• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টা

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২০  

তিন বছরের মধ্যে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলার জন্য সরকার কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ১৯৭২ সালের ৩১ মে বাসসের প্রতিবেদন পরের দিন ১ জুন দৈনিক পূর্বদেশে এই খবর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সব পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে কৃষি বিপ্লব ঘটানো কথা চিন্তা করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অল্প কয়েকদিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবার কথা। তারা দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশেষজ্ঞদের মতে চাষযোগ্য জমিগুলোকে যেখানে সম্ভব দুই ফসলি জমিতে পরিণত করা যেতে পারে। এতে তিন বছরের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব হতে পারে। জানা যায়, সরকার কৃষকদের জন্য অগভীর নলকূপ পাওয়ার পাম্প ও সরবরাহের ওপর বিশেষভাবে জোর দিচ্ছিল।

জানানো হয় কৃষকদের সেচ সুবিধা দিতে কমপক্ষে ১০ হাজার অগভীর নলকূপের প্রয়োজন। অনতিবিলম্বে এই পাওয়ার পাম্পও সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। সরকার দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ব্যাপারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ জন্য সহজ শর্তে ঋণ সরবরাহ করবে। জানা গেছে যে, যদি প্রয়োজন হয় কৃষকদেরকে ধারে অগভীর নলকূপের জল ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। সেই সময়ের নিয়ম অনুযায়ী কৃষকদের অগভীর নলকূপের জল ব্যবহার করতে হলে মোট খরচের অর্ধেক বহন করতে হতো।

কৃষি উন্নয়ন ভবনে বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন দফতরে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পরিদর্শন করে আসছিলেন। ৩১ মে তিনি একটি অফিস ভবন পরিদর্শন করেন। তিনি এই দিন সেক্রেটারিয়েটের কোনও অফিসে যাননি। তিনি অনির্ধারিতভাবে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের অফিস পরিদর্শনে যান। বিকাল চারটায় তিনি কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ভবনে যান এবং বিভিন্ন দফতর ঘুরে ঘুরে দেখেন। বঙ্গবন্ধু সেখানে ৪৫ মিনিট অবস্থান করেন।

 দ্রব্যমূল্যের তথ্য সংগ্রহের জন্য ইমার্জেন্সি অপারেশন কক্ষ

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্নস্থানে খাদ্যশস্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু ও মন্ত্রিসভা কমিটিকে অবহিত করার জন্য একজন সিনিয়র অফিসারের নেতৃত্বে জরুরি কার্যক্রম কক্ষ খোলা হয়। জরুরি কার্যক্রম কক্ষ মজুদ পরিস্থিতি ও চাল, তেল, চিনি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির পরিবহন এবং বন্টন সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে এবং সরাসরিভাবে জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে। 

যেকোনও মূল্যে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার শপথ

৩১ মে সন্ধ্যা ছয়টায় আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরের সকল থানা ও ইউনিয়নের প্রধান উপ-প্রধানদের উপস্থিতিতে এক জরুরি সভা সংগঠনের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান আব্দুর রাজ্জাক। এই সভায় বিশেষ আমন্ত্রণে প্রাক্তন ছাত্রনেতা ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তোফায়েল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

২৩ মে দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত প্রধান খবরআবারও স্ক্রিনিং কমিটি গঠনের কথা বললেন জিল্লুর রহমান

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান কোনও প্রকার প্রতিবন্ধকতা ছাড়া সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো কার্যকরী করার সুবিধার জন্য গণবিরোধী ও দুর্নীতি পরায়ন সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি স্ক্রিনিং কমিটি গঠনের দাবি করেন। এর আগে ২২ মে তিনি এক বিবৃতিতে একই দাবি করেন। কিছু সংখ্যক সরকারি কর্মচারীর তীব্র সমালোচনা করে এক বিবৃতিতে তিনি সরকার ঘোষিত নীতির সঙ্গে চক্রান্তে লিপ্ত কর্মচারীদের অতীত ও বর্তমান তৎপরতা পর্যালোচনার জন্য অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে স্বাধীনতার পরও কিছু সরকারি কর্মচারী তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারেননি। তাদের কার্যকলাপ ও আচরণ বিপ্লবী সরকারের আদর্শ ও নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যারা সরকারি নীতি ও চারটি রাষ্ট্রীয় মন্তব্য বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে তিনি তাদের কঠোর নিন্দা করে তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তদন্তের জন্য স্ক্রিনিং কমিটি করার আহ্বান জানান।