হাড়ে মারাত্মক সমস্যা দেয়। চিকিৎসক বলেন যে, সুমনের আগের মত গান করতে পারার সম্ভাবনা খুবই কম। অর্থহীনের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সুমন এবং বাকী সদস্যরা অর্থহীন ভেঙ্গে দেয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সুমন সুস্থ হয়ে উঠতে থাকেন। সুমন আবার গান গাওয়া শুরু করেন। এ বছর সুমন জন ডেনভারের গানের অনুবাদ করে 'মেঘের দেশে' নামের একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ২০০৭ সাথে সুমনের তৃতীয় একক এলবাম 'বোকা মানুষটা' প্রকাশিত হয়।