• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

তিন কুল : প্রত্যেক বস্তুর বিপদাপদের মোকাবিলায় যথেষ্ট (পর্ব-১)

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২০  


মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা! আমাদের সবাইকে তিন কুল তথা ‘সূরা ইখলাস, ফালাক্ব এবং নাস’ এই ৩টি সূরার ওপর বেশি বেশি আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আসুন প্রথমেই আমরা ফজিলতপূর্ণ উক্ত সূরাগুলো সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস থেকে জেনে নিই- 

> হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে যুহফা ও আবওয়ার মধ্যবর্তী এলাকায় চলছিলাম। এমন সময় আমাদেরকে প্রবল ঝড় ও ঘোর অন্ধকারে ঢেকে ফেলে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) সূরা কুল-আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব ও সূরা কুল-আউযু বিরাব্বিন্নাস দ্বারা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন। আর বললেন, হে উকবা! এগুলো দ্বারা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর। কেননা, এগুলোর ন্যায় কোনো সূরা দ্বারা, কোনো প্রার্থনাকারী আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারে না। অর্থাৎ এই দুই সূরা আশ্রয় প্রার্থনা করার জন্য সব থেকে উত্তম সূরা। (আবু দাউদ)।


সূরা ইখলাস, ফালাক্ব এবং নাস

> হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে খুবাইব (রা.) বলেন, একবার আমরা ঝড় বৃষ্টি ও ঘোর অন্ধকারময় এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর তালাশে বাহির হলাম এবং তাকে পেলাম। তখন তিনি বললেন, পড়। আমি বললাম, কী পড়বো?  তিনি বললেন, তিনবার পড়- ‘কুল-হুয়াল্লাহু আহাদ, কুল-আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব ও কুল- আউযু বিরাব্বিন্নাস’ এটা প্রত্যেক বস্তুর (বিপদাপদের) মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট হবে। (তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসাঈ)।

> হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, একবার আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! (বিপদ হতে রক্ষার ব্যাপারে) আমি কি সূরা হুদ পড়ব? না সূরা ইউসুফ? তিনি বললেন, এ ব্যাপারে সূরা ‘কুল-আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব’ অপেক্ষা আল্লাহর নিকট উত্তম কোনো সূরা, তুমি কখনো পড়তে পারবে না। (আহমদ, নাসাঈ ও দারেমী)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক রাতে প্রথমে নিজের শরীর ফু দিতেন অতঃপর সূরা এখলাস, সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস পাঠ করতেন।

হজরত আয়শা (রা.) হতে বর্ণিত আছে নবী করিমম (সা.) যখন প্রত্যেক রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন, দুই হাতের তালু একত্র করে ফুঁ দিতেন। অতঃপর তাতে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস পড়তেন। তৎপর দুই হাতের তালু দ্বারা আপন শরীরে যা সম্ভবপর হত মুছে ফেলতেন।

আরম্ভ করতেন মাথা ও চেহারা এবং শরীরে সম্মুখভাগ থেকে। এইরূপ তিনি তিনবার করতেন। (মোত্তা:)।

ব্যাখ্যা:

এই হাদিস থেকে বুঝা গেল যে, রাসূল (সা.) প্রথমে দুই হাতের তালু একত্র করে ফুঁ দিতেন, অতঃপর তাতে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস পাঠ করতেন।

সূরা নাস ও ফালাক্বের আরো কিছু ফজিলত :

হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আশ্চর্য! আজ রাতে এমন কতক আয়াত নাজিল হয়েছে, যা পূর্বে এর অনুরূপ কোনো আয়াত দেখা যায়নি। ‘কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব’ ও ‘কুল আউযু বিরাব্বিন নাস।’ (মুসলিম)।

বিপদআপদ হতে আল্লাহর স্মরণ হওয়ার পক্ষে এই সূরাগুলোর অপেক্ষা উত্তম সূরা আর নেই।

চলবে...