• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিবচরের পদ্মানদীতে চালু হচ্ছে ভ্রমনতরী

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারি ২০২১  

শিবচর প্রতিনিধিঃ স্বপ্নের পদ্মসেতুর কর্মযজ্ঞ শুরু হবার সময় থেকেই  দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে পদ্মাসেতু দেখতে আসে ভ্রমন প্রেমীরা। স্প্যান উঠানোর পর থেকে দর্শনার্থীদের আগমন বেড়েই চলছে। সর্বশেষ স্প্যান উঠানোর মধ্য দিয়ে পদ্মাসেতু যখন পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো, তখন সাধারণ মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা যেন বেড়ে গেছে বহুগুণ। প্রতিদিনই দিনের বিভিন্ন সময়ে পদ্মাসেতু সংলগ্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের ভীড় বেড়েছে। ট্রলার ভাড়া করে নদীতে ঘুরে বেড়ায় ঘুরতে আসা লোকজন। দূর থেকে পদ্মাসেতু অবলকন করেন।

দর্শনার্থীদের ভ্রমনকে আরামদায়ক করতে এবং পদ্মানদী ও চরাঞ্চলকে পর্যটন এলাকা গড়তে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। একই সাথে পর্যটন কেন্দ্রের মাধ্যমে শিবচরের চরাঞ্চলের জেলেদের জীবনমান উন্নয়নের এক সমন্বয় উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। সোমবার(৪ জানুয়ারী) সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কাঁঠালবাড়ী ঘাট সংলগ্ন পদ্মানদীতে নামানো হচ্ছে চারটি দৃষ্টিনন্দন নৌকা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাসেতু সংলগ্ন শিবচরের কাঁঠালবাড়ী পদ্মা নদীতে ভ্রমনপ্রেমীদের জন্য নৌকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে চারটি নৌকা নামানো হবে। পর্যায়ক্রমে শিগগিরি নদীতে কমপক্ষে ২০ টি নৌকা থাকবে। এসকল নৌকার মালিক স্থানীয় জেলেরা। যারা মাছ ধরার পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য পদ্মানদীর সৌন্দর্য দেখানোর 'সেবা'য় আগ্রহী তারা ১০/১৫ জন যাত্রীর ধারনাক্ষমতা অনুযায়ী একেকটি নৌকা তৈরি করে নদীতে নামাবে। নৌকাগুলো দেখতে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন করা হবে। যাত্রীরা নৌকা ভ্রমনে যাতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন, তেমন উপযোগী করে নৌকা তৈরি করা হচ্ছে। এবং পর্যটকদের সুবিধবার জন্য জেলা প্রশাসন নৌকার ভাড়া নির্ধারণ করে দেবেন।
নৌকাগুলোতে লাইফ জ্যাকেটসহ ভ্রমন এলাকাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র জানান। এছাড়া আগামীতে পর্যটকদের সুবিধা ও নিরাপত্তা জোরদার নিশ্চিত এক ধরনের অ্যাপস্ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানা গেছে। পদ্মাসেতু সংলগ্ন নদীকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের অগ্রসরে নৌকার ট্রাকিং এর জন্য অ্যাপস্ থাকবে। পর্যটকদের নিয়ে নৌকায় নদীর কোথায় যাচ্ছে তা জানা যাবে। এবং অ্যাপসের মাধ্যমে পর্যটকগণ নৌকার খোঁজ খবর রাখতে পারবেন।
এদিকে মাছ ধরার পাশাপাশি জেলেরা পর্যটকদের সেবা দেবার মাধ্যমে বাড়তি উপার্জন করতে পারবে। এতে করে তাদের জীবনমান উন্নত হবে বলে আশাবাদী জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে শিবচরের পদ্মানদী সংলগ্ন কাওড়াকান্দি, কাঁঠালবাড়ী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ করে বিকেলে আশেপাশের এলাকা থেকে অনেকেই পদ্মাসেতু দেখতে এ এলাকায় আসেন। তারা পদ্মানদীর নদীশাসন বাঁধ, চরাঞ্চল ও নদীতে ট্রলার ভাড়া করে ঘুরে বেড়ান। দূর থেকে পদ্মাসেতু দেখেন। তবে ভ্রমন উপযোগী তেমন কোন ব্যবস্থা না থাকায় মাঝে মধ্যে বিপাকে পরতে হয় ভ্রমনপ্রেমীদের।
ঘুরতে আসা একাধিক ব্যক্তি জানান,'পদ্মার এই চরাঞ্চলে পরিকল্পিত ভাবে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুললে ভ্রমনপ্রেমীদের জন্য জায়গাটি অত্যান্ত মুগ্ধকর হবে। পদ্মায় সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের মনোরম দৃশ্যও দেখা যাবে। জেলেদের ইলিশ শিকারের দৃশ্যসহ পদ্মার মধ্যে জেগে উঠা চরে ঘুরে বেড়ানোর মধ্যে সমুদ্র দর্শনের অনুভূতি পাওয়া যায়।'

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন জানান,'শিবচরের চরাঞ্চলের জেলেদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও পর্যটনের বিকাশ সাধনে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে করে জেলেদের বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া পদ্মানদী ও এর চরাঞ্চলের সৌন্দর্য সহজেই উপভোগ করতে পারবে ভ্রমনপ্রেমীরা। নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে পদ্মাসেতু দেখতে পাবে তারা। এতে করে পদ্মার সৌন্দর্যের পাশাপাশি পদ্মাসেতুও  দেখার সুযোগ পাবে।'

জেলা প্রশাসক আরো জানান,'ইলিশ নিষিদ্ধের মৌসুমে জেলেরা তাদের জীবিকা উপার্জনের পথ ঠিক রাখতে পারবে। তাদের জীবনযাত্রায় ব্যঘাত ঘটবে না। এই নৌকাগুলো মূলত জেলেরাই চালাবে। যা আয় হয় সব জেলেদের। তবে দেখভালের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। এর মধ্য দিয়ে পদ্মাসেতুকে ঘিরে এ এলাকায় পর্যটনের বিকাশ ঘটবে বলে আশা রাখি।'