• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

গৃহহীনদের স্বপ্নের ঠিকানা বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্প

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

প্রথমে দেখে মনে হতে পারে ঢাকার অভিজাত কোনো এলাকা। ছিমছাম গোছানো ঘরের সারি। অনেকটা জিরো আকৃতিতে নির্মাণ করা হয়েছে ৩৪টি পাকা ঘর। প্রত্যেকটি ঘরের সামনে রয়েছে বারান্দা, ছোট বাগান, হাঁটার জায়গা। আর ঠিক মাঝখানে বিশাল জায়গাজুড়ে রয়েছে ফুল বাগান এবং ওয়াটার রিজার্ভার বা পানি সংরক্ষণের স্থান। শুধু তাই নয়, সেখানে রাখা হয়েছে কমিউনিটি স্পেস।

বলছিলাম বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্পের কথা। খাগড়াছড়ি জেলা শহরের কুমিল্লাটিলা এলাকায় প্রায় দুই একর জায়গার উপর নির্মাণ করা হয়েছে এই আবাসন প্রকল্প। যার সুবিধাভোগ করবেন ভূমিহীন, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধি ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।

ইতোমধ্যে ঘর নির্মাণের সব প্রক্রিয়া শেষে যাচাই বাছাই করে ৩৩টি পরিবার নির্বাচন করেছে খাগড়াছড়ি পৌরসভা। আগামীকাল ৬ ফেব্রুয়ারি পরিবারগুলোর হাতে হস্তান্তর করা হবে ঘরের চাবি।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি পৌর শহরের কুমিল্লাটিলা এলাকায় দুই একর জায়গার উপর নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্প। প্রায় ৫০১ বর্গফুটের প্রত্যেকটি পাকা ঘরে রয়েছে দুটি শোবার ঘর, একটি রান্না ঘর, একটি শৌচালয় , একটি ডাইনিং এবং একটি ব্যালকনি। রয়েছে আলাদা পানির ব্যবস্থা। প্রত্যেকটি ঘর নির্মাণে খরচ হয়েছে ১১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। মাঝখানে বিশাল জায়গাজুড়ে রয়েছে বাগান এবং ওয়াটার রিজার্ভার। আর প্রবেশ মুখে বানানো হয়েছে কমিউনিটি স্পেস। এই প্রকল্পে মোট খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সরকার এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপম্যান্ট’র অর্থায়নে তৃতীয় নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টর) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে খাগড়াছড়ি পৌরসভা। ২০১৭ সালের শেষের দিকে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী দীলিপ কুমার বিশ্বাস জানান, চারপাশে খোলামেলা জায়গা রেখে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ঘরের জন্য আলাদা পানির ব্যবস্থা, ঘরের চারপাশে যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এছাড়াও অগ্নি-নিরাপত্তা ও ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে প্রকল্পের মাঝখানে ওয়াটার রিজার্ভার রাখা হয়েছে।

এদিকে প্রকল্পে ঘর বরাদ্ধের জন্য আবেদন আহ্বান করা হলে ৮টি ক্যাটাগরিতে ২২১টি আবেদন জমা পড়ে। ক্যাটাগরিগুলো হলো প্রতিবন্ধি, গৃহহীন, ভূমিহীন, হতদরিদ্র, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, অসহায় ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা এবং পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার।

পরবর্তীতে পৌর আবাসন প্রকল্পের সুবিধাভোগী যাচাই বাছাই ও পরিচালনা কমিটি জমা পড়া আবেদন থেকে যাচাই বাছাই শেষে ৩৩টি পরিবার নির্বাচন করে। অপর একটি ঘর অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে।

খাগড়াছড়ি পৌরসভা সচিব ও যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব পারভিন আক্তার বলেন, আমরা কমিটির মাধ্যমে আবেদনগুলো যাচাই বাছাই করে ৩৩টি আবেদন নির্বাচন করি। আমরা শতভাগ চেষ্টা করেছি আবেদন থেকে যাদের জন্য এই ঘর প্রযোজ্য তারা যেন পায়।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ জাফর আহম্মেদ বলেন, সরকার গৃহহীনদের যে ঘর দেয়ার কথা বলেছেন এটি তারই একটি অংশ। এই প্রকল্পে আমরা ৩৩টি পরিবারকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ঘর দিয়েছি। সামনে শহরের শালবন এলাকায় আরো একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি, সেখানে আরো বেশি সংখ্যক পরিবারকে ঘর দেয়া সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগীতা প্রয়োজন।