• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

জনপ্রিয়তার শীর্ষে উন্নয়নবান্ধব নেতা লিটন চৌধুরী

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

শিবচর প্রতিনিধিঃ

পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ বেষ্টিত ১৯ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত শিবচর উপজেলা। এই উপজেলাটি মাদারীপুর ১ আসনের অন্তর্গত। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তথ্য অনুযায়ী এই উপজেলার বর্তমান ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৩১ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১লাখ ১৭ হাজার ৪৬৪ জন।
১৯৯১ সালে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই)। তার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে জয়লাভ করেন তারই জ্যেষ্ঠ পুত্র নূর ই আলম চৌধুরী লিটন। এর পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত টানা ষষ্ঠবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকার গঠনের পর নূর ই আলম চৌধুরীকে মহান জাতীয় সংসদের হুইপ করা হয়েছিল। আর একাদশ জাতীয় সংসদের তিনি চিফ হুইপের দায়িত্ব পেয়েছেন।
শিবচরের সর্বস্তরের মানুষের কাছে লিটন চৌধুরীর ইমেজ খুবই স্বচ্ছ। একজন উন্নয়ন বান্ধব নেতা হিসেবে তিনি দলমতের উর্ধ্বে অবস্থান করছেন বর্তমানে। এই জনপ্রিয়তার পেছনে শিবচরের উন্নয়ন, দলকে সঠিক পন্থায় পরিচালনা, সকলকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন এবং প্রতিহিংসার পরিবর্তে স্বচ্ছ রাজনীতিক অন্যতম বলে সাধারণ মানুষের সাথে আলাপ করলে জানা যায়।
লিটন চৌধুরীর জনপ্রিয়তার রহস্য জানতে সাধারণ মানুষের সাথে আলাপ করলে তারা জানান,‘লিটন চৌধুরীকে জানতে হলে শিবচরে আসতে হবে। শিবচর ঘুরে দেখতে হবে।  যেতে হবে শিবচরের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও। থাকতে হবে শিবচরে কিছু দিন। তার পর শিবচরের সাথে দেশের অন্যান্য উপজেলার তুলনা করতে হবে। তাহলেই বোঝা যাবে একটি উপজেলা হিসেবে শিবচরের উন্নয়ন কতটুকু হয়েছে? আর এ উন্নয়নের পেছনে কার অবদান রয়েছে?
নূর ই আলম চৌধুরী লিটন শিবচরের সংসদ সদস্যই না। তিনি শিবচরের প্রাণ পুরুষ। শিবচরকে আধুনিক শিবচরে রূপ দেবার জনক তিনি। দিন যাচ্ছে আর শিবচরের উন্নয়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তারা জানান,‘বিএনপি সরকারের সময়ও লিটন চৌধুরীই শিবচরের এমপি ছিলেন। তখন তিনি কাজ করতে পারেন নি। তাকে কাজ দেয়া হয় নি। শিবচর ছিল একটা ভঙ্গুর এলাকা। সড়ক যোগাযোগ ছিল না বললেই চলে। শিবচর-পাঁচ্চর সড়কের পুরো পথই ছিল চলাচলের অনুপযোগী। এছাড়া সড়ক, ব্রীজ-কালভার্ট ছিল শুধুই স্বপ্ন! 
আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর লিটন চৌধুরী শুধু শিবচরের মানুষের কথাই ভেবে গেছেন। সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করতে তিনি উন্নয়নের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহন করেছন বলে মন্তব্য শিবচরের সাধারণ মানুষের।

পদ্মা আড়িয়াল খার মতো নদ নদী ছাড়াও অসংখ্য নদী খাল বিলে ঘেরা উপজেলাটিতে নির্মান করেছেন ২ শতাধিক ব্রীজ কালভার্ট, হাজার কিলোমিটার অভ্যন্তরীন সড়ক, ২শতাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ভবন, দেশের প্রথম হাউজিং প্রকল্প , ৪টি কলেজকে অনার্স ও ১টি কলেজে মাস্টার্সে উন্নতিকরন, ৪টি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক ৩টি অডিটোরিয়াম,মুক্তমঞ্চ,শিল্পকলা একাডেমি, সুপার মার্কেট, বাস স্ট্যান্ড, শিশু পার্ক নির্মান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আধুনিকায়ন। ১১টি ভাস্কর্য মুর‌্যাল নির্মানসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষনে নানান উদ্যোগ উপজেলাটি সারাদেশের নেতৃবৃন্দর নজর কেড়েছে। 

বিশেষ করে পদ্মা সেতুকে ঘিরে ঢাকার নিকটবর্ত্তী এ উপজেলায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে কয়েকটি মেগা প্রকল্প এ এলাকায় স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আগামী প্রজন্মের উজ্জ্বল এক ভবিষ্যতের। এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের আইসিটি ইনষ্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হয়েছে দত্তপড়ায় ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজে।

প্রধানমন্ত্রী ১০৮ একর জায়গায় ১৯ শ কোটি টাকা ব্যয়ে তাঁত পল্লী ও ১৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রকল্পর ভিত্তিপ্রস্তর করেছেন এখানে। হাতে নেয়া হয়েছে ভারতের আইআইটির আদলে আইসিটি ইনষ্টিটিউট ও হাইটেক পার্ক প্রকল্প, কারিগরি ইনষ্টিটিউট। স্বাস্থ্য খাতে ইনষ্টিটিউট অব হেলথ এন্ড টেকনোলজি, নার্সিং ইনষ্টিটিউট, ৩টি মা ও শিশু কেন্দ্রসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১শ শয্যায় উন্নিতকরনসহ নানান প্রকল্প ।


জানা যায়, নবনিযুক্ত চীফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরীর পিতা মরহুম ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী(দাদাভাই) ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। দাদাভাই ১৯৭০ সালের সাধারন নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন অন্যতম সংগঠক ও মুজিব বাহিনীর কোষাধ্যক্ষ। ১৯৭৩ সালে তিনি আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা। ঢাকা-মাওয়া-শিবচর-খুলনা মহাসড়কটিও ছিল সংসদে তার প্রস্তাবিত। নারী শিক্ষার উন্নয়নে তার ভূমিকা আজো সমাদৃত। এরপর ১৯৯১ সালে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার মৃত্যুতে বিএনপি সরকারের আমলে উপ নির্বাচনে তার বড় ছেলে নূর-ই-আলম চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

দলীয় নেতা কর্মী ও এলাকার মানুষের সাথে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। যার প্রভাব দেখা যায় প্রতিটি নির্বাচনী ফলাফলেই। ষষ্ঠবারের মতো একক প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেন উপজেলা আওয়ামীলীগ, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠন। ১৯৯১ সালের প্রথম উপ-নির্বাচনের পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি। 

২০০১ সালের নির্বাচনে এই ব্যবধান আরো বেড়ে ভোটের ব্যবধান দাঁড়ায় অর্ধ লাখেরও বেশি। বিরোধী দলে থেকেও তার কর্মতৎপরতা বিশেষ করে দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি বিশেষ টানের কারনে তিনি হয়ে উঠেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি জয়ী হন লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে। আর ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে ভোটের ব্যবধান দাঁড়ায় ২ লক্ষাধিক।
তরুণ বয়সে জীবনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর থেকেই তিনি ছিলেন উন্নয়নবান্ধব। নিজের আসন যেন উন্নয়নের দিক দিয়ে পিছিয়ে না থাকে  সেই লক্ষ্যে তিনি আজোও কাজ করে যাচ্ছেন। উদার মনের অধিকারী তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে জনপ্রিয় একজন নেতা হিসেবে সমাদৃত হয়ে উঠছেন দিন দিন।