• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

দেশে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মজুত নিয়ে সতর্ক বার্তা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২০  

বৈরুত ট্র্যাজেডির পর দেশের কোথাও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মজুত রয়েছে কিনা তা জানতে বন্দর, বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে বিস্ফোরক পরিদফতর। চিঠিতে সতর্কতা হিসেবে লাইসেন্স করা গুদামের বাইরে কোনও বিস্ফোরক পদার্থ না রাখতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিস্ফোরক পরিদফতর সূত্র জানায়, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো অন্য যেকোনও ধরনের বিস্ফোরক পদার্থ আমদানি হলে তা অতিদ্রুত বন্দর এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিস্ফোরক পরিদফতরের প্রধান পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, বাংলাদেশে যেসব বিস্ফোরক পদার্থ আমদানি করা হয় তার বেশিরভাগই ব্যবহার করা হয় সরকারি কাজে। সাধারণত গ্যাসক্ষেত্রে, কয়লা খনিতে অথবা পাথর খনিতে। তারা বিস্ফোরক পদার্থগুলো আমদানি করে নিজেদের গোডাউনে নিয়ে যায়। বন্দরে রাখা হয় না। আর আমদানি করার অনুমতি আছে মাত্র তিনটি বেসরকারি কোম্পানির। তারা কী পরিমাণ আমদানি করেছে এবং কতটুকু ব্যবহার হয়েছে, কতটুকু গোডাউনে আছে তার নিয়মিত মনিটরিং করা হয়। কোম্পানিগুলো নিয়মিত প্রতিবেদন দেয় পরিদফতরের কাছে। ফলে এসবের বাইরে আর কোথাও থেকে বাড়তি বিস্ফোরক আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। তারপরও সতর্কতা হিসেবে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বিস্ফোরক পরিদফতরের চট্টগ্রাম, খুলনাসহ অন্য আঞ্চলিক কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা প্রতি বছর একবার করে সরকারি কোম্পানিগুলোর গোডাউন পরিদর্শন করেন। এ সময় অব্যবহৃত কোনও বিস্ফোরক থাকলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ধ্বংস করে ফেলা হয়। তবে দেশের কোথাও বড় রকমের অব্যবহৃত কোনও বিস্ফোরকের মজুত নেই বলে জানিয়েছে বিস্ফোরক পরিদফতর। তাহলে কেন এই চিঠি, জানতে চাইলে একজন কর্মকর্তা বলেন, বৈরুতের এই ঘটনা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। ফলে আমরা একটু আগাম সতর্কতা অবলম্বন করেছি।

বিস্ফোরক পরিদফতরের চট্টগ্রামের একজন কর্মকর্তা জানান, চিঠি এখনও আমাদের হাতে আসেনি। এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, দেশে খুব বেশি পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ আমদানি করা হয় না। তবে কি পরিমাণ আনা হয় তা এখনই বলা সম্ভব নয় বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, যেসব বিস্ফোরক আনা হয় তার বেশিরভাগই ব্যবহার করে বাপেক্স, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি, মধ্যপাড়া পাথর খনি আর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে। আলাদা করে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আনা হয় কিনা তাও বিস্তারিত কেউ জানে না।

এদিকে লেবাননের ঘটনা থেকে জানা যায়, সেখানে জাহাজে করে অবৈধভাবে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আনা হয়েছিল। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষ সেটি জব্দ করে বন্দরের গোডাউনে ফেলে রাখে।

জানা যায়, বাংলাদেশে আমদানি করা বিস্ফোরক পদার্থগুলো সাধারণত বন্দরের নিরাপত্তা প্রহরীদের পাহারায় থাকে এবং পরে বন্দর থেকে বের করে পুলিশের পাহারায় এগুলো গুদামে তোলা হয়। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানির ক্ষেত্রে আলাদা বিধিমালাও আছে বিস্ফোরক পরিদফতরের।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, অ্যামোনিয়া নাইট্রেট বিস্ফোরক তৈরির উপাদান। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সার হিসেবে, খনিতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ফুয়েল (এএনএফ) বিস্ফোরক তৈরিতে এবং মেডিক্যাল নাইট্রাস অক্সাইড তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়।

পরিদফতরের আওতায় কেমিক্যাল যেমন আমদানি হয় তেমনি আমদানি হয় বিস্ফোরক পদার্থ। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলোর মধ্যে ক্যালসিয়াম কার্বাইড, পটাসিয়াম ক্লোরেট, রেড ফসফরাস, সালফার, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, পটাসিয়াম নাইট্রেট, সোডিয়াম নাইট্রেট, নাইট্রো সেলুলোজ আমদানির অনুমতি রয়েছে।