• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছে ৯২২ হতদরিদ্র পরিবার

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২১  

খুলনার নয়টি উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন ৯২২টি পরিবার মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে নান্দনিক ঘর পাচ্ছে। যাদের জমি ও বাড়ি কোনো কিছুই নেই তাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুই শতাংশ খাস জমির বন্দোবস্তসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপকারভোগী পরিবারের কাছে ভূমি ও গৃহ হস্তান্তর করবেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইটের মাধ্যমে ডুমুরিয়া উপজেলাকে সংযুক্ত করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন তার কার্যালয়ে এক মতবিনিময় ও প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান।

এ সময় তিনি জানান, মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে সরকার ‘ক’ ক্যাটাগরিতে যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন তাদের এবং ‘খ’ ক্যাটাগরিতে যাদের ভূমি আছে কিন্তু গৃহ নেই তাদের নতুন ঘর তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে।

খুলনার নয়টি উপজেলা থেকে ‘ক’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত ভূমিহীন এবং গৃহহীন পাঁচ হাজার ৮৮টি পরিবারের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে ৯২২টি পরিবারকে জমি ও ঘর নির্মাণ করে দিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রূপসা উপজেলায় ৭২টি, তেরখাদায় ৪০টি, দিঘলিয়ায় ৭০টি, ফুলতলায় ৪০টি, ডুমুরিয়ায় ১৪০টি, বটিয়াঘাটায় ১৫০টি, দাকোপে ১৪০টি, পাইকগাছায় ২২০টি ও কয়রায় ৫০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প আশ্রয়ণ-২ এর আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে কমপে দুই শতক খাস জমির বন্দোবস্তসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা গৃহ নির্মাণ করে দেওয়ার এসব কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। বর্তমানে চলছে রংয়ের কাজ।

সরকারের মহতী এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে স্ব স্ব উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় সরকারি ভূমি উদ্ধার ও ঘরের স্থান নির্ধারণসহ এসব ঘর নির্মাণে তদারকির জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন উপজেলাগুলোর ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি), প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমিসহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জিয়াউর রহমান, স্থানীয় সরকার দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ইকবল হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা ঘর তৈরির কার্যক্রম ও অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন এবং সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এরইমধ্যে রূপসা উপজেলায় নির্মাণাধীন ঘর সরেজমিন পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-১৩ (পরিবহন) মেজর মো. ফরিদুল ইসলাম। স্থানীয় প্রশাসনের নিবিড় তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠছে আশ্রয়হীন মানুষের এসব স্বপ্নের ঠিকানা। গৃহহীনরা তাদের স্বপ্নের পূর্ণতা পাওয়ার প্রহর গুনছে।

প্রতিটি গৃহ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। সে হিসেবে ঘর নির্মাণে মোট ব্যয় হচ্ছে ১৫ কোটি ৭৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা। প্রতিটি গৃহে ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি দু’টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা থাকবে।  
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ছিন্নমূল ও ভূমিহীন পরিবারের তথ্য স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার পরেই সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ‘ক’ শ্রেণির পাঁচ হাজার ৮৮টি পরিবারের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৯২২টি পরিবারের জন্য তৈরিকৃত ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জিয়াউর রহমান।

তিনি জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন রয়েছে তাদের ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। খুলনা জেলায় ৯২২টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গুণগতমান যথাযথ বজায় রেখে দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ঘরগুলোর নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একইসঙ্গে যারা উপকারভোগী আছে তাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গৃহহীনদের একটা মানসম্মত ও টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য আমরা তদারকি করেছি।

রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন আক্তার জানান, কাজের গুণগতমান শত ভাগ বজায় রেখে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সমাজের নিম্ন আয়ের ভূমিহীন পরিবারগুলোর (প্রতিবন্ধী, হরিজন, দলিত, ভ্যানচালক) কাছে যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর এবং তাদের সরকারের মাধ্যমে একটা সেরা উপহার দিতে পারলে আমরা গর্বিত।