• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

দাদ বা রিং ওয়ার্ম চিকিৎসা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯  

বর্ষাকাল বা শীতকাল আসলেই নানা ধরনের চর্ম রোগের প্রকোপ দেখা যায়। আমাদের অনেকেই নানা রকমের চর্মরোগে আক্রান্ত হই। তবে এসব চর্ম রোগের  মধ্যে রিং ওয়ার্ম বা দাদ অন্যতম। দাদ এক প্রকার সংক্রামক চর্মরোগ। চিকিৎসা পরিভাষায় একে 'ডার্মাটোফাইটোসিস' বলা হয়। তবে এটি "Ringworm" ও "Tinea" নামেও পরিচিত। তবে এর কারণ কোন "worm" বা ক্রিমি নয়। এর কারণ ত্বকের উপরের দিকে  ছত্রাক সংক্রমণ।  দাদ বা রিং ওয়ার্ম সাধারণত শরীরের যেকোনো অংশেই হতে পারে। এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। তাই বাড়ির কারো হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। না হলেই বিপদ!

♦ সংক্রমিত অঙ্গ:

দাদ শরীরের যেকোন অঙ্গের চামড়ায় হতে পারে। সংক্রামনের এক এক জায়গা অনুসারে দাদের আলাদা আলাদা নাম আছে।
যেমন-

* টিনিয়া ক্রুরিস =কুঁচকির (groin) দাদ
* টিনিয়া ক্যাপাইটিস=মাথার দাদ
* টিনিয়া কর্পোরিস= শরীরে(trunk) বা হাত পায়ে দাদ
* টিনিয়া পেডিস (অ্যাথলেট'স ফুট)= পায়ের পাতায় দাদ
* টিনিয়া আঙ্গুয়াম= নখে দাদ

♦ দাদ বা রিং ওয়ার্মের লক্ষণ:

* প্রথমে আক্রান্ত স্থানে ছোট লাল গোটা হয় এবং সামান্য চুলকায়।

* পরে আক্রান্ত স্থানে বাদামী বর্ণের আইশ হয় এবং স্থানটি বৃত্তাকারে বড় হতে থাকে।

* ক্রমে সুনির্দিষ্ট কিনারা সহ বৃত্তের আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং মাঝখানে ত্বক স্বাভাবিক হয়ে আসে।

* চুলকানি বৃদ্ধি পায়।

* চুলকানোর পর আক্রান্ত স্থানে জবালা হয় এবং আঠালো রস বের হয়।

* ক্ষত স্থান থেকে কখনো কখনো শুকনো চামড়া ওঠে, কখনো বা পানি ভরা ফুসকুড়ি বের হয়।

* মাথায় হলে স্থানে স্থানে চুল উঠে যায়, নখে হলে দ্রুত নখের রঙ বদলায় এবং শুকিয়ে খণ্ড খণ্ড ভেঙ্গে যেতে পারে

♦ সংক্রমণ ও বিস্তার:

সাধারণত ঘামে ভেজা শরীর, অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন শরীর, দীর্ঘ সময় ভেজা থাকে এমন শরীর, ত্বকে ক্ষত আছে এমন শরীর এই ছত্রাকগুলোর স্পোর (বা, হাইফা) দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই ছত্রাকগুলোর সুপ্তিকায়াল ৩ থেকে ৫ দিন।
আগেই বলা হয়েছে এটি একটি সংক্রামক রোগ। অতিসহজেই এটি রোগী থেকে সুস্থ দেহে বিস্তার লাভ করতে পারে। রোগীর চিরুনি, তোয়ালে, বিছানা ইত্যাদি ব্যবহার করলে বা আক্রান্ত রোগির জামাকাপড় পরিধান করলে এ রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকে। তবে রোগাক্রান্ত পোষা বিড়ালের মাধ্যমে এটি বেশী ছড়ায়।

♦ দাদ বা রিং ওয়ার্ম প্রতিরোধের উপায়:

. আক্রান্ত স্থানটি যতটা সম্ভব খোলা রাখুন।

. জামা-কাপড় নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।

. ধোয়া, পরিষ্কার জামা-কাপড় পরুন।

.  ক্ষতস্থান শুকনো রাখার চেষ্টা করা করুন।

. আক্রান্ত স্থানে যতটা সম্ভব সাবান বা তেল না লাগানোই ভালো।

.  আক্রান্ত স্থান উষ্ণ পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।

. প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, ওষুধ বা এন্টিফাঙ্গাল  মলম ব্যবহার করুন।