• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

করোনা আক্রান্তদের ফেলে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন না ডাক্তার কনে

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০২০  

 

'বিয়ে অপেক্ষা করতে পারি, কিন্তু আমার রোগীরা যারা আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারণ ভাইরাস শরীরে নিয়ে প্রত্যেক মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের আমি অপেক্ষা করিয়ে রাখতে পারি না!', মন্তব্য তেইশ বছরের এক চিকিৎসকের। বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে ঠিক এই কথাগুলোই গুরুজনদের মুখের ওপর বলেছিলেন ডাক্তার শিফা এফ মুহাম্মদ। কেরালার এক হাসপাতালে প্রতি মুহূর্তে যেভাবে তিনি করোনা আক্রান্তদের সেবা করে চলেছেন, তাতে বারবার বেজে উঠেছে মানবতার জয়গানই। 

 হাসপাতালে মানুষের কষ্টের কথা স্মরণ করেই দুর্দিনে মানুষের সেবা করতে বিয়ে পিছিয়ে দিলেন শিফা। এমন সিদ্ধান্তে হতবাক না হয়ে বরং বুকে টেনে নিয়েছেন বাড়ির গুরুজনেরা তাদের সাহসী মেয়েকে। পাত্রীর সিদ্ধান্তে সমর্থন জানাতে অমত করেননি পাত্রপক্ষেরও কেউই।  

গত ২৯ মার্চ দুবাইয়ে প্রতিষ্ঠিত এক সুপাত্রের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা ছিল। এরইমধ্যে করোনার বিরুদ্ধে শুরু হয়ে গেল যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে কিনা তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন! সেটা কল্পনাও করেত পারেননি বছর তেইশের হাউস সার্জেন শিফা। অতঃপর মা-বাবা, হবু শ্বশুরবাড়িতে নিজের সিদ্ধান্ত জানান। শিফার সিদ্ধান্তের সমর্থনও করেন তারা। ব্যস, তারপর পিছিয়ে দেওয়া হয় বিয়ে!

২৯ মার্চ কনের সাজের বদলে পরে নেন নিজের বর্ম- পার্সোনাল প্রোটেকশন ইক্যুপমেন্ট (পিপিই)। বিয়ের আসরের পরিবর্তে কান্নুরের পারিয়ারাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্তদের শুশ্রূষায় নিজেকে নিয়োজিত করেন শিফা মুহাম্মদ।  

মেয়ের সিদ্ধান্তে গর্বিত বাবাও। বাবা মুক্কাম মুহাম্মদ বলেন, প্রত্যেক মেয়ের জীবনেই বিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষ্ঠান। কিন্তু আমার মেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থের আগে সামাজিক দায়িত্ব ও পেশাদারি দায়বদ্ধতা পালন করেছে। আমি একজন সমাজকর্মী। স্ত্রী শিক্ষক। আমার দুই মেয়ের মধ্যে সেই আদর্শ সঞ্চারিত করেছে আমাদের সামাজিক কাজ। বাবা হিসেবে আমি গর্বিত। 

ডাক্তার শিফা বলেন, আমি তো অসাধারণ কিছু করিনি। আমি শুধু নিজের দায়িত্বটুকু পালন করছি। আমার মতো অনেকেই বিয়ে পিছিয়ে দিয়েছেন।