• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

জননেতা জহুর আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২০  

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম শ্রম, সমাজকল্যাণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, বীর চট্টলার সুর্য সন্তান বর্ষীয়ান জননেতা জহুর আহম্মদ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

জহুর আহমদ চৌধুরী ১৯১৬ সালে চট্টগ্রামের উত্তর কাট্টলী গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম আবদুল আজিজ চৌধুরী ও মাতার নাম জরিনা বেগম। তিনি তিনবার বিয়ে করেন ও বিশ সন্তানের জনক ছিলেন। তার তৃতীয় পত্নী ডা. নুরুন নাহার জহুর একাধারে, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক ও নারী নেত্রী ছিলেন। তার প্রথম পুত্র সাইফুদ্দিন খালেদ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন এবং তার দ্বিতীয় পুত্র মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন।

জহুর আহমদ চৌধুরী কাট্টলী নূরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় ও পাহাড়তলী রেলওয়ে হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন।

মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও জহুর আহমেদ চৌধুরী পারিবারিক দুরবস্থার জন্য পড়াশুনা করতে পারেননি। রাজনীতির প্রতি আগ্রহ থেকে তিনি শৈশবকাল থেকেই মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি কলকাতায় গমন করেন ও মওলানা ইসলামবাদীর সান্নিধ্যে আসেন। কংগ্রেসপন্থী হবার কারণে তিনি ইসলামবাদীর সঙ্গে বেশিদিন থাকেননি। কলকাতা অবস্থানকালে তার সঙ্গে ফজলুল কাদের চৌধুরী ও আবুল খায়ের সিদ্দিকীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়।

১৯৩৭ সালে জহুর আহমদ চৌধুরী কলকাতার খিজিরপুরে ডক শ্রমিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৪০ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ১৯৪৩ সালে চট্টগ্রাম ডক শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন। এ বছর সর্বপ্রথম শেখ মুজিবর রহমানের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং শেরে-এ-বাংলা ও সোহরাওয়ার্দির কাছাকাছি চলে আসেন। ১৯৪৫ সালে শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেন। ১৯৪৭ সালে সিলেট গণভোটে অংশ নেন। ১৯৪৯ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন। ৫২'র ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন ও জয়লাভ করেন।

১৯৫৪ সালে তিনি যুক্তফ্রন্টের হয়ে, শের-এ-বাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানি এবং হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে, নির্বাচনে দাড়ান এবং মুসলিম লীগের প্রখ্যাত নেতা রফিউদ্দিন সিদ্দিকীকে পরাজিত করেন।

তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ লিবার্রেল ফোর্সের চেয়ারম্যান ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসাবে তার অবদান অতুলনীয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে বীর চট্টলায় তার নেতৃত্বে লড়াই সংগ্রাম করে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে চট্রগ্রাম জয় করেন। বঙ্গবন্ধু আদর করে তাকে বীর চট্টলার জহুর ভাই বলতেন। তিনি প্রথম মন্ত্রী সভায় প্রায় ৪টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

আজ চট্রগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ তার স্মরনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্মৃতি সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।