• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাদারীপুর দর্পন
ব্রেকিং:
নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

এক দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে চার গুণের বেশি

মাদারীপুর দর্পন

প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২০  

আওয়ামী লীগ সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে নেয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। ফলে সারাদেশে শতভাগ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতে বিদ্যুৎ খাতে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। আওয়ামী লীগ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য পূরণের আর বেশি দেরিও নেই।

‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ-ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এ স্লোগানে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) কর্তৃপক্ষ প্রত্যন্ত গ্রামগুলো আলোকিত করার কাজ করে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন আগামী বছরের মধ্যে দেশের শতভাগ বিদ্যুতায়নের বিষয়টি আর স্বপ্ন থাকছে না। এটা শিগগিরই হতে যাচ্ছে বাস্তব। 

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৩ হাজার ৪৩৬ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ)। মানে এক দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে চার গুণের বেশি। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর হার ৯৭ শতাংশ, ২০০৯ সালে এ হার ছিল ৪৭ শতাংশ।  

সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ২০০৯ সালে ছিল ২৭ টি, ২০২০ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১৩৭টি। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩,৪৩৬ মেগাওয়াট, ২০০৯ সালে ছিল ৪৯৪২ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ২০০৯ সালে ছিল এক কোটি ৮ লাখ, বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬৮ লাখ। বর্তমানে বিদ্যুতের গ্রাহক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে উৎপাদন। ফলে বিদ্যুতের লোডশেডিং নেই।

অথচ আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণের আগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১ হাজার ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযোজিত হয়। এমনকি ২০০৯ সালের আগে দেশে উৎপাদিত হতো সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যদিও গ্রীষ্মকালে সে সময় ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। কিন্তু এর বিপরীতে সরবরাহ ছিল মাত্র ৩ হাজার ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে পার্থক্য বেশি হওয়ায় তখন সারাদেশে ব্যাপক পরিমাণে লোডশেডিং হতো। এতে ব্যাহত হতো শিল্প ও কৃষির উৎপাদন।

২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ পরিকল্পনার আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ সুবিধা নিশ্চিত করতে উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড তৈরি করে যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে বিদ্যুৎ খাতেরও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এই সময়ে বিদ্যুতের সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী ও গ্রাহক পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। কমেছে বিদ্যুতের সিস্টেম লসের হার। বৃদ্ধি পেয়েছে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন হার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের যুগোপযোগী বাস্তবসম্মত টেকসই পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণে বিদ্যুৎ খাতে নজিরবিহীন এ উন্নয়ন হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের ফলে গত ১১ বছরে সেচ সংযোগ দেয়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। 

বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত করা হচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা ও সেবার মান। এ ছাড়া বিদ্যুতের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্যও পুনর্বাসন প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে।  সরকারের মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ঠিক করা হয়েছে। 

সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এটি বাস্তবায়নে ৬ হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন ও ১ লাখ কিলোমিটার বিতরণ লাইন এবং প্রয়োজনীয় উপকেন্দ্র নির্মাণ ও এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। এ ছাড়া এই লক্ষ্যে আঞ্চলিক গ্রিডে সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। ৬ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ ও ২ হাজার ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

আর অত্যন্ত দুর্গম, চর ও দ্বীপাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সোলার প্যানেল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রত্যন্ত এলাকায় ৪৫ লাখ মানুষ সৌরবিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে।