• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

ওষুধ নয়, ব্যথা নাশক হিসেবে যাদুর মতো কাজ করে বিছুটি পাতা!

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২০  


ভেষজ একটি উদ্ভিদ বিছুটি। অনেকেই হয়তো চিনে থাকবেন এই গাছ। সম্পূর্ণ গাছটির গায়ে অতি ক্ষুদ্র রোমের মত কাঁটা থাকে। যা শরীরের লাগলে ভীষণ চুলকায়। মূলত এজন্যই এর নাম বিছুটি।

তবে গাছটির শিকড়, রাইজোম এবং পাতার রস নানা শারীরিক রোগ সারাতে সক্ষম। গাছটির খোঁজ প্রথমে রাশিয়াতে পাওয়া গেলেও, এখন এটি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফ্রিকা মহাদেশসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশে পাওয়া যায়।

চলুন জেনে নেয়া যাক এতে থাকা রাসায়নিক উপাদান এবং এর ওষুধি গুণাগুণ সম্পর্কে-

রাসায়ানিক উপাদান
বিছুটি গাছের শিকড়, রাইজোম এবং পাতার রস ওষুধি গুণ সম্পূর্ণ। এতে আছে ট্যানিন, ফাইবার, ক্লোরোফিল রাসায়নিক উপাদান। এ ট্যানিন, ফাইবার, ক্লোরোফিল, বেরিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। সেই সঙ্গে লোহা, বোরন, মলিবডিনাম, স্ট্রনটিয়াম, সেলেনিয়াম, তামা, ম্যাঙ্গানিজ, টাইটানিয়াম, নিকেল ও অ্যাসকরবিক বিদ্যমান। এর পাতায় যে পরিমাণ ভিটামিন সি আছে তা ১০ গ্রাম কিশমিশের সমান বা একটি গাজরের অর্ধেক। এই গাছ নানাভাবে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে।

> বিছুটি পাতা ব্যথা নাশক হিসেবে দারুণ কাজ করে। এর এন্টিসেপ্টিক উপাদান শরীরের যে কোনো অংশের ব্যথা কমাতে যাদুর মতো কাজ করে। এক্ষেত্রে এর শুকনা পাতার গুঁড়া অনেক কার্যকরী।

> তাছাড়া এটি রক্তাল্পতা, ফুসফুস এবং অন্ত্রের অভ্যন্তরীণ রক্ত ক্ষরণ কমায়। এই উদ্ভিদের নির্যাস জরায়ুর রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করে এবং স্ত্রীরোগে কাজ করে।


 
> অনবরত হাঁচি দেয়ার সমস্যায় ভুগছেন? ফুটন্ত পানিতে বিছুটি পাতা দিয়ে চা তৈরি করুন এবং দিনে ২ থেকে ৩ বার এই চা পান করুন।

> এতে থাকা অ্যাসট্রিনজেন্ট একজিমা, পোকার কামড়, পক্স কমাতে সাহায্য করে।

> বিভিন্ন চর্মরোগে ওষুধ হিসেবে বিছুটি পাতার তেল বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

> এর শিকড়ের রস মূত্রবর্ধক এবং রক্তপরিষ্কারক।

> চুল পড়া কমাতে এর জুড়ি নেই। সাধারণ তেলের সঙ্গে বিছুটি পাতার তেল মিশিয়ে স্কাল্পে ম্যাসাজ করলে চুল পড়া অনেক কমে যায়। একই সঙ্গে এই পাতার মধ্যে থাকা সিলিকন ও সালফার চুল ঘন করতে সহায়তা করে। তাছাড়া চুলের জেল্লা বাড়াতে চাইলে এক মগ পানিতে এই পাতা ফুটিয়ে নিন। তারপর ছেঁকে, ঠান্ডা করে শ্যাম্পু করার পর মাথায় দিয়ে ধুয়ে নিন।

> বিছুটি পাতার রস কিংবা তেল হালকা কুসুম গরম করে নিন। এবার এটি বাতের ব্যথা এবং হাড়ের জয়েন্টের ব্যথায় মালিশ করলে খুব দ্রুত ফল পাবেন।


 
> এই গাছের শিকড় এবং চিনি একসঙ্গে জ্বাল করে খেলে সর্দি-কাঁশি ভালো হয় এবং ক্রনিক হেপাটাইটিস, গ্যাস্ট্রিক আলসার ভালো হয়। এটি পিত্ত থলি এবং যকৃতের বিভিন্ন রোগ ভালো করে।

> ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর করতে বিছুটি পাতা অনেক কার্যকরী। এজন্য বিছুটি পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর এই পেস্ট হালকা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখুন। খুব তাড়াতাড়ি ব্রণের প্রকোপ কমে আসবে। এছাড়াও অয়েলি ত্বকের জন্য এটি ভীষণ উপকারী।