• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন

একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০২০  

উত্তরের দুই জেলা পাবনা-রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী আন্তনগর পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেনের সেবা ঢালারচর পর্যন্ত বর্ধিত করে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ও ঢাকা-জামালপুর-ঢাকা (ভায়া বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব) রুটে নতুন ট্রেন ‘জামালপুর এক্সপ্রেস, উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক নতুন কোচ দ্বারা প্রতিস্থাপন ও ফরিদপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের সেবা রাজবাড়ী এক্সপ্রেস নামে ভাঙ্গা পর্যন্ত বর্ধিতকরণের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে গণভবনে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব কিছুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।

একইসঙ্গে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য মোবাইল অ্যাপস ভিত্তিক ‘পল্লী লেনদেন’ কার্যক্রম; এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘গুরুত্বপূর্ণ ৯টি ব্রিজ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় ১৫ হাজার মিটার চেইনেজে তিতাস নদীর ওপর ৫৭৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু এবং মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর আরএইচডি রাস্তায় কালিগঙ্গা নদীর ওপর ৪৫৬ মিটার পিসি গার্ডার সেতু উদ্বোধন করেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম ওয়াসার চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) আওতায় নির্মিত ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগার’ এর উদ্বোধন। খুলনা ওয়াসার ‘খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প’ এর আওতায় নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ ও বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ১২ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশের যেসকল স্থানে ট্রেন চলাচলে ঝুকি রয়েছে, লাইন সমস্যা রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ঠিক করতে হবে। লাইন সমস্যার কারণে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

জানা গেছে, ১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে গত বছরের শেষের দিকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার রেলপথের নির্মাণকাজ শেষ হয়। পরে ১৩ নভেম্বর পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল চালু করা হয়। অপেক্ষা ছিল আনুষ্ঠানিকতার।

ট্রেনটি সকাল ৭.২৫ মিনিটে ঢালারচর থেকে ছেড়ে ১১.১০ মিনিটে রাজশাহী পৌঁছাবে। ফিরতি পথে রাজশাহী থেকে বিকেল ৪.২৫ মিনিটে ছেড়ে রাত ৮.১০ মিনিটে ঢালারচর পৌঁছাবে।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পাবনায় রেল লাইন করার সিদ্ধান্ত নেন। পাবনায় রেলপথের জন্য ওই সময় জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন প্রকল্পটিতে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

পরে ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পাবনায় এক জনসভায় এই রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলপথের নকশার পরিবর্তন করে এটি পাবনার ত্রিমোহনী এলাকা ঢালার চর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়।

অপরদিকে, ঢাকা-জামালপুর-ঢাকা (ভায়া বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব) রুটে ‘জামালপুর এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়বে সকাল সাড়ে ১০টায়। জামালপুর পৌঁছাবে বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে এবং জামালপুর ছাড়বে বিকাল পৌনে ছয়টার সময়। ঢাকা পৌঁছাবে রাত সাড়ে ১১টায়। ট্রেনের বিরতি স্টেশনের নামসমূহ: বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, টাঙ্গাইল, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব, ভূঞাপুর, হেমনগর, অ্যাড. মতিউর রহমান, তারাকান্দি, সরিষাবাড়ি।

জামালপুর এক্সপ্রেসে এসি চেয়ার ১১০টি ও শোভন চেয়ার ৫১০টিসহ সর্বমোট ৬২০টি আসনের ব্যবস্থা থাকবে। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হবে রবিবার। ট্রেনটিতে যাত্রী সুবিধা সম্বলিত প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি। প্রতিবন্ধী যাত্রিদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে থাকছে মেইন ও টয়লেটের প্রশস্ত দরজা এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে রয়েছে পরিবেশ বান্ধব বায়ো-টয়লেট এবং আধুনিক ও উন্নত মানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট সম্বলিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।

জামালপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেলপথে “জামালপুর এক্সপ্রেস” ট্রেনটি চালু হলো প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে। তারাকান্দি-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-টাঙ্গাইল হয়ে নতুন রুটে ঢাকা-জামালপুরের মধ্যে আন্তঃনগর এ ট্রেনটি পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

কৃষি ক্ষেত্রেও অভূতপূর্ব উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন এই ট্রেনে ব্যবহৃত মিটারগেজ কোচগুলো এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আর্থায়নে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইন্দোনেশিয়ার পিটি ইনকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।